లి ఆ বলবো ? তা বলছি—কিন্তু যেন মিয়ে না। দেখ, আমার বাছাদের একটু সাজিয়ে-গুজিয়ে দিলে—নিজে মুখে বলতে নেই–যেন রাজপুত্র। সেদিন আমাদের হরিদাসীর মা এসেছিল বেড়াতে—সে খোকাকে দেখে বল্পে, যেন সাহেবদের ছেলে ! আচ্ছ, আচ্ছা, —বলছি । মা !—একটা কথা যদি মন খুলে তোমার কাছে বলবার জো আছে। সারাদিন থাটিখুটি, রাত্রে একটু গল্প করতে ইচ্ছে হর—তা তোমার—কত টাকা লাগবে ? টাকা-কুড়ি ? ক্ষেপেছ ? তাই কখন হয়— এই ধর না কেন । হিসেব চাও না—তা বেশ। কিন্তু পঞ্চাশটাকার সিকি পয়স কমে হবে না । কি বলছ—এই সেদিন যে অতগুলো টাকা দিলে ? সে কি গো ! সে যে আজ পাচছ'মাস হ’লো। আর সে টাকা কি আমি নিজে খেয়েছি—সেও ওদেরই কাপড়চোপড়ে গেছে। কি, আমি ছেলেপুলেদের মাথা খাচ্ছি—ওদের নবাব করে’ তুলছি! আচ্ছ, এমন কথাটা বল্পে কি করে । ঘাট্ ! ষাটু ! বাছারা আমার—ষষ্ঠীর দাস ! আমি নবাব করছি ? আর ভদরলোকের ছেলেপুলে সব, ওরা ছেড়া কাপড়ে বেরুবে— তাতে তোমার অপমান নেই! কি—মত কথায় কাজ নেই-ত্রিশটাকা দেবে ? কেন, একি বঙ্গদর্শন । [ ৬ষ্ঠ বর্ষ আশ্বিন। ভিক্ষে দেওয়া, না আমি দরদপ্তর করছি । আমি এখন ত্রিশটাকানিই—তার পর আর কি, তুমি খোটা দাও যে, এই ত কমে চল্প, তবে অত টাকা চেয়েছিলুম কেন ? সে হবে না। পঞ্চাশটাকাই দিতে হবে । কি বলছ—এখন টানাটানির সময়, ওরা এত বাবুগিরি না-ই করলে ? কি আমি ওদের বাবুগিরি শেখাই ? কখনো না! আমি সে পাত্তর নই--আমার কাছে কোন বেচাল হবার জোটি নেই! আমি কেবল যাতে ভদ্রতারক্ষা হয়—তোমার মুখ হেঁট না হয়, তাই করি। কি—ত্রিশটাকার বেশী দেবে না ! পঞ্চাশটাকার এক পয়স কম আমি নোব না—তাতেই হ'লে হর । পঞ্চাশটাকা দেবে বল, তবে ঘুমুতে দেব— ত্রিশটাকা বলেই যে পাশ ফিরে শুয়ে নিদ্রা দেবে—সে কিছুতে হচ্ছে না! আগে বল, পঞ্চাশ—পঞ্চাশ পঞ্চাশ– !” স্বামী। তার পর আমি ঘুমিয়ে পড়লুম। আমার বিশ্বাস, আমি এই ত্রিশটাকাই ধরে ছিলুম, কিন্তু প্রাতে গৃহিণী বল্লেন যে, না, আমি পঞ্চাশটাকা দিতে স্বীকার করেছি—কি করবো । পুরুষের মন বড়ই দুৰ্ব্বল এবং-আর সে কথায় কাজ নেই—আমাকে পঞ্চাশ টাকাই দিতে হ’লো । . ঐঃ—
পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/৩২৩
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।