১২শ সংখ্যা ] ভবতু ভবতীহ-ময়ি সততমনুরোধিনী . তত্র মম হৃদয়মতি-যত্নম ৷ তোমাকে লইয়াই আমার কাম, আমার ভোগ আমার বাসন, আমার লালস এ সকলেরই চরম আশ্রয় তোমার ঐ দেহখানি। তোমার মনটী আমার সৰ্ব্ব আকাঙ্ক্ষার কেন্দ্রস্থল। হে মানিনি, তোমার বৃথা সন্দেহ দূর কর, তুমি থাকিতে কি এ হৃদয়ে আর কাহারও স্থান হইতে পারে ? তাই বলি "মুঞ্চমী মানমনিদানমূ” এস আমার হৃদয়ে, তোমার নয়ন রাগে আমার কাল দেহ রঞ্জিত হোক, তোমার হৃদয়ের হার চঞ্চল দোলনে হৃদয়ে শোভা সম্পাদন করুক, তোমার মেথল কোমল নিরূণে লালসার মদনের আজ্ঞার প্রচার করুক, প্রিয়ে আমি অপরাধী আমি একান্ত বাসনা সত্ত্বেও তোমার আর কোনও অঙ্গ স্পর্শ করিতে সাহস করি না শুধু আমার হৃদয়ের ভূষণ তোমার পা দুখানি ছু ইতে সাহস করি, এস সেই দুইটকে অলক্তক রাগে রঞ্জিত করি। আমি বাসনা বিষজর্জরিত, তোমার স্পৰ্শই তাহার একমাত্র ঔষধ। অতএব আমার শিরেীরত্ব স্বরূপ সেই পা দুখানি— আশ্চর্য্যের বিষয়'নহে যে’জয়দেব এই চরণটা শেষ করিতে গিয়া চকিত ও ত্রস্ত ভাবে উহ অসমাপ্ত রাখিয়া গিয়াছেন, আমরা যেন তাহার সেই দ্বিধাদোলিত ও চকিত হৃদয়ের স্পন্ন স্পষ্ট অনুভব করিতে পারি। কি ! করিয়া তিনি তাহার চিরারাধী দেবতা জগৎ পতি কৃষ্ণকে এত দীনতা স্বীকার করাইবেন ইহা ভাবিয়া ষে তিনি আকুল হইয়াছিলেন, অকুল পাথরে পড়িয়াছিলেন সে বিষয়ে সন্দেহ হইতে পারে না। ভক্তমালে ঐ চরণ পূরণের জয়দেন ও বিদ্যাপতি ৭৬৫ যে বিবরণ মাছে তাড়া কেষ্ট বিশ্বাস করুন বা ন করুন, এ কথা সত্য যে সেই মানীর মানী অথচ ভক্তের কাছে তৃণাদপি সুনীচ, ভক্তের মান বাচাইধার জন্য যিনি চিরদিন প্রতিজ্ঞাবদ্ধ, তিনিই ভক্ত কবির হৃদয়ে অধিষ্ঠান করিয়া নায়িকার শিরোমণি রাধাঠাকুরাণীর মান ঝড়াইবার জন্ত কৰ্ব্বি :मथनौ इङ्ग्रेड “দেহি পদপল্লবমুদ্রারমৃ” ই অসমসাহসিক এই অশেষ আশাপ্রদ বাক্য বাহির করিয়াছিলেন । আমরা যে ভাবেই কৃষ্ণচরিত্র বিচার করিনা কেন জয়দেবের কাছে যে “কৃষ্ণস্তু ভগবান স্বয়ং” সে বিষয়ের প্রমাণ গীতগোবিন্দের পত্রে পত্রে, ছত্ৰে ছত্রে বিদ্যমান রহিয়াছে, অতএব বৈষ্ণবসাহিতো ভগবানের দীনতা যে কতদূর প্রস্থত হইতে পারে তাহার এই প্রথম ও প্রধান নিদর্শন লিপিবদ্ধ করিতে যে জয়দেবকে অসমসাহসিকতার আশ্রয় লইতে হইয়াছিল সে বিষয়ে কোনও মতভেদ হইতে পারে না । ভক্তমালের বিবরণ একেবারে অসম্ভব বলিয়া আমরা মনে করি না, কিন্তু কাহাকেওঁ বিশ্বাস করিতেও বলি না, কারণ তাহার কোনও প্রয়োজন নাই । যেরূপেই এই বাক্য লিখিত হউক, আমরা ইহা হইতে ভক্তিরসের এক অভাবনীয় নুতন তথ্য জানিতে পারিয়াছি, এবং মহাকবি ও মহাপ্রেমিক জয়দেব সেইভাব বঙ্গদেশে প্রথম প্রবাহিত্ব করিয়াছেন, তাই ভক্ত বৈষ্ণবের কাছে জয়দেবের এত সম্মান, জয়দেবের আসন এত উচ্চে ক্রমে এই ভাব সহজ হইয় আসিাছিল, এমন কি বিদ্যাপতিতেই যেন অতটা সপ্রম-বোধ আর দেখিতে পাঞ্জা যায়
পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/৭৭০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।