তৃতীয় সংখ্যা। ] জিজ্ঞাসায় নিবেদন । శ్రీt অন্ত নাই। পুরোহিততন্ত্র, রাজতন্ত্র, প্রজাতন্ত্র, সাধারণতন্ত্র, কত দল, কত মত তাহার মধ্যে বিদ্যমান,—এই বিচিত্র শক্তিজাল লইয়াইউরোপ নেশন। এইজন্য ইউরোপীয় পলিটিক্সজিনিষটা এমন দুরূহ, তাঁহাকে ব্যাপক করিয়া দেখা এমন শক্ত। অথচ এ সকল বিরোধ সত্ত্বেও ইউরোপের একটা ঐক্য আছে, - বুঝা যায় যে,সকলের চেষ্ট এক জায়গায় এক । সে চেষ্টাকে এক কথায় বলা যায়, ব্যক্তিকে সম্পূর্ণরূপে স্বাধীন করা, অথচ বিচিত্রের ফলদান করা । সেই চেষ্টার বশবৰ্ত্তী বলিয়াই ইউরোপীয় সভ্যতা এমন প্রাণবান ও সচেতন পদার্থ। ইউরোপীয় শাসনচক্রে যে-শাস্তি ভঙ্গ হয় নাই, ইউরোপীয় এই উন্মাদকর বৈচিত্র্যমুলক সভ্যতায় সেই শাস্তি ভঙ্গ হইয়াছে। প্রাচীন সভ্যতার সরল একমুখিত, যাহা জটিলতামাত্রকে বর্জন করিয়া সৰ্ব্বত্ত্ব শাস্তি ও কল্যাণকে অবারিত করিয়া দিবার জন্ত ব্যস্ত । ছিল, সেই সরলতায় আঘাত পড়িয়াছে। এক্ষণে এই বিচিত্রকে না স্বীকার করিয়া উপায় নাই, ইহাকে ছাড়িয়া ঐক্যস্বীকার ক্লোনমতেই সম্ভবে না, ইহার মধ্যে ঐক্যকে প্রতিষ্ঠা দিতেই হইবে। পেটিয়টিজম শুনিলেই আমাদের ভয় হয় মনে হয়, বুঝি সেটা স্বার্থপরতারই নামান্তর। তাহার কারণ, আজকাল ইউরোপীয় পেটিয়টিজমের সেই চেহারাই দেখিতেছি। তাহা মঙ্গলক্সে–ঈশ্বরকে পরিহাস করিতে কুষ্ঠাবোধ করিতেছে না। কিন্তু ইংলণ্ড কি অন্তান্ত কোন দেশের এই বিকৃতি দেখিয়া তাঁহাকে বিচার কর মুদ্রত হইবে। ইউরোপ চুরু কাল এইরূপ ভদ্রনামধারী বৰ্ব্বতাকে আশ্রয় করিয়া ছিল না। এক সময়ে ইউরোপীয় - নেশনের জানিত যে, নিজের দেশকে বিশ্ব- • মানবের অঙ্গ করিতে পারাই সার্থকতা, সুতরাং নিজের দেশের সর্বশ্রেষ্ঠ আদর্শের মহিমাকে অন্যান্য দেশেও উজ্জ্বলরাপে দেখিবার জন্য ইউরোপ জগতের গুরুর আসন গ্রহণ করিবার চেষ্টা পাইয়াছিল। তখন দুৰ্ব্বলকে আশ্রয়দান করিয়া তাহাকৈ শিক্ষায়-দীক্ষায় নিজের সমান করিয়া তুলিবার চেষ্ট তাহার পক্ষে কি স্বাভাবিক ছিল, ইতিহাসপাঠকমাত্রেই অবগত আছেন । সে উদারনীতি আজ তাহার নাই, কিন্তু সেই সাধনার মূলে যে বীজ-সত্য ছিল, তাহারই বলে ইউরোপ এত বড়। সেই সত্যের প্রতি আমাদের অন্ধ হওয়া চলিবে না । এখন আমরা যে বিশ্বের মধ্যে আসিয়া পড়িয়াছি,—আর ক্ষুদ্র দেশটুকুর মধ্যে আবদ্ধ নাই, এ কথাটি প্রতি মুহূর্তে এই ইউরোপই স্মরণ করাইয়া দিতেছে। সুতরাং প্রাচীনু যতই বড় হৌক, তাহার দোহাই পাড়িয়া চুপ করিয়াআমরা বসিয়া থাকিতে পারি না। নুতনীকে নিজের বলে আত্মসাৎ করিতেই হইবে। তাহাতেই প্রাচীন বাচিবে, নহিলে মরিবে । নব্যহিন্দুদলের মধ্যে , অনেকে এ কথা অস্বীকার করেন, জানি। তাহারা বলবেন— ‘স্বধৰ্ম্মে নিধনং শ্রেয়ঃ পরধৰ্ম্মে ভয়াবহঃ’, কিন্তু পরধৰ্ম্ম মানে পরামকরণ নহে, পরধৰ্ম্মকে স্বধৰ্ম্ম করিতে পারিলেই ভয় ও নিধন উভয়ের হস্ত হইতে রক্ষা পাওয়া যায়ণ • o আমাদের সামাজিক ইতিহাস আজও রচিত হয় নাই ৷ হইলে দেখিতাম, এই ভারত
পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/১৪২
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।