లిషాe তিনি পরপারে উত্তীর্ণ হইতে না হইতে বন্যাস্রোতে নদীবক্ষ স্ফীত হইয়া छेठिंढा । কুমার পদাঙ্কনারায়ণ পুনরায় অশ্বারোহণ করিয়া নদীর দিকে ছুটিয়া গেল। তখন বন্যাজল সুবর্ণরেখার কুলে কুলে পূরিয়া উঠিয়াছে। পথে কাহাকেও দেখিতে না পাইয়া তাহার উদ্বেগের সীমা ছিল না। ক্রমে তীরে আসিয়া দেখিল, বৰ্গীসেন নিতান্ত বিশৃঙ্খলভাবে সজ্জিত হইবার চেষ্টা করিতেছে— গোটাকতক ঘোড়ার কোন সন্ধান পাওয়া যাইতেছে না। স্বয়ং ভাস্করপণ্ডিত আৰ্দ্ৰ অশ্বে আরোহণ করিয়াই বিচ্ছিন্ন সৈন্যগণকে অবিলম্বে যাত্রার জন্য প্রস্তুত হইতে আদেশ করিতেছেন। কুমারকে দেখিয়া তিনি অতিমাত্র বিচলিত হইয়া উঠিলেন । প্রায় রুদ্ধকণ্ঠে দাসমহাশয়ের অভাবনীয় আপদের সংবাদ তাহাকে দিয়া নিজেকে ধিকৃত্বত করিলেন। বলিলেন, “আমার তাহাকে ছাড়িয়া আসা কিছুতে উচিত হয় নাই, নিতান্ত কৰ্ত্তব্যানুরোধে আসিয়াছি। প্রভুর বিপদ শুনিয়াই গঙ্গাব্দীন রাজঘাটের দিকে চলিয়া গিয়াছে। তুমি বাড়ী ফিরিয়া গিয়া অন্যান্য ব্যবস্থা কর। আমার আজ রাত্রে জঙ্গলমহালের শিবিরে না গেলে নহে। তাই আমি আর অপেক্ষ করিতে পারিতেছি না। বড় দুঃখ রহিল, বজা শগ । [ ৬ষ্ঠ ধর্ষ, আশ্বিন । দাসমহাশয়ের সঙ্গে তাহার গৃহে ৰাইতে পারিলাম না।” পদাঙ্কনারায়ণ অশ্বকে কশাঘাত করিয়া বেগে উমাপুরে ফিরিয়া গেল। দুই দণ্ডের পর প্রত্যাবর্তন করিয়া দেখিল, মহারাষ্ট্রীয় সেনা প্রস্তুত হইয়া অগ্রসর হইতেছে। ভাস্করপণ্ডিতকে প্রণাম করিয়া কুমার বলিল, “আমি আমার ঠাকুরাণীদিদির আদেশমত আপনাদের লইতে আসিয়াছি। ঠাকুরদাদামহাশয়ের আপদের কথা শুনিয়া তিনি কহিলেন, ‘পরের কাজে নিত্য ইহার চেয়ে গুরুতর বিপদ তিনি আলিঙ্গন করেন। ভগবানের কৃপায় নিরাপদে ফিরিবেন । কিন্তু সেজন্য অতিথি বিমুখ হইলে চলিবে না । আপনাকে সসৈন্য উমাপুরের বাড়ীতে একবার পদার্পণ করিতেই হইবে।” পণ্ডিতজী বিক্ষিত-বিমুগ্ধ হইলেন। বলিলেন, “তাহাই হউক, সাধবীর বচন মা ভবানী পূর্ণ করুন। এমন কথা আর কখন শুনি নাই । তিনি তোমার দাদামহাশয়ের যোগ্য গৃহিণী,— যথার্শ্ব সহধৰ্ম্মিণী ! যে গৃহে এমন লক্ষ্মী অধিষ্ঠিত, তাহাই সাক্ষাৎ বৈকুণ্ঠ । দাসমহাশয় ফিরিলে একাকী আমি আসিয়া তাহার অতিথি হইব ।” তখন পণ্ডিত দেখিতে দেখিতে শ্রেণীবদ্ধ অশ্বারোহী সৈন্যের অগ্ৰে অন্তৰ্হিত হইয়া গেলেন । बॅमल ।
পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/৩২৭
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।