পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/৭৫০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১২শ সংখ্যা } পাইয়া উপবাস করিয়া ঘুমাইয়াছিলে, স্বপ্নে আমি তোমাকে ঐ শ্লোকের ভক্তিসূচক অর্থ বুঝাইয়া দিয়াছিলাম' কতদিন কত শ্লোকের অর্থ আমি তোমাকে বুঝাইয়া দিয়ুছি তাহ কি তোমার মনে আছে ?” অনস্তর সেই সমস্ত শ্লোক একে একে অকৃত্তি করিয়া অদ্বৈতকে স্তম্ভিত করতঃ গেীর কহিলেন, “আচার্য সকল পাঠই তোমাকে পূৰ্ব্বে বলিয়াছ, কেবল এক পাঠ বলি নেই ; এখন তাঁহা শোন। গীতার ১৩ অধ্যায়ের ১৩ শ্লোকের যথার্থ পাঠ এই ; সৰ্ব্বতঃ পাণিপাদন্তং সৰ্ব্বতোহক্ষিশিরোমুখম্। সৰ্ব্বতঃ শ্ৰুতিমল্লোকে সৰ্ব্বমাবৃত্য তিষ্ঠতি ॥” আচার্য্য আনন্দে বিহ্বল হইয়া পড়িলেন। তখন গেীর যাবতীয় ভক্তগণকে বর প্রার্থনা করিতে আদেশ করলেন। অদ্বৈত কছিলেন, “প্ৰভু আমি কেবল এই চাহি যে ੇ મૂત્ર’ নীচ ও দরিদ্রগণকে কৃপা কর।” কেহ কহিলেন, "আমার পিতা তোমাকু নিকট আসিতে দিতে চাহেন না ; তাহার মুমতি বিধান কর।” যিনি যাহা চাহিলেন ভক্তবুংসল গেীর তাহাকে তাঁহাই প্রদান করি লেন । ... " . . কতজনকে ডাকিয়া গেীর কত মিষ্ট কথা কহিলেন, কতজনকে বর দিলেন, কিন্তু মুকুন্দ দত্তের নাম একবারও উচ্চারণ করিলেন না। মুকুন্দ প্রকোষ্ঠীস্তরে মনোদুঃখে কাল কাটাইতেছিলেন। গেীরের আদেশ ব্যতীত আদিতে পারেন না, অথচ আদিবার জন্য প্রাণ ব্যাকুল হইয় উঠতেছিল। তাহার দুঃখে ব্যথিত হইয় ঐবাস গৌরকে কছিলেন, ‘প্রভু, তোমার প্রিয় ভক্ত মুকুন্দ নিমাই-চরিত্র ግ86 তোমার নিকট কি • অপরাধ করিয়াছে যে তাহাকে ডাকিতেছ না ? মুকুন্দ যে তোমার পরম ভক্ত ; সে যদি অপরাধ করিয়া থাকে, নিজ হস্তে তাহার দণ্ডবিধান কর, কিন্তু তাহাকে দূরে ফেলির রাখিও না।’ শ্ৰীবাসের কথায় কোপ প্রকাশ করিয়া গেীর কহিলেন, “ও হতভাগ্যের জন্ত কেই প্লামাকে অনুরোধ করিতে পরিবে না, ও ਾਂ দাঁতে তৃণ লয়, কখনো জাঠি মারে। এরূপ করিয়া কেই কি কখন আমাকে পাইয়াছে ?” শ্ৰীবাস বিনীতভাবে জিজ্ঞাসা করিলেন, “মুকুন্দের অপরাধ কি প্রকাশ করিয়া বল।” গেীর কছিলেন, “ও যখন যেখানে যায় সেইমত কথা বলে। যখন অদ্বৈতের সঙ্গে যোগবশিষ্ঠ পাঠ করে, তখন দাঁতে তৃণ লইয়া ভক্তিভরে নাচিতে থাকে। আবার অন্ত সম্প্রদায়ের লোকের সঙ্গিত মিশিয়া ভক্তিকে তুচ্ছ করে। ভক্তি ইতে বড় কিছু আছে এ কথা যে বলে সে আমাকে দেয়। ভক্তি স্থানে কৃতাপরাধ মুকুন্দ আমাকে দেখিতে পাইবে না।” মুকুন্দ অন্তরাল হইতে নমস্তই শুনিলেন এবং ভাবিতে লাগিলেন, “গুরু উপরোধে পূৰ্ব্বে ভক্তির শ্ৰেষ্ঠত্ব মানি নাই, সৰ্ব্বান্তর্যামী প্ৰভু তাহা জানিতে পারিয়াছেন ; তাই আমার এই শাস্তি হইল। কিন্তু তাঙ্গর দর্শনই যদি না পাইলাম, তাহা হইলে এই অপরাধী শরীর রাখিয়া কি লাভ ? আমি এ শরীর ত্যাগ করিব।” মনে মনে এই সঙ্কল্প করিয়া শ্ৰীবাদকে কহিলেন, “ঠাকুর, একবার প্রভুকে জিজ্ঞাস কর, এ জন্মে ত তাহার দর্শন লাভ আমার অদৃষ্ট ঘটিল না, কখনও