১২শ সংখ্যা ] জয়দেব ও বিদ্যাপতি વૃ૭૧ এবং এই জন্তই বৈষ্ণব অনুবাদক লিখিয়াছেন— করিয়াছেন। বিদ্যাপতিতে এইজন্ত কলা শ্ৰীকৃষ্ণ ভজন তত্ত্ব সকলি লিখিলা— বৈষ্ণবের ধ্যানবস্তু তত্ত্ব বিচারিলা । 擎 擎 蚤 নিত্যলীলা-সহ গ্ৰন্থ বিচারি কছিলা । রসসার গ্রন্থ যাতে সব কৃষ্ণলীলা ॥ 豪 豪 擎 শ্রীকৃষ্ণে একান্ত আত্মা তনু মন যার— সেই জয়দেব পাদপদ্মে নমস্কার ॥ জয়দেবের কাব্যের যেখানে সমাপ্তি, বিদ্যাপতির কাব্যের সেই খানেই আরম্ভ । বিদ্যাপতির কাব্যের প্রাণ বিরহে, সেই বিরহ তিনি সম্পূর্ণ সম্ভোগের পরে আরম্ভ করিয়াছেন । কিন্তু ইহাও অস্বীকার করিবার উপায় নাই যে, জয়দেব গুরু, বিদ্যাপতি শিষ্য শুধু বিদ্যাপতি কেন সকল বৈষ্ণব কবিই জয়দেবের শিষ্য, কারণ জয়দেব মধুর রসের আদি কবি । এক হিসাবে কিন্তু বিদ্যাপতি গুরুর অপেক্ষ অধিক কৃতী ; তাহার শ্রীরাধিকার চরিত্রের ক্রমবিকাশ সম্পাদনে আমরা তাহার পরিচয় পাই। একটী সরলা বালিক ভালবাসার পথে কেমন করিয়া অগ্রসর হয়, বিদ্যাপতি তাঁহাই স্থল্ম ভাবে দেখাইয়াছেন, পক্ষান্তরে একজন ভক্ত ভগবৎ’ প্রেমের পথে কেমন করিয়া ধীরে ধীরে অগ্রগামী হয়, বিদ্যাপতি তাহাও দেখাইয়াছেন। এইরূপ একটা সরলা বালিকা পরকীয়া হইলে, তাহার যেরূপ অবস্থা হয়, এবং उॉशब (21) ও ‘কুলের মাঝে পড়িয়া যে সঙ্কটাপন্ন অবস্থা ও বিপরীতগামী ভাবাবলী তাহাতে প্রকাশ পায়, শেষে প্রেমের জয় হইলে কেমন করিয়া সে সমস্ত ত্যাগ করিয়া প্রিয়ামুশীলনে নিমগ্ন হয়, বিদ্যাপতি তাহা নিপুণ তুলিকার সহিত চিত্রিত কৌশল বেশ বিকশিত। পক্ষান্তরে, ভক্তির ক্রম পরিপুষ্ট, ভক্তের হৃদয়ে সংসার ও ভগবানের এই দুইয়ের মধ্যে কাহাকে অবলম্বন কবিতে হইবে এই ভাবনার তুমুল আন্দোলন ও এই পরম্পরবিরোধী ভাবদ্বয়ের পকুম্পরের অভিনব ষ্ট্ৰেীয় যে সকল অবস্থা বিশেষের সংস্থান ও পরিশেষে ভগবদকর্ষণের জয় হয়, কবি ও রসিক ভক্ত বিদ্যাপতি উৎসাহের সহিত তাহার বর্ণনা করিয়াছেন। এইজন্ত বৈষ্ণব কবি হিসাবে বিদ্যাপতির স্থান কোনও বৈষ্ণব কবির নীচে নছে ; এবং কাব্যকলা ও মনুষ্যহীদয়জ্ঞতা যদি স্থান নির্ণয়ের পরিমাপক হয় তাহা হইলে তিনি অন্তান্ত সকল বৈষ্ণব কবির গুরুস্থানীয় তাহ সূক্ষদশী মাত্রকেই স্বীকার করিতে হইবে না। আমরা বিদ্যাপতির কথ্য অনেক বার বলিয়াছি হয় তো ভবিষ্যতে আবার কিছু কিছু বলিতেও হইতে পারে, অতএব এক্ষেত্রে আর বেশী বলিবার ইচ্ছা করি না। বোধ হয়—আমরা এতক্ষণে দেখাইতে পারিয়াছি যে কবি জয়দেব ভাব, ভাষা ও ছন্দে বঙ্গসাহিত্যকে অশেষ প্রকারে ঋণজালে বদ্ধ করিয়া রাখিয়াছেন । মৈথিল কবি বিদ্যাপতি ও বাঙ্গালী কবি চণ্ডীদাস, র্যাহারা বঙ্গ কাব্যসাহিত্যকে অশেষ শোভাশালী রত্বরাজি উপহার দিয়া বহু সমৃদ্ধ করিয়াছেন—উভয়েই মধুর রসের আদিকবি জয়দেব গোস্বামীর কাছে অনেক বিষয়ে ঋণী, ইহা অপেক্ষ আর অধিক প্রশংসার কথা । আমি—বঙ্গভারতীর একজন নগণ্য সেবকখুজিয়া পাই না । بلوچ শ্ৰীজিতেন্দ্রলাল বসু।
পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/৭৭২
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।