পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রথম সংখ্যা । ] ংমহল বা মোগল-বাদশাহের অন্তঃপুর। ३:S কাঁকে নিজেই নিজের স্কন্ধে তুলিয়া লইলেন এবং তুমুল হাস্তকোলাহলের মধ্যে রাজসভা হইতে বহির্গত হইয়া গেলেন। 顧 @ ংমহলের ভিতর বহুসংখ্য ক্রী তদাসী ছিল। তাহাদিগকে বেগম ও সম্রাটের রক্ষিতা রমণী এবং শাজাদী ও অপরাপর ভামিনীকুলের গৃহমার্জন ও শয্যরচনা হইতে পাদপ্রক্ষালন ও অঙ্গসংবাহনাদি পর্য্যন্ত সকল কাৰ্য্যই সম্পাদন করিতে হইত। সম্রাটু তাহাদের মধ্যে কাহাকে ‘গুলাল (গোলাপ ), কাহাকে ‘নারগিস’, কাহাকেও বা ‘চামেলি’ প্রভৃতি নামে অভিহিত করিতেন । পূৰ্ব্বেই বলা হইয়াছে, রংমহলে নৰ্ত্তকীসম্প্রদায়ের ভিন্ন ভিন্ন এক একটি দল ছিল । এক এক দলে প্রায় ১ ও ১২ জন এবং প্রত্যেক দল এক একটি অঙ্গনার অধীনে থাকিত। সম্রাটের অভিরুচি অনুসারে বেগম ও শাজাদীদের মধ্যে, যাহাকে যতজন ইচ্ছা, গায়িকা ও নর্তকী বিভাগ করিয়া দেওয়া হইত। মেনুষী যদিও এ কথা স্পষ্টত কোথাও উল্লেখ করেন নাই, তথাপি তাহার বর্ণনার ভাবে বোধু হয় যে, এই গায়িক-সম্প্রদায়ও একপ্রকার ক্রীতদাগীদূের তালিকার অস্তভুক্ত। তাহাদিগকে চিরজীবন প্রায় রংমহলের ভিতরেই থাকিতে হইত। নিজেদের কাজেও তাহদের এমন বেণী-কিছু স্বাধীনতা ছিল না। বাণিয়ের পূর্ববর্ণিত গল্পেও এ কথা একরূপ প্রমাণিত হইয়াছে। কেন না, উল্লিখিত কাঞ্চনীর কোনপ্রকার স্বাধীনতা যদি থাকিত, তবে কেবল সম্রাটের ইচ্ছায় ও নিজের ইচ্ছার সম্পূর্ণ বিরুদ্ধে তাহাকে বর্ণডের অঙ্কশান্ত্রিনী হইতে হইত না । সে বাহা হউক, • এই সমস্ত মহিলা ব্যতীত আর এক দল রমণী ছিল, তাহারা সম্রাটের শরীররক্ষায় নিযুক্ত থাকিত। মেকুৰী বলেন, ইহা বড় অল্প আশ্চর্য্যের বিষয় নহে যে, একশত তাতারী বক্রমুখ অসি,ছোরা ও চাপচৰ্ম্মে সজ্জিত হইয়া মোগল-অন্তঃপুরে বাদশাহের শরীররক্ষা করিত। এই সকল সশস্ত্র সুন্দরীকুলে পরিবৃত মোগলসম্রাটের বিবরণ পাঠ করিলে, কালিদাসবর্ণিত বাণাসনহস্ত পুষ্পমালাধারিণী দুষ্মন্তপাশ্বচারিণী যবনীদের কথা পাঠকের• মনে সহজেই উদিত হইবে। এই তাতারীদের মধ্যে যে সৰ্ব্বপ্রধান, বেতনে ও পদমর্য্যাদায় সে সমরসচিবের সমকক্ষ ছিল। মেনুষীর মতে যেখানে একত্র এতগুলি সপত্নীর বাস, সেখানে সে কথা স্মরণ করিয়া বাদশাহের এ সতর্কতা খুব সঙ্গত বলিয়াই বোধ হয়। রংমহলে খোজার সংখ্যা ক্রীতদাসীদের সংখ্যা অপেক্ষাও অধিক ছিল। খোজা দের কেহ কেহ দ্বাররক্ষকের ক্লেশকর ও বিপজ্জনক কাৰ্য্যে নিযুক্ত থাকিত। বিপজ্জনক এইজন্য যে, মোগলসম্রাটের হারেমের দ্বারপথ খুব কড়াকড়ি করিয়া রক্ষা করায় যে বিপদ, অসতর্ক ও শিথিল ভাবে দ্বাররক্ষায় বিপদ ততোধিক । কারণ, একদিকে যেমন কড়াকড়ি করিয়া সাবধানে পাহারা দিলে বেগম ও শাজাদীদের বিষনয়নে পড়িবার সম্ভাবনা, তেমনি আবার আর একদিকে অসাবধানতায় সম্রাটের কুলিশকঠিন বিচার —সে বিচারে প্রাণদণ্ড হওয়াও বিচিত্র নহে। এই সকল খোজা ছাড়া অন্তান্ত খোজার হারেমের তত্ত্বাবধানে নিযুক্ত