পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় প্রথম খণ্ড.djvu/৫১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দশম-সংখ্যা । ) রক্তচন্দনচর্চিত ললাট তল কুঞ্চিত করিয়৷ যে ভাবে তখন তিনি সুদীর্ঘ এবং সুপক গুশক্ষাগ্রভাগ দক্ষিণকরে লাঞ্ছিত করিতেছিলেন, তাহাতে সেই পুরাকালের ভীমমূৰ্ত্তি কাপালিকের সাদৃগু কতকটা অনুভূত হইতেছিল। দেখিয়া সরলা যোগমায়া অপরাধিনীর মত ভয়ে শুকাইয়। উঠিল । সৰ্ব্বানন্দ সসন্ত্রমে নৌকা হইতে অবতরণ করিয়া পিতৃপদ বন্দনা করিল। খোকাবাবু হাটতে শিথিয়াছেন এবং কথাবার্তা ও বিস্তর বলেন, কিন্তু তার পনর-আন তিন-পাঠ হিন্দা। বামাদাসীর কোলে চড়িয়া পিতামহের সমীপবৰ্ত্তী হইয়াই বলিলেন—“সেলাম মহারাজ !" তিনি ক্রোড়ে লইবার জন্ত বাহু প্রসারণ করিলে, তাহার দীর্ঘ গুম্ফ দুষ্ট কচি-কচি হাতে অধিকৃত করিয়া সুধাইল—“তুম্‌ কোন হায় ছে৷ ” চব্বিশঘণ্টার ভিতর এই ছাতুখোর শিশু ঠাকুরদাদার সঙ্গে দিবা সধ্যসংস্থাপন করিল। পিতামহদ স্তু অভয়ানন্দ-নাম অবাবহারে পোষাকী কাপড়ের মত এতদিন তোলা ছিল, অতএব প্রথম-প্রথম তাহাতে অভিহিত হইলে খোক। রাগিয়া বলিত—“হাম্কে। গারি দে তা হয়ে ?" মার কাছে ছুটয়া গিয়া দুইচারবার নালিশ ও সেজন্ত করিয়াছিল । কালিকানন্দ পোত্রের সর্বকায্যে অপুৰ্ব্ব সৌন্দর্য্য দশন করিতে লাগিলেন, মুগ্ধের ষ্ঠায় অহোরাএ তাহার অমুসরণ করেন। পুঞ্জ-আহ্লিকের সময় অভয়ার চরণকমল ভাবিতে ভাবিতে অভয়ানন্দকে তায় মনে পড়িয়া যায়। তার পর পূজাশেষে তাছায় কালিকানন্দ । 8৯৫ বিমল ললাটতলে ফোটা কাটিয়া দিয়া তাহাকে বক্ষে চাপিয়া ধরেন । এবং গদগদ - কণ্ঠে ডাকেন—“দুর্গে দুর্গে, একি মায়tয় ফেলিলে ।” যোগমায়া কৈশোরে শ্বশুরকে দেখিয়াছিল, বৈষ্ণবদ্বেষী গোড়াশাক্ত বলিয়। পিতৃগৃঙ্গে তাহার যে নাম ছিল, তাহাতেই সে বরাবর বড় ভয় পাইত । কিন্তু ছেলে অভয়ানন্দ তাহার সে ভয় ভাঙাইয়৷ দিল । ঠাকুরদাদার ক্রোড়ে অন্ত্যমনস্কভাবে খেলিতে থেলিতে যখন-তখন বলিয়া উঠিত “ম! যাব৷” এই রূপে দিনে দশ-বার-বার সে তাহাকে মা তার সান্নিধ্যে লইয়া যাইত । শেষে কালিকানন্দ ঝগড়া করিতেন—“তোর ম। না আমার মা !” তখন সেই বুদ্ধ ভাইতে ও শিশু ভাইতে মা লইয়া ঝুটোপুট বাধিয়। যাহত । বাস্তবিক কালিকানন্দ দেখিলেন গৃহিণীর কথা সত্য, লক্ষ্মী বউট তার । গৃহকৰ্ম্মে তার বিরাম-বিশ্রাম নাই, অথচ মুখে কথাটি নাই ৷ শ্বশুর-শাশুড়ীর সেবায় তাহার যেমন আনন্দ, তেমনই তন্ময়ত, বিরূপ প্রতি েরশিনারা পর্যন্ত তাহার আচ রণের সমালোচনায় মুর বদলাইতে বাধ্য হইয়াছে । স্নেহে শ্বশুর বলিলেন—“ব উমা, আমার ত মেয়ে নাই, তোমায় পেয়ে সে অভাব আমার দূর হয়েচে । আমার সঙ্গে কথা কহিয়ে মা, লজ্জা করিলে চলিবে না ।” ছেলে পিতামহের অনুকরণ করিয়া আধ-অাধ স্বরে বলিত—“কথা কও মা, কথা কও।” শাগুড়া শুনিয়া শুনিয়া হাসিভেন, আর বলিতেন—“সত্যিই ত বউমা, এবং