যষ্ঠ সংখ্যা । ] রাজতপস্বিনী । ల్సిలి রেখার এক ব্রাহ্মণ নিজ অবিবাহিত কন্যাকে পুটিয়ায় লইয়া আইসে এবং রাজসংসারের কোন প্রতিষ্ঠাপন্ন অথচ সসম্পৰ্কীয় কৰ্ম্মচারীর গৃহে তাহাকে রাখিয়া দেয়। বলা বাহুল্য, তাহার সহিত কুমারের বিবাহ হয় নাই। মেয়েট ক্রমে বড় হইয়া উঠিল, পাত্র জুটে না, পিতা বলিয়া বেড়াইতে লাগিল যে, যখন বাক্যদান করিয়াছি, তখন কুমারের সহিত কম্ভার বিবাহ হইয়াছে ধরির্তে হইবে। ব্রাহ্মণ শুধু ইহাতে ক্ষান্ত না হইয়া মাঝে মাঝে নিজে ও মেয়েটির দ্বারা কুমারমহাশয়কে চিঠি লিখিতে লাগিল । তিনি মহা উত্যক্ত হইয়া একদিন আমাদের সমক্ষে মার কাছে প্রস্তাব করিলেন যে, সে কন্যার বিবাহ দেওয়াইয়া দেওয়া হউক। মহারাণী বুলিলেন, “সে ব্রাহ্মণ নিজ জেদে কষ্ট পায়,আমি কি করিব? পাত্র কোথায় পাইব ?” কুমার ‘সাড়েতিনআনির কুমারের নাম করিলেন, বলিলেন,"তার বিবাহ হইয়াছে বটে, কিন্তু আমি ফুসলাইয়া তাহাকে রাজি করিতে পারি।” মা বলিলেন, “তা হইতে পারে না।” কুমার“আপনি মতামত কিছু দিবেন না।” মহারাণী —“তাই বা কেমন করিয়া হইতে পারে ? এ বিবাহে যদি মত দিতে পারি, তবে তোমারও বিবাহ দিতে পারি। আর কাহারও উপর আমার অধিকার নাই, এক তোমায় বলিতে পারি।” মা হাসিলেন । এ হাসির অর্থ একটু রহস্ত, কুমারের মন জানিবার কৌতুহল। কুমার বললেন, “তাই দেন !” মার মুখে সেই হাসি ! আমায় সুধাইলেন, “ঐশ, কি বল ?” আমি বলিলাম, তা হ’লে বাড়ীতে কাক বসিতে পাবে না, অমন কথাও বলিতে নাই ।” সকলে হাসিয়া উঠিলেন। একদিন প্রাতে আমরা মহারাণীমাতার কাছে বসিয়া আছি, এমনসময় খবর অসিল, পুটিয়ার এক কুপল্লীতে এক গুলিখোর ব্রাহ্মণ মারা গিয়াছে, তাহার সৎকার হয় না। কোন সদ্ধাহ্মণ তাহার দাহকাৰ্য্যে সহায়তা করিবে ? ফণী মহাশয় উপস্থিত ছিলেন, তিনি বলিলেন, “সে আর ব্রাহ্মণ কিসে?” চারি-আনির রাণীঠাকুরাণী বলিয়া পাঠাইয়াছিলেন যে, তাহার আমলারা সকলে অনুপস্থিত, এ অবস্থায় পাচআনির বাট হইতে ব্ৰাহ্মণ আমলা দেওয়া হউক। ইহাতে কেহ কেহ বলিলেন, “এ বড় অত্যাচার। তুমি মনিব, পেটের দায়ে হয় ত ব্রাহ্মণ আমলারা তোমার কথা শুনিবে, কিন্তু তোমার একবার ভাবা উচিত যে, কাজটি কি গৰ্হিত !” মা বলিলেন, “যদি সকল তরফের লোক যায়, আমাদেরও যাইবে । তাহ নহিলে কেমন করিয়া বলিব?” রাজসৰ্বারের পেনশনপ্রাপ্ত কাশীপ্রবাসী এক আত্মীয় কৰ্ম্মচারীর অল্পবয়স্ক পুত্র এই সময়ে আসিলএবং বলিল যে, শব লইয়া যাইতে সে প্রস্তুত। আমি বলিলাম, “দেখিও, কথা কাশী পৰ্য্যন্ত পৌছিবে!” এই নবযুবকের উৎসাহাতিশয্য দেখিয়া মা হাসিলেন, বলিলেন-“আচ্ছ, অন্থ মতি দিতেছি, তোমরা দু ভেয়ে যাও,— কেমন ?” • আর একদিন ফণী মহাশয়ের সঙ্গে মহারাণীর একটি জোতের কথা হইতেছিল। জোৎটি মাতার জায়গীর সম্পত্তির মধ্যে । মা বলিলেন, দুইজন ভদ্রলোক তাহ লইয়া বিবাদ বাধাইতেছে, তিনি আর কোন ভদ্রলোককে
পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/৩২০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।