পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/২৯২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আসেসার। ՋԵ6 হইয়া লালজি “খোদাবন্দ ”বলিয়া দাড়াইয়া উঠলেন এবং পুনঃপুন ক্ষমা প্রার্থনা করিয়া জজসাহেবের উষ্ঠতক্রোধ অৰ্দ্ধপথে নিবারিত করিলেন । উকিলসরকারের বক্ততা আবার আরম্ভ হইল। জজসাহেব মনোযোগ দিয়া শুনিতে লাগিলেন । ক্ষণকাল পরে তাহার মনঃসংযোগ পুনশ্চ বাধাপ্রাপ্ত হইল ! লীলাজি নিতান্ত অনিচ্ছসত্ত্বেও পুনৰ্ব্বার পুৰ্ব্বাবস্থা প্রাপ্ত হইয়াছিলেন। জজসাহেবের ক্ৰোধবহি এবার ভীমবেগে প্রজ্বলিত হইল। তিনি হুঙ্কার করিয়া বলিলেন, "চাপরালী, ইসকে কান পকড় কে কোণেপর খাড় কর দেও।” লালজি বিনীতভাবে এই কঠিন আদেশের অনেক প্রতিবাদ করিলেন। কুিন্তু ফল হইল না। রঘুনাথপুরবাসিগণ তাহার দুর্দশা দর্শন করিল ভাবিয়া লালাজির হৃদয় বিদীর্ণ হইয়া গেল । তেওয়ারিজি শুদ্ধ লালাজির ভরসায় নিশ্চিত্ত ছিলেন না,—যথাসাধ্য অর্থব্যয়ে ইরিয়ার পক্ষসমর্থনের তিনি মুবাবস্থা করিয়াছিলেন। প্রায় তিনঘণ্টা পরে উভয়পক্ষের বক্তব্য সমাপ্ত হইলে লীলাজি পুনরায় স্বস্থানে আনীত হইলেন। জজসাহেব জিজ্ঞাসা করিলেন, “আপকে রায় কেয়ী হ্যায় ?” কিংকৰ্ত্তবাবিমূঢ় লালজি লজ্জারনত মস্তক উত্তোলিত না করিয়া করজোড়ে কম্পিতকণ্ঠে কহিলেন, “হুজুরকা জো রায় !” উত্তেজিত জজসাহেব টেবিলে মুষ্ট্যাঘাত কয়িয়া কহিলেন, “ড্যাম্ ইউ, আপকে রায় কহিয়ে, ইয়ে মুদালে মুজরিম্ হায় ইয়ে নহি ?” ۶۶وی কম্পিতবপু লালাজি মূঢ়ের দ্যায় মস্তকান্দোলন করিতে লাগিলেন। অতিমাত্র ক্রুদ্ধ হইয়া জজসাহেব ধমকের উপর ধমক দিলেন এবং প্রকৃত উত্তর দিবার জন্য লালজিকে পীড়াপীড়ি করিয়া ধরিলেন । এইরূপে লাঞ্ছিত হইয়া লালাজি কাদিয়া ফেলিলেন । হরজটাধুতা জাহ্লবীধারার দ্যায় পতমান অশ্রুধারা তাহার গুম্ফজলে আশ্রয়গ্রহণ করিল। রুদ্ধকণ্ঠে লালজি বলিলেন, “খোদাবন্দ, মুজরিম্ !” জজসাহেব ঘৃণাভরে লালাজির দিকে তীব্রকটাক্ষ করিয়া রায় লিখিতে বসিলেন । অপর আসেসর ভাবগতিক দেখিয়া আসামীকে “লা-মুজরিম্” বলিয়া ফেলিল । জজসাহেবের সুবিচারে আসাম,অব্যাহতি পাইল । বিপন্মুক্ত বালিকা এবং গুরু • দয়াল করুণাময় তেওয়ারিজির চরণে লুটাষ্টয়া পড়িল। প্রতিবেশিগণ আনন্দে-উৎসাহে তাহাদের ঘেরিয়া দাড়াইল । 米 豪 来 游 লালজিকে তাহার পর হইতে আর কেহ রঘুনাথপুরে দেখে নাই! ঐযতীন্দ্রমোহন গুপ্ত ।