পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় প্রথম খণ্ড.djvu/৪১১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8ο3 दश्रम-नि । { পৌষ। আশার লজ্জাবোধ হইল, গাল দুটি লাল হইয়া উঠিল। - অন্নপূর্ণ খুসি হইয়া মনে মনে হাসিলেন—কহিলেন, “তাই বটে, সেদিন মহীন যখন আসিয়াছিল, তোর বালির কথা একবার মুখেও আনে নাই!” আশা দুঃখিত হইয়া কহিল, “ঐ তার দোষ ! যাকে ভালবাসেন না, সে যেন একেবারে নাই ! তাকে যেন একদিনে দেখেন নাই—জানেন নাই, এমনি তার ভাব।” অন্নপূর্ণ শান্ত স্নিগ্ধ হাস্যে কহিলেন, “আবার যাকে ভালবাসেন, মহীন যেন জন্মজন্মান্তর কেবল তাকেই দেখেন এবং জানেন, এ ভাবও তার আছে। কি বলিস্ नि !” আশা তাহার কোন উত্তর না করিয়া চোখ নীচু করিয়া হাসিল। অন্নপূর্ণ জিজ্ঞাসা করিলেন, "চুনি, বিহারীর কি খবর বল দেখি ? সে কি বিবাহ করিবে না ?” মুহূর্তের মধ্যেই আশার মুখ গম্ভীর হইয়া গেল,—সে কি উত্তর দিবে, ভাবিয়া পাইল না । ওমাশার নিরুত্তর ভাবে অত্যন্ত ভয় পাইয় অন্নপূর্ণ বলির উঠিলেন, “সত্য বল চুনি,বিহারীর অমুখ-বিমুখ কিছু হয়নি ত?” বিহারী এই চিরপুত্রহীন রমণীর স্নেহসিংহাসনে পুত্রেয় মানস-আদৰ্শরূপে বিরাজ করিত। বিহারীকে তিনি সংসারে প্রতি- ষ্ঠিত দেখিয়া আসিতে পারেন নাই, এ ফুঃখ পবাসে আসিয়া প্রতিদিন তাহার মনে জাগিত। র্তাহার ক্ষুদ্র সংসারের আর সমস্তই একপ্রকার সম্পূর্ণ হইয়াছে, কেবল বিহারীর সেই গৃহহীন অবস্থা স্মরণ করিয়াই তাহার পরিপূর্ণ বৈরাগ্যচচ্চার ব্যাঘাত ঘটে ! আশা কহিল, “মাসী, বিহারি-ঠাকুরপোর কথা আমাকে জিজ্ঞাসা করিয়ো না !” অন্নপূর্ণ আশ্চৰ্য্য হইয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “কেন বল দেখি !” আশা কহিল, “সে আমি বলিতে পারিব না ।”—বলিয়া ঘর হইতে উঠিয়া গেল । অন্নপূর্ণ চুপ করিয়া বসিয়া ভাবিতে লাগিলেন —“আমন সোনার ছেলে বেহারী, এরি মধ্যে তাছার কি এতই বদল হইয়াছে যে, চুনি আজ তাহার নাম শুনিয়া উঠিয়া যায় ! অদৃষ্টেরই খেলা ! কেন তাহার সহিত চুনীর বিবাহের কথা হইল, কেনই বা মহেন্দ্র তাহার হাতের কাছ হইতে চুনীকে কাড়িয়া লইল ।” অনেকদিন পরে আজ আবার অন্নপূর্ণার চোখ দিয়া জল পড়িল ;—মনে মনে তিনি কহিলেন, “আহ, আমার বেহারী যদি এমন কিছু করিয়া থাকে, যাহা আমার বেহারীর যোগ্য নহে, তবে সে তাহ অনেক দুঃখ পাইয়াই করিয়াছে, সহজে করে নাই ।” বিহারীর সেই দুঃখের পরিমাণ কল্পনা করিয়া অন্নপূর্ণার বক্ষ ব্যথিত হইতে লাগিল। সন্ধ্যার সময় যখন অন্নপূর্ণ আফ্রিকে বসিয়াছেন, তখন একটা গাড়ি আসিয়া দরজায় থামিল, এবং সহিস বাড়ীর লোককে ভাকিয়া রুদ্ধদ্বারে ঘা মায়িতে লাগিল। অন্নপূর্ণ পূজাগৃহ হইতে বলিয়া উঠিলেন, “ঐয, আমি একেবারেই ভুলিয়া গিয়াছিলাম, আজ কুঞ্জর শাগুড়ির এবং তার দুই বোন