তৃতীয় সংখ্যা। ] cबश्वम् या छांछि । دهد মুসলমানও ছিলেন ; এবং ইহারা আপন- জাতি যেভাবে গঠিত হইয়াছে, অপর জাতি আপন স্বার্থরক্ষার জন্ত কখন-কখন দিল্লীর মুসলমান পাদিশার বিরুদ্ধে পরম্পরের সঙ্গে সম্মিলিতও হইতেন। এ তো গেল নরপতিসমাজের কথা ; সাধারণজনমণ্ডলীমধ্যেও যে স্বার্থের সমতা হইতে ধৰ্ম্মবন্ধন অতিক্রান্ত হইয়া এক দৃঢ়তর ঐক্যবন্ধন প্রতিষ্ঠিত হইতে পারে,—ইংরেজাধিকারে সিপাহীবিপ্লবের ইতিহাসে তুহাও সুন্দররাপে প্রমাণিত হইয়াছে। ব্রাহ্মণ এবং শিখসেনা পাঠান ও রাজপুতের পাশাপাশি দাড়াইয়া, সকলের সাধারণ শক্ত ব্রিটিশের সঙ্গে যুদ্ধ করিয়া,আপনআপন ধৰ্ম্ম ও স্বার্থকে রক্ষা করিবার চেষ্ট করিয়াছে। t বস্তুত ধৰ্ম্মের বন্ধন নহে, স্বার্থের বন্ধনই জগতে সৰ্ব্বাপেক্ষ দৃঢ়বন্ধন। ধৰ্ম্মও এই স্বার্থকে চরিতার্থ করিবার আশ্বাস দিয়াই জনমণ্ডলীর চিত্ত হরণ করিয়া থাকে। এই স্বার্থের বন্ধন যেখানে আছে, সেখানে মতামতের প্রভেদ বা সামাজিক আচারব্যবহারের বিভিন্নতানিবন্ধন নেশন্গঠনের কোনো সাংঘাতিক অন্তরীয় উপস্থিত হইতে পারে না। যাহার বলেন যে, ধৰ্ম্মের বিরোধ ও পামাজিক রীতিনীতির বিভিন্নতা আছে বলিয়া ভারতবর্ষের হিন্দুমুসলমানকে কখনো নেশনরূপে গড়িয়া তোলাঘাইরে না,তাহারা যে বন্ধনরজুতে নেশন্ গড়িয় উঠে, তাহার মূলপ্রকৃতি কি, ইহা অনুধাবন করিয়া দেখিয়াছেন বলিয়া মনে হয় না। আর ভারতবর্ষে যে নেশন গড়ি উঠতেছে, তাহার অভূতপূৰ্ব্ব চরিত্রও পৰ্য্যালোচনা করেন নাই। তাহার এ সামাগু কথাটা ভুলিয়া যান যে, এক জাতি বা দশটা সকলও যে সেইভাবেই গড়িয়া উঠিবে, ইহারু কোনো স্থিরতা নাই। মানবচরিত্র এক, এবং এই সাধারণ মানবচরিত্রের ও মানবপ্রকৃতির ঐক্যনিবন্ধন, মানবীয় ইতিহাসের মধ্যেও একটা সামান্ত ভাব ও আদর্শ দৃষ্ট হয়। কিন্তু এই ভাব ও আদর্শের ভিতরে বিভিন্ন মানবসমাজের গঠন, তাহদের বিবর্তনের ইতিহাস, তাহাড়ের গতি ও নিয়তির মধ্যে কত বিশাল বিভেদ রহিয়াছে। যুরোপ যেভাবে নেশন গড়িয়াছে, আশিয়াও যে সেইভাবেই নেশন গড়িবে, এমন কোনো কথা নাই। যুরোপে যে বিশালতর,উন্নততর, উদারতর ও মহত্তর রাষ্ট্রীয়-আদর্শ ফেডারেশন, বা যুক্তরাজ্যের আকারে ঈষৎ ফুটিয়া উঠিতেছে, কে জানে, আশিয়ায় এবং বিশেষভাবে আমাদের এই ভারতবর্ষেই সেই আদর্শ সত্যভাবে প্রতিষ্ঠিত হইবে না। যুরোপ নেশন গড়িয়া, তাহার উপরে, বিবিধ নেশনের সংযোগে বিশ্বনেশনের প্রতিষ্ঠার আশায় চলিয়াছে। ভারতে বহুদিন সমাজ ও সম্প্রদায় গঠিত ও প্রতিষ্ঠিত, হইয়াছে ; কে জানে যে, আমরা য়ুরোপে নেশনগত বৈরিত নিরস্ত হইবার পূৰ্ব্বেই, এই সকল সমাজের ও সম্প্রদায়ের স্বাধীনসংযোগে, ভারতে বিশ্বনেশনের প্রতিষ্ঠা করিয়া বিশ্বপতির কল্যাণবন্ধনে প্রত্যক্ষভাবে জগৎকে আবদ্ধ করিব না? যুরোপের সঙ্কীর্ণ অভিজ্ঞতা ও সামান্ত জ্ঞানের দ্বারা বিচার করিলে, হয় ত ভারতে নেশনগঠনের উখযোগী সমুদা উপকরণ সংগৃহীত হইয়াছে কি না, এ বিষয়ে সন্দেহ উপস্থিত হইবে। কিন্তু যুরোপীক্ষ অভিজ্ঞতাই একমাত্র মানবীয় অভিজ্ঞতা নহে।
পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/১১৬
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।