সপ্তম সংখ্যা । ] অযোধ্যা । "චූලීෂී কর্তৃক রাজা দশরথের অস্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হইয়াছিল। সুতরাং ঐ ঘাট এখন একটি তীর্থে পরিণত হইয়াছে। ঐ স্থানে উপযুক্ত আহাৰ্য্য ও বাসগৃহ মিলিবে কি না, সন্দেহে আমি নামিলাম না। কিয়ৎক্ষণ পরেই আমরা দর্শননগরে উপনীত হইলাম। দর্শননগরষ্টেশনটি ক্ষুদ্র হইলেও বেশ সুদৃপ্ত। ষ্টেশনসন্নিহিত রাজপ্রাসাদ ও জলাশয়টির শোভা অত্যন্ত মনোহর। অযোধ্যার বর্তমান মহারাজের পূৰ্ব্বপুরুষ রাজা দর্শনসিংহ ঐ প্রাসাদ, স্বৰ্য্যমন্দির ও জৰাশয় প্রভৃতি নিৰ্ম্মাণ করেন । এখানেও আদিত্যসরোবরে স্নান করিবার জন্য বহু যাত্রী অবতরণ করিল। আমার সঙ্গী রেঙ্গুনপ্রত্যাগত বশিষ্ঠগোত্রীয় মিশ্রজি পরিবার ও মহম্মদীয় কনেষ্টবল সহ অবতরণ করিলেন । আমাকেও সঙ্গী হইতে অমুরোধ করিলেন, কিন্তু আমি অয়োধ্যাসন্দর্শনের নিমিত্ত নিতান্ত উৎসুক, সুতরাং ঐ স্থানে নামিতে আমার তত ইচ্ছা হইল না । শুনিলাম, দর্শননগরের বাজারটি স্বন্দর, ঐ স্থানে সকল দ্রব্যই পাওয়া যায় । মধ্যাহ্ব ১২টার সময় রেণুবালী-ষ্টেশনে গাড়ি পৌছিল। এখান হইতে অযোধ্যতীর্থঘাট প্রায় তিনক্রোশ দূরে অবস্থিত। দর্শননগর হইতেই কয়েকজন পাণ্ড সঙ্গ লইয়াছিল। এখানে নামিলে তাহারা আমার জিনিষপত্র লইয়া অত্যন্ত টানাটানি আরম্ভ করিল। ১৭১৮বর্ষবয়স্ক একটি ক্ষত্ৰিয়বাহুকি কোন পাণ্ডার চাকর। সে কাতরুভাবে বলিল, “মহাশয়, আমার সঙ্গেই আপনার প্রথম সাক্ষাৎ হয়। বিশেষ, ইহার ধনী পাণ্ডাদের চাকর । কত দিক্ হইতে কত যাত্রী উহাদের মনিবের বাট যাইবে । আমার পাণ্ডার এ পর্য্যন্ত একটি যাত্রীও জোটে নাই। অতএব আপনি আমার সঙ্গে চলুন, যত্নের কোনরূপ ক্রটি হইবে না।” আমি অবশেষে তাহারই অনুসরণ করিলাম। ষ্টেশনের অনতিদূরে একটি মুদীর্ঘ বাংলো আছে । উহাতে প্রায় ২০২৫টি ঘর । প্রত্যেক ঘরের বারাণ্ডায় এক এক পাণ্ডার এক এক মুন্সী •বাক্স ও খাতা সম্মুখে করিয়া বসিয়া আছে । আমার পাণ্ডার মুন্সী নামধাম লিখিয়া-লইয়া অপর পাণ্ডার জেন্মায় আমাকে এক্কায় তুলিয়া দিল। পূর্বে রেণু বালী হইতে অযোধ্যাতীর্থঘাট পৰ্য্যস্ত রাস্তায় দম্ভীতি ছিল। এমন কি; অযোধ্যায় রাত্রিবাস করাও নিরাপদ ছিল না। তজ্জন্ত পাণ্ডার বলিষ্ঠ ও সুদীর্ঘবংশযষ্টিধারী লোকদিগকে রক্ষী করিয়া যাত্রী লইয়া যাইত । এখনও ঐ প্রথা তিরোহিত হয় নাই। প্রায় ১॥০টার সময় পাণ্ডার বাটতে উপস্থিত হইলাম। স্বৰ্গদ্বারঘাটের ঠিক উপরেই একটি দ্বিতল গৃহে বাসস্থান নিৰ্দ্ধারিত হইল। যেখানে আমি রহিলাম, উহা ঐ পাণ্ডার ঠাকুরবাড়ী f উহা ব্যতীত আরও যাত্রিবাসের জন্য বাটী আছে । প্রায় দুইটার সময় সরযুমানে চলিলাম । • . কথিত আছে, পুণ্যসলিলা সরঘু হিমালয়ের অঙ্কস্থিত ব্ৰহ্মসরোবর হইতে সমুদ্ভুত । ইনি নেপালরাজ্য পবিত্র* করিয়া কোশলরাজ্যের রাজধানী অযোধ্যার অপুৰ্ব্ব শোভা সম্পাদনপূর্বক মগধজনপদের মধ্য र्निब जनদেশের বর্তমান ছাপরানগরীর নিকটে ভাগীরথীর সহিত মিলিত হইয়াছেন। মহর্বি s
পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/৩৪২
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।