জষ্টম সংখ্যা। ] বারাণসীর অভিমুখে। όν2» অমরত্বের প্রমাণ পাইলেই বা কি যায়-আসে । একবার যাহারা বাস্তবিক ভালবাসিয়াছে, দেহের বিনাশ কল্পনা করাও তাহীদের পক্ষে বিষম যন্ত্রণ। যে অমরত্বে তাহারা সন্তুষ্ট, আমাদের মত লোক সেরূপ অমরত্ব লইয়৷ কি করিবে ? খৃষ্টানদিগের যাহা ধ্যানের বিষয়, আমি সেইরূপ অমরত্ব চাই ;—আমি চাই আমার আমিত্ব, আমার নিজত্ব, আমার বিশেষত্বটুকু বরাবর থাকিয়া যাইবে ; আমি যাহাদের ভালবাসিতাম, তাহাদিগকে আবার আমি দেখিতে পাইব—-পূৰ্ব্বের মতই তাহাদিগকে ভালবাসিব, তাহা না হইলে আর কি হইল ? আমি ৰখন আবার নগরের পথ ধরিয়া চলিতে লাগিলাম, তখন কাকেরা মহ কোলাহল আরম্ভ করিয়া দিযুছে । সকলে মিলিয়া মৃত্যুর গান গাহিতেছে ; এই সময়ে নিদ্রা যাইবার জন্ত তাহারা দলে-দলে বৃক্ষশাখায় বসিয়া গিয়াছে। বরাবর সমস্ত পথটায়, বট ও তালবৃক্ষের তলদেশে, গজমুণ্ডধারী গণেশের ছোট-ছোট মুক্তি সন্ধ্যালোকে দেখা যাইতেছে। যে সকল লোকের নিকট হইতে আমি চলিয়া আসিলাম, তাহাদের মতবাদটি এই সকল বিগ্রহেরই দ্যায় নিতান্ত শিশুজনোচিত ও অকিঞ্চিৎকর। সন্ধ্যার সময়, ঐ সকল থিওলফিষ্টদিগের নিকট আমার অসম্মতিস্থচক পত্র পাঠাইলাম । তাহাদিগকে ধন্যবাদ জানাইলাম, আর বলিলাটু,“আমি যত শীঘ্ৰ পারি, মাদ্রাজ ছাড়িব বাবুরা স্থির করিয়াছি ; তাই শেষবিদায় .াইবার জঙ্গ কাল আমি তাহদের সহিত সাক্ষাৎ করিব।” যাহাদিগকে আমি খুব ভালবাসিতাম, রাত্রির স্বপ্নে আমার সেই সব মৃত প্রিয়জন । দিগকে আমি পুনৰ্ব্বার দর্শন করিলাম ; " আমার শৈশবের সেই পুরাতন বিকৃতভাৰাপল্প অশুভদৰ্শন বাসভবনের মধ্যে সেই প্লাঙুবর্ণ গলিত মূৰ্ত্তিগুলি দেখিলাম। আর এক রাত্রি,— যেরূপ জেরুস্যালেমে আমার খটিয়াছিল—বে সময়ে আমার প্রথমকালের বিশ্বাসগুলি চিরকালের মত ভাঙিয়া যায়—সেই রাত্রির মত আজও সমস্ত রাত্রি অশেষপ্রকার বিবাদের চিন্তা, দুনিবার ভয়ের চিস্ত, একটার পর একট, মনোমধ্যে ক্রমাগত উদয় হইতে লাগিল ; তাহার পর যেই প্রভাত হইল, অমনি একট। দাড়কাক আমার ঘরের জানলায় বসিয়, উদয়োমুখ স্বৰ্য্যের সমক্ষে মৃত্যুগান গাহিয়৷ আমাকে জাগাইয়া দিল । অপরাহ্লে, বিদায় লইবার জন্য থিওসফিক্টদিগের সহিত আবার সাক্ষাৎ করিতে গেলাম । থিওসফিষ্টদিগের দলপতি আমার পত্র পাঁইয়া সমস্ত ব্যাপারটা বুঝিয়াছিলেন ; তথাপি তিনি মেহপূর্ণ মধুরভাবে আমাকে আদরঅভ্যর্থনা করিলেন ; আমি এরূপ অভ্যর্থনা প্রত্যাশা করি নাই । - অনেকক্ষণ হস্তে হস্ত চাপিয়া তিনি বলিলেন—“খৃষ্টান, আমি ভাবিয়াছিলাম, তুমি বুঝি নাস্তিক । “বুদ্ধদেব আমাদের জষ্ঠ যে সকল জড়বিজ্ঞানবাদের উপদেশ রাখিা গিয়াছেন, আমি o তোমার নিকট তুহোঁরই ব্যাখ্যা করিয়াছিলাম ; কেন না, সাধারণত এইরূপভাবেই আমরা আরম্ভ করি...তোমুর আস্থার যেরূপ প্রকৃতি দেখিতেছি, তাহাতে তোমার পক্ষে ওম্বাদের
পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/৩৯৯
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।