পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/১৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চীনেম্যানের চিঠি । “জন চীনেম্যানের চিঠি”,বলিয়া একখানি চটি বই ইংরাজিতে বাহির হইয়াছে। চিঠিগুলি ইংরাজকে সম্বোধন করিয়া লেখা হইয়াছে । লেখক নিজের বিষয়ে ষলেন —"দীর্ঘকাল ইংলণ্ডে বাস করার দরুণ তোমাদের ( ইংরাজদের ) আচার-অনুষ্ঠান-সম্বন্ধে কথা কহিবার কিছু অধিকার আমার জন্মিয়াছে ; অপর পক্ষে, স্বদেশ হইতে.দুরে আছি বলিয়া আমাদের সম্বন্ধেও আলোচনা করিবার ক্ষমতা খোয়াইয়া বসি নাই । চীনেম্যান্‌ সৰ্ব্বত্রই সৰ্ব্বদাই চীনেমাই থাকে ; এবং কোন কোন বিশেষ দিক্ হইতে বিলাতি সভ্যতাকে আমি যতই পছন্দ করি না কেন, এখনো ইহার মধ্যে এমন কিছু দেখি নাই, ধাহাতে পূৰ্ব্বদেশের মানুষ হইয়। জন্মিয়াছি বলিয়া আমার মনে কোনপ্রকার ক্ষোভ হইতে পারে।” ইংরাজিভাষায় লেখকের অসামান্ত দখল দেখিলেই বুঝা যায় যে, ইংরাজিশিক্ষায় ইনি পাকা হইয়াছেন -এইজন্ত বিলাতসম্বন্ধে ইনি যাহা বলিয়াছেন, তাহাকে নিতান্ত অনভিজ্ঞ লোকের অত্যুক্তি বলিয়া গণ্য করা যায় না . এই ছোট বইখানি পড়িয়া আমরা বিশেষ আনন্দ ও বল পাইয়াছি। ইহা হইতে দেখিয়াছি, এসিয়ার ভিন্ন ভিন্ন জাতির মধ্যে একটি গভীর ও বৃহৎ ঐক্য আছে। চীনের O সঙ্গে ভারতবর্ষের প্রাণের মিল দেখিয়। আমাদের প্রাণ যেন বাড়িয়া যায়। শুধু তাহাই নহে ; এসিয়া যে চিরকাল য়ুরোপের আদালতেই আসামী হইয়া দাড়াইয়া তাহার বিচারকেই বেদবাক্য বলিয়া শিরোধায্য করিবে, স্বীকার করিবে যে, আমাদের সমাজের বারো-আনা অংশকেই একেবারে ভিৎমৃদ্ধ নিৰ্ম্মল করিয়া বিলাতি এঞ্জিনিস্বারের প্ল্যান্‌ অনুসারে বিলাতি ইটুকাঠ দিয়া গড়াই আমাদের পক্ষে একমাত্র শ্রেয়— এই কথাটা ঠিক নহে,—আমাদের বিচারালয়ে যুরোপকে দাড় করাইয়া তাহারে4 মারাত্মক অনেকগুলি গলদ আলোচনা করিয়া দেখিবার আছে, এই বইখানি হইতে সেই ধারণ আমাদের মনে একটু বিশেষ জোর পায় প্রথমত ভারতবর্ষের সভ্যতা এসিয়ার সভ্যতার মধ্যে ঐক্য পাইয়াছে, ইহাতেও আমাদের বল ; দ্বিতীয়ত এলিয়ার সভ্যতার এমন একটি গৌরব আছে, যাহা সত্য বলিয়াই প্রাচীন হইয়াছে, বাঁহ সত্য বলিয়াই চিরন্তন হইবার অধিকারী, ইহাতেও আমাদের বল । সম্প্রতি আমাদের মধ্যে একটা চঞ্চলত। জন্মিয়াছে; আমাদের স্বাধীন শক্তি—আমাদের চিরকালের শক্তি কোনখানে প্রচ্ছন্ন হইয়া আছে, তাছাই সন্ধান করিয়া সেইখানে আশ্রয় লইবার জন্ত আমাদের মধ্যে একটা