সপ্তম সংখ্যা । ] ব্যঞ্জনবর্ণের উচ্চারণ । එHම් হয়, আমরা চলিতভাষায় তাহাই করি এবং তাহাই বিশুদ্ধ, কিন্তু পণ্ডিত হুইলেই সেইরূপ উচ্চারণ না করিয়া দার এবং দি বলিতে আরম্ভ করি। “তাশ্বাদি” একটি শব্দ, ইহাকে যদি “তাল্লাদি” উচ্চারণ করি, তাহার অর্থ, যে সন্ধিবৃত্তি পড়ে নাই, তাহার বুঝিবার সাধ্য কি ? কিন্তু বিশুদ্ধ উচ্চারণ করিলে সকলেই বুঝিতে পারে। এই উচ্চারণদোষে দ্বার এবং জুয়ার যে এক শব্দ, তাঙ্গ কেহ বুঝিতে পারে না। বিদ্যালয়ে পণ্ডিতমহাশয়ের ছাত্রগুণকে অর্থ" লিখাষ্টয়া দেন দ্বার অর্থ জুয়ার, অভিধানে লেখা হয় দ্বার অর্থ স্কুয়ার, যেন দ্বার এবং দুয়ার দুইটি বিভিন্ন শব্দ। কেবলমাত্র অস্তস্থ বকারের উচ্চারণজ্ঞানাভাৰে এক শব্দকে দুইপ্রকার করিয়া লিখিয়া আমাদের আধুনিক “বঙ্গভাষার” নেতাগণ নানাপ্রকার ভ্রমে পতিত হইয়াছেন। এতকাল বাঙলাতে দ্বারকে “দুআর” লিখিতেছিল, প্রাচীন বাঙলাপুস্তকে তাহ দেখিতে পাওয়া যায়। কিন্তু যখন বাঙলায় ব্যাকরণ প্রণীত হইয়৷ ইহা এক স্বতন্ত্র সহিত্যের ভাষারূপে গৃহীত হইল, তখন নেতাগণ দেখিলেন, ব্যাকরণানুসারে দুই স্বর একত্র থাকিতে পারে না । অতএব দুআর না লিখিয়া দুয়ার লিখুিত লাগিলেন । তাহ করিয়া আবার আর এক ভ্রমে পতিত হইলেন। তাহা এই যে, তাহারা অা এবং য়৷ এই দুইয়ের উচ্চারণ এক বলিয়া জানিতেন। আ এবং য়া যদি একু হইত, তবে সান্তাল এবং সানালেরও এক উচ্চারণ হইত। দুয়ার লিখিলে তাহার ਚੋਂ ‘দুইআর বা ‘duyar হয়, আর হয় না। এই প্রকারে উচ্চারণানভিজ্ঞতা হেতু আমাদের ভাষার এরূপ অবস্থা হইয়াছে ; সুতরাং ইহার প্রতি শিক্ষকগণের বিশেষ প্রণিধান করা আবশুক । উল্লিখিত যুক্তস্বরসকল বিশুদ্ধরূপে উচ্চারণ না করাতেই অধিকাংশ সংস্কৃতশব্দ সাধারণের পক্ষে অবোধ্য হইয়া উঠে। ‘য’র উচ্চারণ ই অ হইতে প্রায় ‘জ’ পর্য্যন্ত এবং ‘ব’র উচ্চারণ উঅ হইতে প্রায় ব পৰ্য্যস্ত। ইহাদের শেষসীমা পর্য্যন্ত না আসিয়া যতদূর প্রথমসীমার দিকে থাকা যায়, ততই শ্রেয়। বিশেষ সাবধান ন হইলে "ইজ’র উচ্চারণ জ’ পর্য্যন্ত এবং উঅ’র উচ্চারণ ব পৰ্য্যন্ত আসিয়া পড়ে, কিন্তু তাহ বাঞ্ছনীয় নহে। এই যুক্ত উ অ এবং বর্গীয় ব উভয়ের আকার বাঙলাতে ঠিক একপ্রকার, কিন্তু দেবনাগরীতে তাহাদের আকারগত কিঞ্চিৎ প্রভেদ আছে ; বাঙলা বর্ণমালায় ঐ দুই বর্ণের প্রভেদ করিয়া লেখার নিতান্ত প্রয়োজন । নচেৎ শব্দের প্রকৃত উচ্চারণ হইতে পারে না। . 鬱 व्यू লকারের আমরা যেরূপ উচ্চারণ করি, উৎকল দেশে তন্দ্রপ করে না, তথায় উহাকে কতকপরিমাণে ‘র’র দ্যায় উচ্চারণ করে । অস্তস্থবর্ণের যে লক্ষণ করা গিয়াছে, তাহ এই উভয়প্রকার উচ্চারণেই প্রযুক্ত হইতে পারে। সেই লক্ষণামুসারে ইহার কোন উচ্চারণই দুৰ্যণীয় নহে। কিন্তু দেখিতেছি, এই লকারবর্ণটির আমরা যেরূপ উচ্চারণ করি, তাহাতে অদ্যান্ত অগুস্থবর্ণের সহিত ইহার উচ্চারণপ্রক্রিয়ার কিঞ্চিৎ পার্থক্য আছে। কারণ ল ভিন্ন সকল অস্তস্থবর্ণেই উচ্চারণবন্ত্রদ্বয় দুই
পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/৩৬৩
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।