q88 রোদন করিতে লাগিলুেন। গৌর হাদিতে হাসিতে কহিলেন “শ্ৰীধর তোমাকে আমি এক বিপুল সাম্রাজ্যের আধিপত্য প্রদান । করিতে চাই ।” শ্ৰীধর কহিলেন “আমি কিছুই চাই না প্রভু, আমি কিছুই চাই না, আমি চাই কেবল তোমার নাম করিতে। তাহারই অধিকার কেবলু তুমি আমাকে দেও।” গেীর কহিলেন "প্রাণাধিক শ্রধর, আমার প্রিয় ভৃত্য শ্ৰীধর, অষ্টসিদ্ধি, বিপুল সাম্রাজ্য, কত কি আমি দিতে চাহিলাম। তুমি কিছুই চাও না, তুমি কেবল চাও আমাকে। নিষ্কাম ভক্ত, আমি আজি তোমাকে বেদ-শাস্ত্রে ভক্তিযোগ প্রদান করিলাম।” কলামূলা বেচা যাহার উপজীবিকা, ধনহীন, বিদ্যালেশহীন সেই শ্ৰীধর যাহা পাইল, কোটশ্বর কোট জন্মেও তাহা প্রাপ্ত হয় না। শ্ৰীধরকে বর দিয়া অদ্বৈতাচাৰ্য্যকে সম্বোধন করতঃ গৌর কহিলেন ; “আচাৰ্য্য বর প্রার্থনা কর।” আচার্য বলিলেন “যাহা চাহিয়াছিলাম সকলই পাইয়াছি, আর কিছুরই প্রয়োজন নাই ।” তখন গৌর মুরারিকে কহিলেন, “মুরারি, তোমার অভিলষিত রূপ দর্শন কর।” মুরারি দেখিলেন, দূৰ্ব্বাদলগাম রামচন্দ্র বীরাসনে উপবিষ্ট ; তাহার একদিকে লক্ষ্মণ, অন্যদিকে সীতা দণ্ডায়মান ; বানরগণ যুক্ত করে স্তব পাঠ করিতেছে। দেখিয়া মুরারি হইলেন। তখন র্তাহাকে .* ডাকি বোলে বিশ্বস্তুর, আরেরে বানরা । পাসরিলি-তোরে পোড়াইল সীতা-চোরা ॥ তুই তার পুরী পুড়ি করিলি বংশক্ষয় ! সেই প্রভু আমি তোরে দিল পরিচয় ॥ বঙ্গদর্শন মূৰ্ছিত হইয়া ভূপতিত [ ১২শ বর্ষ, চৈত্র, ১৩১৯ উঠ উঠ মুরারি, আমার তুমি প্রাণ। আমি সেই রাঘবেন্দ্ৰ তুমি হনুমান ॥” মুরারি চৈতন্তলাভ করিলে বিশ্বম্ভর কহিলেন, “তুমি ইচ্ছামত বর প্রার্থনা কর।” মুরারি বলিলেন, “বর দাও প্রভু যেন তোমার গুণ কীৰ্ত্তন , করিতে করিতে আমার জীবন অতিবাহিত হয়। জন্মে জন্মে যেন আমি তোমার দাস হইতে পারি । তোমার দাসদিগের মধ্যে প্রতি জন্মে আমি যেন জন্মগ্রহণ করি । “তথাস্তু” বলিয়া গেীর বর দান করিলেন। অনন্তর হরিদাসকে সম্বোধন করিয়া গেীর কহিলেন, ‘হরিদাস আমার প্রাণ হইতেও তুমি আমার প্রিয়তর। তোমার যে জাতি আমারও তাই। পাপিষ্ঠ যবনগণ তোমায় বড় দুঃখ দিয়াছিল। নগরে নগরে তোমায় মারিয়া লইয়া বেড়াইয়াছিল। অত্যাচারকারিগণের শাস্তি বিধান করিতে আমি ইচ্ছা করিয়াছিলাম। কিন্তু কি করিব, দেখিলামু যাহারা তোমাকে নিদারুণ যন্ত্রণ দিতেছে, মনে মনে তুমি তাঁহাদেরই মঙ্গল কামনা করিতেছ। দুৰ্ব্বত্তগণ তোমাকে যে প্রহার করিয়াছিল, তাহা আমারই পুষ্ঠে পড়িয়াছিল ; এই দেখ এখনও তাঁহার দাগ রহিয়াছে। তোমার দুঃখ সহ্য করিতে না পারিয়া আমি শীঘ্র শীঘ্র প্রকাশিত হইয়াছি। তোমাকে আমি অক্ষয় ভক্তি-ভাণ্ডার দুনি করিলাম।” প্রভুর সুধামাখা বচনাবলী শুনিয়া হরিদাস মূৰ্ছিত হইয়া পড়িলেন। অত:পর অদ্বৈতাচাৰ্য্যকে সম্বোধন করিয়া গেীর কহিলেন, “আচাৰ্য্য, একদিন নিশাভাগে তোমাকে ভোজন করাইয়াছিলাম মনে পড়ে ? তুমি গীতার শ্লোকবিশেষে ভক্তিযোগ না
পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/৭৪৯
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।