९३४” ছোটখাটাে-রকমের মজলিস সাজাইয়া বসিয়া আছেন। আমি যাইবামাত্র তাহারা “আসতে অজ্ঞে হোকৃ”, “বস্তে অজ্ঞে হোকৃ” ইত্যাদি সম্ভাষণে আপ্যায়িত করিতে করিতে আমাকে ব্যতিব্যস্ত করিয়া তুলিলেন। তাহারা সকলেই ভবানীবাবুর প্রতিবেশী, আমার আসিবার পূৰ্ব্বেই র্তাহারা আমার পরিচয় প্রাপ্ত হইয়াছিলেন। ভবানীবাবু একে একে সকলের সহিত আমার পরিচয় করিয়া দিলেন । আমি আমার ক্টোচানে চাদরটি সন্তপণের সহিত একটি তাকিয়ার উপর রক্ষা করিয়া অতি বিনীতভাবে উপবেশন করিলাম। চাকর আসিয়া সুবৃহৎ আলবোলায় তামাক দিয়া তাহার নলটি আমার দিকে যত্বপূৰ্ব্বক প্রসারিত করিয়া দিয়া গেল। কিন্তু আমি *ও রসে বঞ্চিত দাসগোবিন্দ।” আমি নলটাকে তুলিয়া বেচারামবাবুর দিকে দিলাম। তিনি ধন্যবাদহুচক মৃদ্ধহস্ত করিয়াবলিলেন, “আপনি বুঝি ওতে নাই ? অতি উত্তম।” আমি চাছিয়া-দেখিলাম, আর সকলের সভৃষ্ণদৃষ্টি ঐ নলটির উপরেই ছিল।
- “এস হে ভায়, একবাজি হোকৃ”—বলিতে বলিতে ভবানীবাবু দাবার বন্ধন উন্মোচন করিতে লাগিলেন। সন্ন্যাসিবাবু বলিলেন, “দাবী ত রোজই হয়, আজ গোপালবাবুর একআধখান। গান শোনা যাকৃ।”
বেচারামবাৰু বলিলেন, “গোপালবাবু গাইতে পারেন বটে ? বেশ, বেশ !” আমি ঐৰা লেই বললাম, আন্দ্রে - . . অীর “অাজে না ।” আগুন যেমন ভস্মঢাকা থাকে না, গুণও তেমনই বেশীক্ষণ চাপ [ ७é बर्ष, उज থাকে না। বিশেষত যারা গান গাইতে জানে, তাদের ঐ অজ্ঞে না” বলিবার ধরণই স্বতন্ত্র ; অপরের পক্ষে বুঝিতে বেশী বিলম্ব হয় না। ভবানীবাবু তাহার প্রায়োন্মোচিত দাবা পুনরায় বন্ধন করিতে প্রবৃত্ত হইলেন। এদিকে সন্ন্যাসিবাৰু আমার সম্মতির অপেক্ষ না করিয়া একটি এস্রাজ—যাহা এতক্ষণ অামার অজ্ঞাতসারে গৃহকোণে বিরাজ করিতেছিল— আনিয়া হাজির করিলেন এবং কালোরাতদিগের দ্যায় একখানি জাদুর উপর ভর দিয়া উপবেশন করিয়া সজোরে এস্রাজের অসংখ্য কৰ্ণ মৰ্দ্ধনপূর্বক বিচিত্র সুর বাহির করিতে লাগিলেন । সুরের দফায় আমার ; বিশেষ ব্যুৎপত্তি আছে বলিয়া থ্যাতি ছিল না । তবে আমার গুলা খুব দরাজ ; স্বর “বাজখাই” বলিয়া অনেকের পছন্দ হইত না বটে, কিন্তু আমার বোধ হয় পুরুষমানুষের কণ্ঠস্বর বামাকণ্ঠবিনিন্দিত হওয়া অত্যাবগুক নহে। বহুক্ষণ পরে এস্রাজের সুর বাধা হইল। ছড়িটা দ্রুতসঞ্চালিত হইয়া সুরতরঙ্গে ক্ষুদ্র বৈঠকখানাগৃহটি প্লাবিত করিয়া দিল । বেচারামবাবু অতি গদগদভাবে বলিলেন, “এইবার গোপালবাবু আমাদের কৃতাৰ্থ করুন।” আমি কিছুক্ষণ পর্য্যস্ত প্রতিবাদ করিলাম। কিন্তু যখন গবাক্ষান্তরালে বলয়ের ধ্বনি শুনিতে পাইলাম, তখনই মন স্থির করিয়া ফেলিলাম। স্ত্রীজাতির সমক্ষে, বিশেষত আমার গৃহিণীর বন্ধুর সমক্ষে, যে-কোন উপায়েই হউক, আমাকে সন্মানরক্ষা করিতেই হইবে ধুমুতরাং আর ইতস্তত না করিয়া গাম ধরিয়া দিলাম । এস্রাজের স্বরের সঙ্গে স্বর মিশিল মা বলিয়া. সম্যালিবাবু একটু আপত্তি করিলেন, কিন্তু