\లి* প্রধানত যে উৎকলব্রাহ্মণের মন্ত্রণাবলে " শশাঙ্কনারায়ণ রাজ্যের ভিত্তিস্থাপন করিতে সমর্থ হইয়াছিলেন, তাহার নাম উমাপ্রসন্ন দাস। দাতনের অনতিদূরস্থ যে নিবিড় বনানীর কথা প্রথমেই আমরা বলিয়াছি, কিছুকাল সেখানে তপস্তা করিয়া তিনি মহাদেব ও ভগবতী মূৰ্ত্তির প্রতিষ্ঠা করিয়াছিলেন। বাগদী এবং কৈবৰ্ত্ত জাতি তখন শৌর্যবীর্য্যের জন্ত উড়িষ্যার পথে বড় প্রবল ; উমাপ্রসন্ন সহজেই তাঁহাদের উপর সর্বতোমুখী প্রভূত স্থাপন করিয়া লুপ্ত-হিন্দুগৌরব-উদ্ধারের স্বপ্ন কার্য্যে পরিণত করিতে চেষ্টা করিলেন । শিকারপ্রিয় শশাঙ্কনারায়ণের সঙ্গে ইতিপূৰ্ব্বে র্তাহার সাক্ষাৎ ও পরিচয় হইয়াছিল। তিনি এই তেজস্বী ও ধৰ্ম্মনিরত ব্ৰাহ্মণের নানা গুণে মুগ্ধ হইয়া তাহার শিষ্যত্ব গ্রহণ করিতে চাহিয়াছিলেন, কিন্তু তাহা হইলে শশাঙ্ককে পূৰ্ব্বগুরু ত্যাগ করিতে হয় বলিয়া দাসমহাশয় ইহাতে সম্মত হন নাই। যাহা হউক, উভয়ের মিলনের ফলে শিখিবংশের নির্বাণোন্মুখ সৌভাগ্যদীপ আর একবার জলিয়া উঠিয়াछ्लिं । উমাপ্রসন্ন দাস যে ধাৰ্ম্মিক ও সুপণ্ডিত বংশের স্থাপয়িত, শিবাপ্ৰসন্ন সেই কুল উজ্জ্বল করিয়াছিলেন। তাছার অভু্যদয়ের দিনে শিখিবংশের ভগ্নদশা। ময়ূরভঞ্জের রাজার সে বংশের উচ্ছেদসাধন সঙ্কল্প করিয়া বসিয়াছিলেন। পুরুষপরম্পরায় এই দ্বন্দ্ব উভয় পক্ষেরই সুনাধিক বলক্ষয় করিয়া আসিতেছিল, কিন্তু শেষে শিখিবংশেরই পরাজয় সম্পূর্ণ श्हेण । উমাপ্রসন্ন দাতনের বনে যোগসিদ্ধ হইয়া बाङ्गुनि । [ ৬ষ্ঠ বর্ষ, অবিঢ়ে। পরে আবার সংসায়ী হইয়াছিলেন, এজন্য র্তাহার পদস্খলনের নিনা ফুটিয়াছিল । তিনি বাগদী এবং কৈবর্তজাতির জোয়ানদিগকে লইয়া পদাতিক সেনাদল গঠন করিয়াছিলেন এবং 'সাধারণত তাহদের সহায়তায় সুবর্ণরেখাঁর তীরে তীরে বিস্তর জমি আবাদ করিয়া প্রচুর ধনসঞ্চয় করেন। ইহাতে তিনি ডাকাইতদলের সর্দার বলিয়া সেকালের কোন কোন শ্রেণীতে পরিচিত ছিলেন। শশাঙ্কনারায়ণকে ‘ অবলম্বন করিয়া উৎকলে আবার হিন্দুগৌরব পুনর্জীবিত করিতে তিনি ষে প্রয়াস পাইয়াছিলেন, তাহ জয়যুক্ত হয় নাই। অস্তিমশয্যায় পুত্রকে প্রতিশ্রত করাইয়া যান, চিরদিন তাহার বংশ শিখী রাজাদের আমুগত্য করিয়া তাহার জীবনস্বপ্ন সফল করিতে নিরত থাকিবে । ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ । শিবাপ্ৰসন্ন অনুদিন তাহার আদিপুরুষের ভাবে অনুপ্রাণিত ছিলেন । কিন্তু সে মন্ত্র গোপন রাখিয়া সচরাচর লোকহিতে এবং শাস্ত্রালোচনায় তাহার দিন কাটিত । র্তাহার যৌবনকালে শিখিরাজবংশের এরূপ অভাবনীয় অধঃপাত ঘটিয়াছিল যে, তদীয় সৰ্ব্বপ্রকার সাহায্য ব্যতিরেকে বিধবা রাণী ও অপোগও রাজকুমারের একদিনও, চলিবার উপায় ছিল না। দাসমহাশয় রাইবনীদুর্গের বিস্তৃত বহির্দেশে ক্রমশ তাহার অমুগত কৈবৰ্ত্ত ও বাগ্মীদের বসবাস করাইয়া পরিখার ধারে বিস্তর জমি আবাদ করাইলেন। সকল ব্যয়ভার নিজেই বহন করিতেন বটে, কিন্তু তাহার এইরূপ ব্যবস্থায় দুঃস্থ রাজপরিবারের সন্ত্রম
পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/১৪৫
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।