● ●●藝リ議s 獲・総や রবীন্দ্রনাথের কাব্য-প্রতিভা সত্য এবং সনাতন ধৰ্ম্মের শান্তি, প্রীতি, ও মঙ্গলময় মন্ত্রের প্রচারক ঋষিগণ। যে সকল ঋষি তাহ কাব্যে প্রচার করিয়াছেন তন্মধ্যে রবীন্দ্রনাথের প্রতিভা অভিনব এবং অপূৰ্ব্ব । বিংশ শতাব্দীর রক্তিম সন্ধ্যায়, প্রাচ্য এবং প্রতীচ্য জীবন-সংঘর্ষের মহাকোলাহলের মধ্যে, ধীরে ধীরে, বহু পুরাকালের কতকগুলি লুপ্ত গান এবং শান্তিবাণী, ঋবি রবীন্দ্রনাথের নিকট বঙ্গের শস্যশ্যামলক্ষেত্রপ্রান্তে, ভগ্নকুটীরে, এবং পুরাতন মন্দিরে বসিয়া আমরা শুনিয়াছি। বিংশতি বৎসর পূৰ্ব্বে সেগুলি আমরা কিছুই বুঝিতাম না। তখন কল্পনা-মন্দিরে সেগুলি ভাঙ্গিয়া, গড়িয়া, বিশ্লেষণ করিয়া তাহ হইতে অনেক অর্থ বাহির করিতে চেষ্টা করিয়াছি। সাহিত্যজগতে তাহার প্রতিভা বাইরণ, সেলী, এবেঞ্জার ইলিয়ট, ব্রাউনিং, ওয়ার্ডসওয়ার্থ প্রভৃতি কবিগণের সহিত তুলনা করিয়াছি। ক্রমে বঙ্গে অভূতপূর্ণ ধৰ্ম্ম-জীবনের উন্মেষ হইল, যে জীবন দেবতাকে বহুকাল ধরিয়া ভারতবর্ষ বিশ্বত হইয়াছিল তাহাকে মন্ত্ৰপুত করিয়া নবপ্রতিষ্ঠিত যজ্ঞের মধ্যে বঙ্গের সন্তানগণ • পুনৰ্ব্বার আবাহন করিল। সেই সন্তানগণের অগ্রগণ্য হোতা এবং কবি—রবীন্দ্রনাথ । যে মন্ত্রদ্বারা তিনি এই সাধন। শিখাষ্টতে চাহিয়াছেন তাহার মূলে প্রকৃতি এবং পুরুষের নিগূঢ় সম্বন্ধ প্রতিষ্ঠিত। তাহার কথা কাব্য। তাহার উৎস উপনিষদ। তাহার ভিত্তি জ্ঞান, এবং উপকরণ প্রেম। সেই প্রেম সিঞ্চন করিয়া রবীন্দ্রনাথ বহু শতাব্দীর মরুভূমিকে পুষ্পিত এবং লতাবেষ্টিত আশ্রমে পরিণত করিয়াছেন। সখ্যভাবে, পবিত্ৰ মনে, প্রীতির সহিত যখন সেই আশ্রমে প্রবেশ করিয়াছি, তখনই কিছু নূতন দেখিয়াছি এবং শিক্ষা করিয়াছি। তখনই কোনও কালের বিস্মৃত কথা মনে পড়িয়াছে। কোনও গভীর অন্তর্নিহিত এবং অমৃতআবিণী ভাবলহরী ফুটিয়া উঠিয়াছে। বুঝি নাই কিন্তু অমুভব করিয়াছি। কারণ জানি না, তবুও নিজের বিগলিত অশ্রুধার দেখিয়া লজ্জিত হইয়াছি। কেবল কাব্য নহে, তাহারই মধ্যে কলভাষে কবি রবীন্দ্রনাথ কতকগুলি ধর্শ্বজগতের আদিম ইতিহাস ক্ষুদ্র এবং
পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/৭৮
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।