পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/২৮৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ষষ্ঠ সংখ্যা । ] বিরোধ ও প্রয়াসই টেম্পেষ্টের মূলভাব । সেখানে প্রস্পেরে স্বরাজ্যের অধিকার হইতে বিচুত হইয়া মন্ত্রদলে প্রকৃতিরাজ্যের উপর কঠোর আধিপত্য বিস্তার করিতেছেন। সেখানে আসন্নমৃত্যুর হস্ত হইতে কোনমতে রক্ষণ পাইয় যে কয়জন প্রাণী তীরে উত্তীর্ণ হইয়াছে, তাহাদের মধ্যে ও এই শূন্য প্রায় দ্বীপের ভিতরে আধিপত্য লইয়। ষড়যন্ত্র, বিশ্বাসঘাতকতা ও গোপনহত্যার চেষ্টা ! পরিণামে তাহার নিবৃত্তি হইল, কিন্তু শেষ হইল, এ কথা কেইষ্ট বলিতে পারে না । দানবপ্রকৃতি ভয়ে, অভাবে পীড়িত কালিবানের মত স্তব্ধ হইয়। রহিল মাত্র, কিন্তু তাহার দস্তমুলে ও শাসলে ০ অবসরের নখাথে বিষ রহিয়া গেল । প্রাপ্য সম্পত্তি, সে তাহ পাচল । কিন্তু সম্পত্তিলা ভ ত বাহালা ভ—তাহ। বিষয়ি সম্প্রদায়ের লক্ষ্য হইতে পারে কাব্যের তাহ চরম পরিণাম নহে । টেম্পেষ্ট-নাটকের নাম ও যেমন, তাহার ভিতরকার ধ্যাপার ও সেহরূপ । মানুযেপ্রকৃতিতে বিরোধ, মানুষে-মানুষে বিরোধ -- এবং সে বিরোধের মূলে ক্ষমতা লাভের প্রয়াস । ইহার আগাগোড়াই বিক্ষেণভ । মানুষের বাধ্য প্রবৃত্তি এইরূপ ঝড় তুলিয়া থাকে । শাসন-দমন-পীড়নের দ্বারা এই সকল প্রবৃত্তিকে হিংস্রপশুর মত সংযত করিয়াও রাখিতে হয়। কিন্তু, এইরূপ বলের দ্বারা বলকে ঠেকাইয়া রাখা, ইহা কেবল একটা উপস্থিতমত কাজ চালাইবার প্রণালীমাত্র। আমাদের আধ্যাত্মিক প্রকৃতি ইহাকেই পরিণাম বলিয়া স্বীকার করিতে পারে শকুন্তলা । ミb^ツ না। সৌন্দয্যের দ্বারা, প্রেমের দ্বার, মঙ্গলের দ্বারা পাপ একেবারে ভিতর হইতে বিলুপ্ত, বিলীন হইয়া যাইবে, ইহাই আমাদের আধ্যাত্মিক প্রকৃতির আকাঙ্ক্ষা । সংসারে তাহার সহস্র বাধা ব্যতিক্রম থাকিলে ও ইহার প্রতি মানবের অন্তরতর লক্ষ্য একটি আছে । সাহিত্য সেই লক্ষ্যসাধনের নিগুঢ় প্রয়াসকে ব্যক্ত করিয়া থাকে । সে ভালকে সুন্দর, সে শ্রেয়কে প্রিয়, সে পুণ্যকে হৃদয়ের ধন করিয়া তোলে। ফলাফলনির্ণয় ও বিভা ষিক দ্বারা অfমাদিগকে কল্যাণের পথে প্রবুন্ত রাখা বাহিরের কাজ– তাহা দণ্ডনীতি ও ধৰ্ম্মনীতির আলোচ্য হইতে পারে—কিস্তু উচ্চসাহিত্য অন্তরাত্মার ভিতরের পথটি অবলম্বন করিতে চায় ;--তাহ স্বভাবলিঃস্থত অশ্রুজলের দ্বারা কলঞ্চক্ষালন করে, আস্থfরক রণার দ্বারা পাপকে দগ্ধ করে এবং সহজ আনন্দের দ্বারা পুণ্যকে অভ্যর্থন করে । কালিদাস ও তাহার দুরন্ত প্রবৃত্তির দাবদাহকে অনুতপ্ত চিত্তের অশ্রবযণে লিব্বাপিত করিয়াছেন । কিন্তু তিনি ব্যাধিকে লইয়া অতিমাত্রায় আলোচনা করেন নাহ—তিনি তাহীর আভাস দিয়াছেন, এবং দিয়া তাহার উপরে একটি আtছাদন টানিয়াছেল । সংসারে এরূপ স্থলে যাহা স্বভাবত হইতে পারিত, তাহাকে তিনি চুব্বাসার শাপের দ্বারা ঘটাইয়াছেন। নতুবা তাহা এমন একান্ত নিষ্ঠুর ও ক্ষোভজনক হইত যে, তাহাতে সমস্ত নাটকটির শান্তি ও সামঞ্জস্য ভঙ্গ হইয়া ষাইত। শকুন্তলায় কালিদাস যে রসের প্রতি লক্ষ্য করিয়াছেন, নাটকে