ety,8 নিজেদের শাসনসংরক্ষণের যথাযোগ্য বিধিব্যবস্থাপ্রতিষ্ঠায় ও রাজকাৰ্য্যপরিচালনায় আমাদের একটা বিধাতৃদত্ত অধিকার আছে। এ অধিকার সহজ ও স্বাভাবিক। এ অধিকার কেহ কাহাকে দেয় না, কেহ কাহাকে দিতে পারে না। এ অধিকার সমাজধর্মের নিত্যঅঙ্গ, ধৰ্ম্মত কেহ কাহাকেও এ অধিকার হইতে বঞ্চিত করিতে পারে না ; আমরা যেরূপ লোক, আমাদের যেরূপ সমাজগঠন, আমাদের যেরূপ সভ্যতা ও সাধনা, আমাদের শাসনসংরক্ষণের বিধিব্যবস্থা কখনো তদপেক্ষা বিভিন্ন হইতে পারে না,—জোর করিয়া কেহ তাহাকে তদপেক্ষু শ্রেষ্ঠতর বা বিশুদ্ধতরও করিতে পারিবে না। আর আমাদের শিক্ষাদীক্ষাভাবস্বভাবানুযায়ী রাজ্যশাসনব্যবস্থা তোমার চক্ষে হীন বা হেয় হইলেও, আমাদের অধিকারে তাহাই সৰ্ব্বোত্তম। তটস্থ হইয়া বিচার করিলে ইহার তরতম থাকিতে পারে, কিন্তু আমার পক্ষে ইহাই একমাত্র স্বধৰ্ম্ম ও পুরুষাৰ্থসাধনের একমাত্র উপায়। এই .বিধিব্যবস্থাদি অবলম্বন করিয়াই আমরা ক্রমে উন্নত হইয়া, শ্রেষ্ঠতর বিধান ও শাসনব্যবস্থা অবলম্বন ও প্রতিষ্ঠিত করিতে পারিব । বর্তমান অবস্থায়, অন্ত বিধান ও অন্ত সাধন যত কেন উন্নত হউক না,আমাদের পক্ষে তাহ নিতান্তই পরধৰ্ম্ম—ভয়াবহ । এ গেল এক কথা। কিন্তু এরো উপরে আর-একটা কথাও আছে। সেটা এই যে— -আমাদের যোগ্যতা-অযোগ্যতার বিচারক তোমরা নও, তোমরা হইতে পার না । . আমরা বাদী, তোমরা প্রতিবাদী। বাদী ও বিচারককে তোমরা তোমাদের সুসভ্য বিচার ৰঙ্গদর্শন । ৬ষ্ঠ বর্ষ, অগ্রহরণ বিধানে এক করিয়া ফেলিয়াছ বটে ; কিন্তু ” প্রতিবাদী যে, সে-ই বিচারকর্ত, এমন অদ্ভুত বিধান তোমাদের উন্নত ও উদার সভ্যতাতেও প্রতিষ্ঠিত হয় নাই । কিন্তু এ সকলের উপরেও একটা কথা আছে, সেটাই এ আলোচনায় প্রকৃতপক্ষে শেষ কথা। সে কথাটা এই যে— অভিভাবকের অধিকার ও অজুহাত তোমাদের নিতান্তই অলীক কল্পনা । ধৰ্ম্মত ও লোকৃত সেরূপ অধিকার এক জাতির উপরে অন্য এক জাতির কখনই প্রতিষ্ঠিত হয় না,-—হইতে পারে না । বিভিন্ন ও বিরোধী জাতিসকলের মধ্যে রক্ষক-রক্ষিতসম্বন্ধ আজ পর্য্যস্ত কোনো নীতিশাস্ত্রেই প্রতিপন্ন হয় নাই। জনসমাজে একান্ত অযোগ্য ব্যক্তিকে যোগ্যতাপ্রাপ্তি পর্য্যন্ত তাহার ন্যায্য অধিকার হইতে বঞ্চিত রাখিবার ব্যবস্থা আছে সত্য ; কিন্তু এখানে রক্ষক ও রক্ষিত উভয়ের উপরে এক সমদৰ্শী রাজশক্তি বা সমাজশক্তি প্রতিষ্ঠিত আছে, যে শক্তি অযোগ্যের সাময়িক অভিভাবকের বা রক্ষকের আত্মম্ভরিতা হইতে তাহার বিষয় ও অধিকারকে রক্ষা করিয়া থাকে। যেখানে এইরূপ শেষরক্ষার ব্যবস্থা নাই বা হওয়া অসম্ভব, সেখানে অযোগ্যতার অজুহাতে কাহাকেও ন্যায়ত ও ধৰ্ম্মত তাহার স্বাভাবিক স্বত্বস্বাধীনতা হইতে বঞ্চিত করিতে পারা যায় না। যেখানে এক ব্যক্তি বা এক জাতি অপর. ব্যক্তি বা অপর জাতিকে এই শেষরক্ষার ব্যবস্থা অবিস্তমানেও তাছাঃ ন্যায্য " স্বত্বস্বাধীনতা হইতে বঞ্চিত করিয়া রাখে; সেখানে নীতি ও ধৰ্ম্মের বন্ধন বিচ্ছিন্ন হইয়া
পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/৩৯৪
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।