২য় লংখ৷ } যাহারা গুরূপদিষ্ট পথ জানে না, যাহদিগের দেহের প্রাকৃতিক সংগঠনে প্রেম এবং ভক্তির উপকরণ বৰ্ত্তমান, তাহাদিগের পক্ষে কাব্যই ধৰ্ম্মপথপ্রদর্শক। ভারতবর্ষের আদিম সামাজিক কিংবা জাতীয় ইতিহাস বিশদরূপে কোথাও বর্ণিত হয় নাই, কিন্তু তাহা হইতেও অধিকতর মূল্যবান ইতিহাস আমরা প্রাপ্ত হইয়াছি। তাহ ভারতবর্ষের ধৰ্ম্মশাস্ত্র । কাব্য, তন্ত্র এবং দর্শন সেই শাস্ত্রের অন্তর্গত। আদিম প্রকৃতির অঙ্কশয়ান স্বপ্নজড়িত মানবশিশুর সহিত বিশ্বপরমাত্মার সম্বন্ধ আমরা প্রাচীন মহাকাব্যে দেখিতে পাই। সেই বিশ্বব্যাপ্ত মায়াদেহের রচনা তন্ত্রে বর্ণিত হইয়াছিল। , দর্শনশাস্ত্র তাহা বিচারে প্রবৃত্ত হইয়াছিল। কেবল কাব্যের দিকেই দৃষ্টিপাত করিলে অনায়াসে উপলব্ধি হইবে যে, পৌরাণিক * ইতিহাস ইহার প্রথম যুগের উপকরণ। কিন্তু সে ইতিহাস ধর্মের অদ্ভূত ইতিহাস। সেই যুগের প্রকৃতি ও পুরুষের গুঢ় পারিবারিক সম্বন্ধের ইতিহাস । তাহাতে এ যুগের সৌন্দৰ্য্য-উপাসনার তত্ত্ব বিরল। তাহাতে পরবর্তী যুগের পরিস্ফুট যৌবনলক্ষণ নাই। তাহারও পরবত্তী যুগের দর্শনশাস্ত্রের বাৰ্দ্ধক্য-লক্ষণ নাই। শৈশবের স্বপ্ন কোন যুগেই কেহ বুঝিতে পারে না। অথচ তাহাই প্রকৃত তন্ত্র ও ইতিহাস, এবং প্রকৃত দর্শনের প্রমাণ। একটি নিষ্কলঙ্ক, নিষ্পাপ, ঘুমন্ত সদ্যোজাত শিশুর দিকে লক্ষ্য করিয়া দেখুন। নীরধ গৃহে শিশুর थ७ि ७कांशक्लेिख छर्ननौ, ७दर जमनौद्र অঙ্কে জীবন্মুক্ত মুৰুপ্ত সস্তান। - উভয়ের রবীন্দ্রনাথের কাব্যপ্রতিভা ዋላ অন্তরালে অদৃপ্ত পিতা। তিন জনেই যুক্ত এবং সেই গোপনীয় যোগপথেই ধৰ্ম্মের প্রথম অন্ধুর নিহিত। যে স্বপ্নে শিশু ময় তাহা কখনই আধুনিক হইতে পারে না, কারণ তাহার প্রত্যেক হাস্তে নির্লিপ্ত ভাব, প্রত্যেক ক্রদনে পূৰ্ব্ববৈরাগ্য এবং প্রত্যেক চাহনিতে অস্তদৃষ্টি। দর্শন যাহা বুঝাইতে চাহে, তন্ত্র যাহা বর্ণনা করে, জগৎ-লীলার যাহা শেষ, যাহার মধ্যে মণিময় স্বত্রের তীয় বিশাল বিশ্বধৰ্ম্মের আদি এবং অনাদি বন্ধম, অজ্ঞেয় এবং অদৃশু বিরাট সত্য পুরুষের • মহিমা প্রচার করিতেছে, ইহা তাহাই । তাহা বর্ণনা করা শিশুর ক্ষমতার বহির্ভূত। কারণ তাহার বিবেক এবং বিশ্লেষণের শক্তি প্রফুটিত হয় নাই। শিশু তখনও কবির পদে প্রতিষ্ঠিত নহে। সে কথা জানে না । তখনও ছন্দের উৎপত্তি হয় নাই । আনন্দ অন্তনিহিত । কাব্যের প্রথম তিনটি যুগ সমগ্র পৌরাণিক কাব্য এবং মহাকাব্য সেই আদিম স্বপ্নের কথা। সেই মহান এবং বিরাট স্বপ্ন কি তাহা আমাদিগের বুদ্ধির অগোচর, কিন্তু এককালে আমরাও তাহার দ্রষ্টা ছিলাম। বাহ প্রকৃতিতে মন আকৃষ্ট হইলে সেই স্বপ্ন আমরা বিশ্বত হই। সত্য স্বপ্ন অসত্য হইয়া দাড়ায়। পুরাতন হাসি নুতন, পুরাতন অশ্রু বাহ নয়নের, পুরাতন জীবন তখন পরিচ্ছিন্ন। কিন্তু বাল্যাবস্থা এবং যৌবন পৰ্য্যন্তও সেই স্বপ্নের প্রভাব আমরা দেখিতে পাই । জন্মান্তরে বদ্ধসংসারী জীব সেই স্বপ্ন বিস্তৃত হইয়া পথভ্রান্ত অরণ্যগত পধিকের ন্যায় পরিভ্রমণ করে ।
পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বাদশ খণ্ড.djvu/৮০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।