পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/১১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

[ ৬ষ্ঠ বর্ষ, বৈশাখ। অদৈর্শ—এতদুভয়ই বহুলপরিমাণে বাংল নাট্যকলা ও বঙ্গীয় রঙ্গালয়সকলের দীর্ঘকালব্যাপী চেষ্টার ফল। আরো অনেকে এক্ষেত্রে কাৰ্য্য করিয়াছেন, সন্দেহ নাই ; কিন্তু বঙ্গরঙ্গালয়সমূহ যেরূপভাবে, যতটা বিস্তৃতরূপে ও যে-পরিমাণ সফলতাসহকারে এ কোর্য্য করিয়াছে, আর কেহ সেরূপ করিয়াছে কি না, সন্দেহ । সৰ্ব্বপ্রথমে—সে ত্রিশবৎসর পূৰ্ব্বেকার কথা —বঙ্গরঙ্গমঞ্চই নীলদর্পণ, সুরেন্দ্রবিনোদিনী, শরৎসরোজিনী, পলাশীর যুদ্ধ, ভারতমাতা প্রভৃতি নাটক ও রূপকের অভিনয় প্রদর্শন করিয়া শিক্ষিতবাঙালীর প্রাণে এক উন্মাদিনী স্বদেশহিতৈষী জাগাইয়া দেয় । সেই সময়ে একদিকে যেমন সুরেন্দ্রনাথের অগ্নিময়ী বাগ্মিতা, সেইরূপ বঙ্গরঙ্গভূমি ও জাতীয় নাট্যমন্দিরের প্রাণুস্পর্শী নাট্যাভিনয়, বঙ্গে স্বদেশপ্রেমের এক অপূৰ্ব্ব বন্ত আনিয়াছিল। সমাজসংস্কারেও তখন , বঙ্গরঙ্গালয়সকল স্বল্প সাহায্য করে । নাই। কুলীনকুলসৰ্ব্বস্ব, 'বিধবাবিবাহ প্রভৃতি নাটক রঙ্গমঞ্চে প্রকটিত করিয়া সময়োপযোগী সংস্কারকার্য্যেও জনগণকে ইহারা প্রচুরপরিমাণে প্রোৎসাহিত করিয়াছিল। অতঃপর মধ্যযুগে সম জসংস্কারের স্রোত মন্দীভূত হইলে, স্বজাতির শাস্ত্রসাহিত্য ও সভ্যতাসাধনার প্রতি লোকের প্রাণে এক নুতন অমুরাগের যখন সঞ্চার হইতে আরম্ভ করিল, তখন বঙ্গরঙ্গালয়সকল এই অভিনব ভাৰকে অবলম্বন করিয়া পৌরাণিক আদর্শের ও পৌণিক ভাবের পুনঃপ্রতিষ্ঠাকার্য্যে ੇ হয় । श्रिङ, 'পঞ্চদশ বৎসরের পৌরাণিক নাট্যাভিনয়ে আমাদের জাতীয়জীবন কতটা পরিমাণে যে বলিষ্ঠ ও দ্রঢ়িষ্ঠ হইয়া উঠিয়াছে, তাহ সম্যকৃরূপে পরিমাণ করা অসম্ভব। কিন্তু এই সকল চেষ্টা ও আন্দোলন আলোচনা ব্যতিরেকে বর্তমান স্বদেশী আন্দোলন ও স্বদেশী আদর্শ যে কখনে৷ এরূপভাবে আমাদের চিত্তকে অধিকার ও অভিভূত করিতে পারিত না, ইহা স্থিরনিশ্চিত । সৰ্ব্বশেষে বৎসরাধিককাল ধরিয়া, প্রতাপাদিত্য প্রভৃতি নুতন নাটক রচনা ও অভিনয় করিয়া বাঙালীর জাতীয়জীবনে বঙ্গরঙ্গালয়সকল যে অভিনব শক্তির সঞ্চার করিয়াছে, তাহারই ফলস্বরূপে আমরা এই বর্তমান স্বদেশী আন্দোer; জাগ্রত করিতে পারিয়াছি, এ বিষয়ে আর কোনো সন্দেহ নাই । এই সকল কারণে, বাংলা নাট্যকলা ও বঙ্গরঙ্গালয় আমাদের জাতীয়জীবনে এমন একটা স্থান অধিকার করিয়া নসিয়াছে, যাহাতে আর তাহাকে উপেক্ষা করিয়া চলা সঙ্গত হইবে না। ভাল হউক, মন্দ হউক, জনসাধায়ণের মতিগতির উপরে ইহাদের আধিপত্য প্রভূত। বঙ্গরঙ্গালয়ের এই অপরিসীম শক্তিকে সুনিয়ন্ত্রিত ও মুসংস্কৃত করিতে না পারিলে, তাহদের আপনার সফলতা ও আমাদের ভবিষ্য উন্নতি, উভয়েরই ব্যাঘাত উৎপন্ন হইতে পারে। প্রত্যুত, এই সকলকে স্বনিয়তি করিতে • পরিলে, তদ্বারা এমন শক্তিসঞ্চার ধর সম্ভব, বাহ না কাবাে, না বাগিতা, না অন্য কোনো-উপায়ে সম্ভব इट्रेद | ঐবিপিনচন্দ্র-পাল ।