>鲁象 পাতিয়া হাত পাকাইয়াছি, ততদিন পাঠশালা স্থাপন করিতে আমাদের ভাবনা ছিল না, এখন বাজারে শ্লেট-পেন্সিলের প্রাদুর্ভাব হইস্বাছে, কিন্তু পাঠশালা হওয়াই মুক্ষিল । সকল দিকেই ইহা দেখা যাইতেছে। পূৰ্ব্বে আয়োজন যখন অল্প ছিল, সামাজিকত অধিক ছিল ; এখন অয়োজন বাড়িয়া চলিয়াছে এবং সামাজিকতায় ভাটা পড়িতেছে । আমাদের দেশে একদিন ছিল, যখন আসবাবকে আমরা ঐশ্বৰ্য্য বলিতাম, কিন্তু সভ্যতা বলিতাম না ; কারণ, তখন দেশে যাহারা সভ্যতার ভাণ্ডারী ছিলেন, তাহাদের ভাণ্ডারে আস্তাবের প্রাচুর্য্য ছিল না। তাহারা দারিদ্র্যকে সুভদ্র করিয়া সমস্ত দেশকে সুস্থস্নিগ্ধ রাখিয়াছিলেন । অন্তত শিক্ষার দিনে যদি আমরা এই আদর্শে মানুষ হইতে পারি – তবে আর-কিছু না হউক, হাতে আমরা কতকগুলি ক্ষমতা . লাভ করি—মাটিতে বসিবার ক্ষমতা, মোটা পরিবার,—মোটা খাইবার, ক্ষমত, যথাসম্ভব অল্প আয়োজনে যথাসম্ভব বেশি কাজ চালাইবার ক্ষমতা— এগুলি কম ক্ষমতা নহে, এবং ইহা সাধনার অপেক্ষ রাখে । স্বগমতা, সরলতা, সহজতাই যথার্থ সভ্যতা,—বহু আয়োজনের জটিলতা বৰ্ব্বরতা, বক্সত তাহা গলদঘর্শ্ব অক্ষমতার গুণাকার জাল! কতকগুলা জড়বস্তুর অভাবে মনুষ্যত্বের সন্ত্রম যে নষ্ট হয় না, বরঞ্চ অধিকাংশস্থলেই স্বাভাবিক দীপ্তিতে উজ্জ্বল হইয় উঠে,ঞ্চ শিক্ষা শিশুকাল হইতে বিদ্যালয়ে লাক্ত করিতে হুইবে-নিষ্ফল উপদেশের দ্বারা নছে, প্রত্যক্ষ দৃষ্টান্ত দ্বারা । এই নিতান্ত সহজ কথাকে সফলপ্রকারে সাক্ষাৎভাবে ছেলেদের ৰঙ্গজশল । [ ৬ষ্ঠ বর্ষ, আষাঢ় । কাছে স্বাভাবিক করিয়া দিতে হইবে। এ শিক্ষা নহিলে শুধু যে আমরা নিজের হাতকেপাকে, ঘরের মেঝেকে-মাটিকে অবজ্ঞা করিতে অভ্যস্ত হইব, তাহা নহে, আমাদের পিতাপিতামহকে ঘৃণা করিব এবং প্রাচীন ভারতবর্ষের সাধনার মাহাত্ম্য যথার্থভারে অম্বভব করিতেই পারিব না । এইখানে কথা উঠিবে, বাহিরের চিকণচাকণকে যদি তুমি খাতির করিতে না চাও, তবে ভিতরের জিনিষটাকে বিশেষভাবে মূল্যবান্ করিয়া তুলিতে হইবে—সে মূল্য দিবার সাধ্য কি আমাদের আছে ? প্রথমেই জ্ঞানশিক্ষার আশ্রম স্থাপন করিতে হইলে গুরুর প্রয়োজন। শিক্ষক কাগজে বিজ্ঞাপন দিলেই জোটে, কিন্তু গুরু ত ফরমাস দিলেই পাওয়া যায় না। এ সম্বন্ধে আমার বক্তব্য এই যে, জামাদের সঙ্গতি যাহা আছে, তাহার চেযে বেশি আমরা দাবী করিতে পারি না, এ কথা সত্য। অত্যন্ত প্রয়োজন হইলেও সহসা আমাদের পাঠশালায় গুরুমহাশয়ের আসনে যাজ্ঞবল্ক্যঋধির, আমদানি করা কাহারে আয়ত্ত্বাধীন নহে । কিন্তু এ কথাও বিবেচনা করিয়া দেখিতে হইবে, আমাদের যে সঙ্গতি আছে, অবস্থাদোষে ভাহার পুরাট দাবী না করিয়া আমরা সম্পূর্ণ মূলধন খাটুইতে পারি না,এমন ঘটনাও ঘটে। ডাকের টিকিট লেফাফায় আটবার জন্তই যদি জলের ঘড়া ব্যৰহার করি, তবে তাহার অধিকাংশ জলই অনাবশুক হয় ; আবার, স্নান করিতে হইলে সেই ঘড়ার জলই সম্পূর্ণ নিঃশেষ করা যায় ;–একই ঘড়ার উপ যোগিতা ব্যবহারের গুণে কমে-বাড়ে । আমরা
পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/১৫৯
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।