পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/১৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তৃতীয় সংখ্যা । ] অপেক্ষায় নদীতীরে ভ্রমণ করিতে করিতে একদা সিংহের সন্ধান পাইয় তাহাকে নিহত করিয়া প্রত্যাবৃত্ত হইলেন। তাহার অঙ্গক্ষতের কারণ জিজ্ঞাসা করিয়া কমলা সে সংবাদ জ্ঞাত হইয়াও প্রকাশ করিতে পারিলেন না। এদিকে নগরে তুমুল কোলাহল উখিত হইল । সিংহহত্যার জয়োল্লাস রাজভবনে উপনীত হইল, কিন্তু কোন বীরপুরুষ এরূপ কাৰ্য্য সম্পাদন করিলেন, কেহ তাহার সন্ধান বলিতে পারিল না । জয়ন্ত সে সন্ধানের জন্য চারিদিকে চর নিযুক্ত করিলেন । জয়াপীড়ের গুণগ্রাম জ্ঞাত হইয়৷ র্তাহাকে কন্যাসম্প্রদান করিবেন বলিয়া জয়ন্ত সঙ্কর করিয়াছিলেন, কিন্তু জুয়াপীড় ছদ্মবেশে নিরদেশ হইয়াছেন শুনিয়া জয়ন্ত সে আশায় হতাশ হইয়াছিলেন । সিংহহত্যায় সংবাদে আশা জাগিয়া উঠিল ;– ইহ জয়াপীড়ের ন্যায় বীরপুরুষের পক্ষেই সম্ভব বলিয়া জয়স্তের প্রতীতি হইল। তিনি জয়াপীড়ের সন্ধান করিতে লাগিলেন । সন্ধান করিয়া জয়াপীড়কে বাহির করিতে বিলম্ব হইল না । তখন পৌঁও,বদ্ধন উৎসবমগ্ন হইল । নৃত্যগীতবাদ্যোদ্যমে জলস্থল টলমল করিয়া উঠিল। জয়ন্ত জয়াপীড়কে রাজভবনে আনয়ন করিয়া যথাশাস্ত্র কন্যাদান করিয়া মনস্কামনা পূর্ণ করিলেন। জয়াপীড় এতদিনের পর পুনরায় দিগ্বিজয়সাধনের অবসর প্রাপ্ত হইলেন। শ্বশুরের সেনাদল লইয়৷ পঞ্চগৌড় পদানত করিয়া শ্বশুরকে সেই সংযুক্ত সাম্রাজ্যের অধীশ্বর করিয়া দিলেন। পঞ্চগৌড়েশ্বর জয়ন্ত । S 90 তখন স্বদেশগমনের সময় উপস্থিত জুইল। কল্যাণী স্বামিপৃহে চলিলেন, কমলাও অনুগামিনী হইলেন । এই দুই বঙ্গরমণী কাশ্মীরে উপনীত হইয়া জয়াপীড়রাজ্যের সৰ্ব্বেসৰ্ব্বা হইয়া উঠিলেন। ইহাদের প্রভাবে কাশ্মীরে এক নবযুগের অভু্যদয় হইল। কাশ্মীরের সংস্কৃতচর্চা কিছু শিথিল হইয়া পড়িয়াছিল। মহাভাষ্যের অধ্যয়ন ও অধ্যাপনা বিলুপ্ত হইয়া গিয়াছিল। তাহা আবায় প্রচলিত হইল। জয়াপীড় স্বরাজ্যে পরম পণ্ডিত বলিয়া বিখ্যাত হইয়া উঠিলেন। পৌণ্ড বদ্ধনে অজ্ঞাতবাস করিবায় সময়ে জয়াপীড় আলস্তে বা বিলাসে সময় নষ্ট করেন নাই । তিনি যখন স্বরাজ্যে প্রত্যাবৰ্ত্তন করিলেন; তখন লোকে তাহার ংস্কৃতব্যাকরণে পাণ্ডিত্য লক্ষ্য করিয়া বিস্মিত হইল। কহলণপণ্ডিত বলেন, তিনি ক্ষীরস্বামীর নিকট এই সুশিক্ষা লাভ করিয়াছিলেন । ক্ষীরস্বামীর নাম রাজতরঙ্গিণীতে উল্লিখিত আছে । ক্ষীরস্বামী কে ? ইতিহাসের অভাবে তাহার পরিচয় বিলুপ্ত হইয়া গিয়াছে। তিনি ষে অমরকোষের টীকাকার ছিলেন, এখন কেবল সেই কথাই শুনিতে পাওয়া যায়। পাণিনির ব্যাকরণ পৌণ্ডবৰ্দ্ধনে অধীত ও অধ্যাপিত হইত, তজ্জন্ত এ দেশে মহাভাষ্যের বড় গৌরব ছিল । অন্তান্ত প্রদেশে বহুপূৰ্ব্বে পাণিনির ব্যাকরণ ও মহাভাষ্য অপেক্ষা সংক্ষিপ্তসারের সমাদর সংস্থাপিত হইলেও, উত্তরবঙ্গে পাণিনির বিস্তৃত গ্ৰন্থই অধীত ও অধ্যাপিত হইত। জয়াপীড় তাহ কাশ্মীরে পুনরায় প্রচলিত করায় কাশ্মীরের