পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/৭৬৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১২শ সংখ্যা ] কোথা হইতে আসে তাহ বোঝা ভার, কিন্তু তাহা যে আসে তাঁহাতে তো সন্দেহ নাই। এক মুহূৰ্ত্ত পূৰ্ব্বে কৃষ্ণের আসিতে বিলম্ব হওয়ার জন্য যে রাধিকা বলিয়াছিলেন— বাধাং বিধেহি মলয়ানিল পঞ্চবশ প্রাণান্‌ গৃহাণ ন গৃহং পুনরাশ্রয়িয্যে। কিন্তে কৃষান্ত ভগিনি ক্ষময় তরঙ্গে রঙ্গানি সিঞ্চ মম শাম্যতু দেহদাহঃ ॥ তিনিই বিনীত শ্ৰীকৃষ্ণকে— হরি হরি যাহি মাধব যাহি কেশব মা বদ কেতব বাদম্। বলিয়া স্বচ্ছন্দে বিদায় করিয়া দিলেন। অস্থয়া বড় বিযম ভাব—“ন মানিনী শং মহতেশ্চ সঙ্গমম্‌” এ স্থত্রে একটা সাধারণ সত্য প্রকাশ করিয়াছে। মান बितििनि३ একটা পাগলামি বটে, কিন্তু যে যত অধিক পাগল মানের সময় তারি মুখ খুলে বেশী। জয়দেবের রাধিক শ্ৰীকৃষ্ণকে বেশ দু কথা গুছাইয়া শুনাইয়াছেন, আবার বঙ্গের পাগল কবির পাগলিনীও ঠিক এমনি ধারা শ্লেষের বাণ ছাড়িয়াছেন। কেবল বিদ্যাপতির সরলা রাধিক গালি দিয়া মনের জালা জুড়াইয়াছেন। যতদিন এই পোড়া “আমি”টা একেবারে পুড়িয়া ছার হইয়া না যায় ততদিন কি? আর অভিমান ছাড়া যায়? তা মানও করিব, আর তারপর সে চলিয়া গেলে আবার , কঁাদিতেও বসিব । তাঁহা ন হইলে পাগলানীর চূড়ান্ত হয় কৈ ? মানের রস বড় পরিপক, তাই বৈষ্ণব আলঙ্কারিক বলিয়াছেন যে এ রসের দ্বারা শ্ৰীকৃষ্ণের বড় প্রতি বোধ হয়। ’ জয়দেব ও বিদ্যাপতি ૧૭૭) প্রেমের আশ্চর্য্য গতি মান স্বাভাবিক। জনমে কখন স্বল্প কখনও অধিক ॥ দেই দুইমত হেতু নিহেতু উপজে। কৃষ্ণচন্দ্র তাহাতে পরম মুখ ভুঞ্জে ॥ * কেন ? মানের ভিতর দিয়া, প্রণয় ফুটিয়া বাহির হয় বলিয়া এবং এই মানের অবলম্বনে নিজের অভিমান বর্জন করা যায় বলিয়া ইং প্রণয়ীর পক্ষে বড় উপাদের রস, আর “নায়ক শিরোমণি” ইহাকে অবলম্বন করিয়াই "নায়িকা শিরোমণির” মান बाज़ड्रेड 5ांtश्न বলিয়া তিনি মান এত ভালবাসেন। থাকুক সে কথা, এখন আমরা যাহা বলিতেছিলাম তাহাই ধলি । রাধিক তো কৃষ্ণের সকল অনুরোধ, দীনতা, বিনয় উপেক্ষ করিয়া মানে বসিলেন, বেশ দু’কথা শুনাইয়াও দিলেন। যদি শ্ৰীকৃষ্ণের হৃদয়ে ভালবাস না থাকিত তাহা হইলে শ্রীরাধাকে ত্যাগ করিবার এমন সুন্দর সুযোগ আর হইত না। যদি তিনি কেবল ইন্দ্রিয়-পরায়ণই হইতেন তাহা হইলে তাহার স্ত্রীরাধাকে ত্যাগ করিয়া . অন্ত যুবতীশত, যাহারা তাহাকে একান্ত প্রার্থনা করিয়াছে তাহীদের কাছে ফিরিয়া যাইয়া নিজের মুখ খুজিয়া লইবার কোনও বাধা ছিল না, বরঞ্চ এ তো তাহার মনোমত সুযোগে পরিণত হইত। আমি আসিলাম তুমি আমায় ফিরাইয়া দিলে, আমি আর কি করিতে পারি ? এতো তাহীর সুন্দর কৈফিয়ৎ । কিন্তু কৈ তিনি তো সে অছিলার আশ্রয় গ্রহণ করিয়া রাধাকে ত্যাগ করিলেন ন, বরং তাহার মানাপগমের ক্রোধশক্তির অপেক্ষা করিয়া তাহার সহিত পুনমিলনের প্রতীক্ষায় রছিলেন। ইহার মধ্যে সর্থী