তৃতীয় সংখ্যা । ] ब्रiछ७०iदियो । 3 BG বালবিধবা মহারাণীমাতা, পরজন্মে আর বৈধব্য ঘটিবে না, হিন্দুমহিলাদের এই বিশ্বাসমত প্রতিবৎসর সমারোহের সহিত জগদ্ধাত্রীপুজা করিতেন। সেজন্ত জগদ্ধাত্রীপূজার বাড়ী নাম দিয়া রাজবাটীর অনতিদূরে তিনি একখানি মাটার বাড়ী প্রস্তুত করাইয়াছিলেন এবং পুজা উপলক্ষ্যে কয়দিন আত্মীয় ও আশ্রিতগণ সহ সেখানে বাস করিতেন । মনে পড়িতেছে, সেই সময়ে সে গৃহে শ্বেতকৌশিকবস্ত্রপরিহিতা তাহার গৌরাঙ্গী. সুদীর্ঘ মাতৃমূৰ্ত্তি দেখিতে দেখিতে কতবার আমাদের মনে হইয়াছে, এই ত জীবন্ত জগদ্ধাত্রীমূৰ্ত্তি ! আবার পৃথকৃ পূজা কেন ? এই সকল পূজা এবং ব্ৰতাদি উপলক্ষে তিনি যে কঠোর সংযম অবলম্বন কৱিতেন, উত্তরকালে সম্ভবত তাঁহাই তাহার স্বাস্থ্যভঙ্গের অন্ততম কারণ। ৩৪টা নির্জলা উপবাস বৎসরের মধ্যে কতবার তিনি করিতেন এবং তাহাতে এরূপ অভ্যস্ত ছিলেন যে, ভাবিলে বিন্মিত হইতে হয়। একদিন বর্ষার শেষদিকে আমরা সকলে তাহার কাছে বসিয়া আছি, এমন সময়ে খবর আসিল যে, পুরোহিতষ্ঠাকুর জাসিয়াছেন। মহারাণীমাতা খুব মৃদুস্বরে কথা কহিতে লাগিলেন এবং দাসদাসীদের দ্বারা পুরোহিতকে জানাইলেন, তাহার ইচ্ছ, রাধাষ্টমীর ব্রত গ্রহণ করেন। পুরোহিত ঠাকুর মাতার পীড়া ও শারীরিক দৌৰ্ব্বল্যের উল্লেখ করিয়া বারণ করিলেন, কিন্তু মহারাণী * বলাইলেন, এক-আধটা উপবাস উপবাসই নহে, অতএব সে ব্ৰত তিনি গ্রহণ করিবেন। সহাস্তমুখে আমাদের সমক্ষে বারংবার হাত উপবিষ্ট পুরোহিতষ্ঠাকুরকে সে কথা জানাইলে তিনি বলিলেন, নিজের শরীরসম্বন্ধে এরূপ ছেলেমানুষী করা মার কর্তব্য হয় না। বাহ হউক, পুরোহিত আর আপত্তি করিলেন না । সচরাচর সোনারূপা নিজে স্পর্শ করিতেন না, কেবল গুরুকুলের কেহ আসিলে প্রণামী দিবার সময় টাকা হাতে করিতে দেখিতাম । তখন গলবস্ত্রে ভূমিষ্ঠ হইয় প্রণাম করিতেন । একদিন শ্ৰীবৃন্দাবনধাম হইতে র্তাহার গুরুপত্নী কিছু টাকা চাহিয়া পাঠাইয়াছিলেন। টাকা সেইদিনই পাঠাইবার ব্যবস্থা কল্প হইল । সেদিন নানা অসুবিধা, পরদিন পাঠাইলেই ভাল হয়, কিন্তু মা তাহা গুনিলেন না। বঙ্গিলেন, “গুরুর অজ্ঞ, আজই পাঠাইতে হুইবে ।” একদিন তাহার আশ্রিত আমাদের একআত্মীয় মহারাণীমাতাকে জিজ্ঞাসা করিতেছিলেন, তার গুরুদেব আসিয়াছেন, মন্ত্র দিতে চাহিতেছেন, মন্ত্র লওয়া কর্তব্য কি না ? মা বলিলেন, “গুরু নিজে আদেশ করিলে কালাকাল নাই ।” শ্ৰীশ্ৰীশচন্দ্র মজুমদার ।
পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/১৪০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।