প্রথম সংখ্যা । } নাট্যকলু ও রসতত্ত্ব। (? আনন্দকে খুজিয়া বেড়ায়। এখানে আনন্দই লক্ষ্য ধরিয়া চলিতে হইবে কার্য, সঙ্গীত উপায়, আনন্দ উদেহু। আনন্দমাত্রেই রদাত্মক। রস হইতেই আন উৎপন্ন হয়। রসো বৈ সঃ-সেই পরমাত্ম রসস্বরূপ। রসং হেবায়ং লব্ধ নন্দী ভবতি -এই রসস্বরূপ পরমাত্মার রস প্রাপ্ত হইয়াই জীব আনন্দী হয়। রসই এইজন্স আনন্দের স্বরূপ। ললিতকলা রসের উপর প্রতিষ্ঠিত । কাব্য, সঙ্গীত, চিত্র, ভাস্করবিদ্যা, নাট্যকলা, এই সকলই রসশস্ত্রান্তর্গত। এই সকলেই আমরা রসের ক্ষু রসের মানদের জন্ত আনন্দের অন্বেষণ করিয়া থাকি । জীবনের সৰ্ব্ববিধ স্বাভাবিক চেষ্টাতেই আনন্দ ফুরিত হয় সত্য ; কিন্তু আচারনিদ্রাদি শারীরচেষ্টাই হউক, অধ্যয়ন-অধ্যাপনাদি মানসচেষ্টাই হউক, কিংবা সন্ধাবন্দনাদি ধৰ্ম্মকৰ্ম্মই হউক,—এই সমুদায়ের আনন্দ লক্ষ্য নহে, উপলক্ষ্যও নহে, অবাস্তর ফলমাত্র । কিন্তু ললিতকলাকুশীলনে আমরা আনন্দের জন্ত আনন্দের অন্বেষণ করি। এখানে আনন্দ আমাদের লক্ষ্য, আর যাহা-কিছু তাহা উপলক্ষ্যও নয়, ফলমাত্র । o ললিতকলামুশীলনে জীবন উন্নত হয়, চরিত্র স্বল্পবিস্তর বিশোধিত হয়। সকল সাধনায় যেমন, তেমনি এ ক্ষেত্রেও শমদমাদি-অভ্যাস ব্যতিরেকে সিদ্ধিলাভের সম্ভাবনা নাই বলিয়া, স্বল্পবিস্তর এ সকলও অভ্যাস করিতে হয় ; নতুবা কাব্য বা সঙ্গীত বা চিত্র বা নাটাভিনয়ে সফলকাম হওয়া যায় না। কিন্তু উন্নতি বা কেবল আনন্দই তাহার একমাত্র লক্ষ্য। .. অতএব সৰ্ব্বক্লিধললিতকলামুশীলনে এই নাট্যাভিনয়, চিত্রবিদ্যা, ভাস্কৰ্য, এ সকলই আপনাতে আপনি বিভোর হইয়া থাকিবে । ফলাফলনিরপেক্ষ হইয়া ও অপর সর্বপ্রকারের চিন্তা ও বিচার বর্জন করিয়া, শুদ্ধ.আপনার অন্তরস্থ রসের আদর্শকে, ফুটাইয়া তুলিতে চেষ্টা করিবে। ইহাতেই এ সকলের চরম চরিতার্থত লাভ হইবে। কিন্তু জনসমাজের বিবিধ ভাব ও আদর্শের সংঘর্ষে পড়ির কাব্যসূীতনাট্যাদিওঁ কখনকখন আপনার মুখ্য লক্ষ্য যে আনন্দ, তাহাকে উপেক্ষা করিয়া, অবাস্তর-লক্ষ্য-সাধনে নিযুক্ত হয়। কবি রসাম্বেষণ ছাড়িয়া, লোকচরিত্রগঠনে ব্যস্ত হইয়া, উপদেশাবলী রচনা করেন। সঙ্গীতাচাৰ্য্য শব্দসন্ধানে যে স্বৰ্গীয় আনন্দুের ফুরণ হয়, তাহাকে উপেক্ষা করিয়} লোকের মনে বিবিধ সময়োপযোগী ভাব ও উদ্দীপনা জাগাইতে চেষ্টা করেন। সেইরূপ অভিনেতা বা অভিনেত্রীরাও নাট্যকলার যে মুঞ্চ উদ্দেশু,—শুদ্ধ আনন্দবিধান করা, তাহাকে স্বল্পবিস্তর অগ্রাহ করিয়া, কখন-কখন উপদেশমিশ্ৰ-আমোদদানের জন্ত ব্যগ্র হইয়৷ উঠেন। কিন্তু এবংবিধ সকল ক্ষেত্রেই ললিতকলার স্বল্পবিস্তর ব্যভিচার হইয়া থাকে। বাংলা নাট্যকলা এবং বঙ্গরঙ্গালয় আজন্মকালই এইরূপ ব্যভিচারী হইয়া চলিয়াছে। এইজন্য এ সকলের দ্বারা বিশুদ্ধ রসতত্বের প্রতিষ্ঠা যতটা না হইয়ছে, তদপেক্ষ অধিকপরিমাণে সমাজের সাধারণ ভাব ও আদর্শাদির পরিপুষ্টি সাধিত হইয়াছৈ! আমাদের বর্তমান স্বদেশী আলোন ও তন্নিহিত স্বদেশহিতৈষার অভিনব ও শিক্ষু ,
পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/১০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।