পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৬৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

جون সহজ উচ্ছতি প্রসেররাজ্যে,এই গাছপালা মৃগপক্লীর আত্মবিশ্বত কলরবের মধ্যে -কে । তাছাকে আবার টানিয়া তুলিতে পারিবে? সন্ধান লইতে আসিয়া দেখিল, সে যতীনের . পরিত্যক্ত ঘরে তাহীর খাটের খুরা ধরিয়া । মাটিতে পড়িয়া আছে-শূন্ত শয্যাটাকে যেন । পায়ে ধরিয়া সাধিতেছে। তাহার বুকের ভিতরে যে একটি স্বধার পাত্র লুকান ছিয়, সেইটে যেন শূন্ততার চরণে বৃথা আশ্বাসে উপুড় করিয়া ঢালিয়া দিতেছে—ভূমিতলে পুঞ্জীভূত সেই জ্বলিতকেশী লুষ্ঠিতবসন নারী যেন নীরব । একাগ্রতার ভাষায় বলিতেছে,—‘লও, লও, আমাকে লও ! ওগো, আমাকে লও!” পটল বিস্মিত হইয়া কহিল—“ও কি হইতেছে কুড়ানি ।” কুড়ানি উঠিল না,—সে যেমন পড়িয়া ছিল, তেমনি পড়িয়া রহিল। পটল কাছে আসিয়া তাহাকে স্পর্শ করিতেই সে উচ্ছসিত হইয় ফুলিয়া-ফুলিয়া কাদিতে লাগিল । পটল তখন চকিত হইয়া বলিয়া উঠিল, “ও পোড়ারমুখি, সৰ্ব্বনাশ করিয়াছিল!. মরিয়াছিস * , -- • * হরকুমারকে পটল কুড়ানির অবস্থা জানা, ইয়া কহিল—“একি বিপদ ঘটিল! তুমি কি করিতেছিলে, তুমি আমাকে কেন বারণ করিলে না ?” - - - হরকুমার কহিল—“তোমাকে বারণ করা যে আমার কোনকালে অভ্যাস নাই। বারণ কয়িলেই কি ফল পাওয়া যাইত ?” . পটল। তুমি কেমন স্বামী ? আমি যদি ভুল করি, শঙ্কুম আমাকে জোর করিয়া ৰীমাইড়ে পার না আমাকে তুমি এ খেলা এই বলিয়া সে ছটিয়া গিয়া ভূপতিত বালিকার গলা জড়াইয়া ধরিয়া কহিল—“লক্ষ্মি বোন আমার, তোর কি বলিবার আছে, আমাকে খুলিয়া বল! . • * . হায়, কুড়ানির এমন কি ভাষা আছে যে, আপনার হৃদয়ের অব্যক্ত রহস্ত সে কথা দিয়া বলিতে পারে । সে একটি অনিৰ্ব্বচনীয় বেদনার উপর তাহার সমস্ত বুক দিয়া চাপিয়া পড়িয়া আছে—সে বেদনাটা কি, জগতে এমন আর কাহারো হয় কি না, তাহাকে লোকে কি বলিয়া থাকে,কুড়ানি তাহার কিছুই জানে না। সে কেবল কান্না দিয়া বলিতে পারে ; মনের কথা জানাইবার তাহার,আর কোন উপায় নাই । 鸚 - - পটল কহিল, "কুড়ানি, তোর দিদি বড় দুষ্ট-কিন্তু তার কথা যে তুই এমন করিয়া বিশ্বাস করিবিতা সে কখনো মনেও করেনি। তার কথা কেহ কখনো বিশ্বাস করে ন—তুই এমন ভুল কেন করিলি ? কুড়ানি, একবার মুখ তুলিয়া তোর দিদির মুখের দিকে চা’— তা’কে মাপ কর ” - - - কিন্তু কুড়ানির মন তখন বিমুখ হইয়া গিয়াছিল—সে কোনমতেই পটলের মুখের দিকে চাহিতে পারিল না—সে আরো জোর করিয়া-হাতের মধ্যে মাথা গুজিয়া রছিল। সে ভাল করিয়া সমস্ত কথা না বুঝিয়াও একপ্রকার মূঢ়ভাবে পটলের প্রতি রাগু করিয়াছিল। পটল তখন ধীরে ধীরে বাছপাশ খুলিয়া লইয়া উঠিয়া গেল—এবং জানালার ধারে পাথরের মূৰ্ত্তির মত স্কন্ধভাবে দাড়াইয়া