পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/৩০৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ষষ্ঠ সংখ্যা। J প্রয়োজন হয়, লোকশিক্ষার্থেই শিবাজীউৎসবে প্রতিমূৰ্ত্তির প্রতিষ্ঠা হইয়াছিল। কিন্তু শিক্ষিত সাধকের পক্ষে ও যে এই সকল বাহ আলম্বন একান্ত অনাবশ্যক, এমনও মনে করি না । কোন মহৎ-ব্যক্তির চরিত্র আয়ত্ত করিতে হইলে, সে চরিত্রের ধ্যান করিতে হয়। এই ধ্যানের জন্ত সেই চরিত্রের বাহা আধার ও আলম্বনাদির চিস্ত . করাও অত্যাবস্ত্যক । কোনো বস্তুকেই তাহার অtধার ও আবেষ্টন হইতে একেবারে পৃথক্ করিয়া সত্যভাবে বোঝা যায় না। দুষ্মস্তের চরিত্র বুঝিতে গেলে, প্রাচীন ভারতের রাজহাসনজের রীতিনীতি, আচারব্যবহার, আহাৰ্য্য-পরিধেয়, ধৰ্ম্মাধৰ্ম্ম প্রভৃতি বিবিধ আধার ও আলঙ্গনের মধ্যে র্তাহাকে প্রত্যক্ষ করিতে হয়,—সেই সকল আধার ও আলম্বন সহকারে তাহার ধ্যান করিতে হয়। কুশলানুশিষ্ট মুভিনেতা ও অভিনেত্রীরাও প্রাচীনকালের কোন নাট্যলীলা দেখাইতে হইলে, তত্তৎকালের দৃপ্ত, পরিচ্ছদ, গৃহসজ্জাদির মধ্যে বহুদিন ধরিয়া ধ্যানপরায়ণ হইয়া বাস করেন ; নতুবা সে সকল লোকচরিত্র কদাপি সত্যভাবে রঙ্গমঞ্চে প্রদর্শন করিতে পারেন না। সামান্ত অভিনয়ের প্রয়োজনে কোন নায়ক নায়িকার চরিত্রকে আয়ত্ত করিতে হইলে যদি এই চরিত্রের বাহা আধার ও অলিম্বনের মধ্যে আপনাকে স্থাপন করা আবশ্যক হয়, তবে লোকগুরুগণের মহৎ চরিত্র আত্মস্থ করিয়া তাহা ইইতে আধ্যাত্মিক শক্তিসম্পদ লাভ করিতে হইলে, তাহাদের সামসময়িক চিত্র ও • অনুষ্ঠানাদির ধ্যান ও ধারণা না করিলে চলিবে কেন ? শি গাজী-উৎসব ও ভবানীমূৰ্ত্তি । oe S শিবাজীচরিতের আলম্বন দুই—এক গুরুজী রামদাস, অপর তাহার ইষ্টদেবতা ভবানী। যে দৈবশক্তি শিবাজীর জীবনে আত্মপ্রকাশ করিয়া তাহার দ্বারা এক বিশাল হিন্দুরাষ্ট্রের আদর্শ প্রকট করিয়াছিল, শিবাজী র্তাহাকেই ভবানীরূপে ভজনা করিতেন । এইজন্যই ভবানী তাহার ইষ্টদেবতার নাম ও সেই ভবানীই তাহার কৃপণের নাম ছিল। ভবানীষ্ট শিবাজীর শক্তি, ভবানীই শিবাজীর অস্ত্র । ভবানীই তাহীর জীবনের অদুখ হেতু, ভবানীই তাহার কার্য্যের সহায়, ভবানীই সে কার্য্যের সফলতা ও সিদ্ধি। ভবানীকে ছাড়িয়া দিলে শিবাজী দুৰ্ব্বোধ্য, কুহেলিকাচ্ছন্ন হইয় পড়েন । যে দেবতাকে যীশু সৰ্ব্বদা পিতা নামে অভিহিত করিতেন,—সেই “স্বৰ্গস্থ পিতাকে’ ছাড়িয়া মীশুচরিত্র বুঝিতে বাওয়া বিড়ম্বনা । যে দেবতাকে মোহহ্মদ আল্লানামে ডাকিতেন, তাহাকে উপেক্ষা করিয়া মোহহ্মদের, চরিত্র ধ্যান করিতে বা ওয়া পণ্ডশ্রম • মাত্র । রাধাকৃষ্ণকে ছাড়িয়া শ্রীচৈতন্যকে বুঝিতে যাওয়া মুর্গত। • বিটোবাকে ছাড়িয়া তুকারামকে জানিতে পার অসাধ্য। যীশুকে বৈদাস্তিকহিন্দুরূপে কল্পনা করা সম্ভব ; মোহহ্মদকে তোমার-আমার মত একজন বিংশশতাব্দীর একেশ্বরবাদিরূপে কল্পনা করা সহজ ; শ্রীচৈতন্যকে রাধাকৃষ্ণবজ্জিত করিয়া ব্ৰহ্মজ্ঞানী সাজানো কঠিন নহে। এ সকল চেষ্টাও হইয়াছে ও এখনো হইতেছে। কিন্তু ইহাতে এই সকল মহাপুরুষের প্রকৃততত্ত্ব অবগত হওয়া যায় না। কোন ভক্তকে বুঝিতে গেলে ঠিক যেভাবে তিনি