পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/৪৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

છેડ૭ পারিতেছি ; অতি ক্ষুদ্র আমরাও এই অপরিসীম বৈচিত্র্যের সঙ্গে ত একটা ব্যবহারিক সম্বন্ধ পাতাইতে পারিয়াছি। প্রত্যেক ধূলিকণাটির সম্বন্ধে আমাদিগকে ত প্রতিমুহূর্তে স্বতন্ত্র করিয়া ভাবিতে হয় না, সমস্ত পৃথিবীকে ত আমরা একসঙ্গে গ্রহণ করিয়া লই, তাহাতে ত কিছুই বাঁধে না । কত বস্তু, কত কৰ্ম্ম, কত মানুষ ; কত লক্ষকোটি বিষয় আমাদের জ্ঞানের মধ্যে বোঝাই হইতেছে ; কিন্তু সে বোঝার ভারে আমাদের হৃদয়মন ত একেবারে পিষিয়া যায় না ? কেন যায় না ? সমস্ত গণনাতীত বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্যসঞ্চার করিয়া তিনি যে আছেন, যিনি একমাত্র, যিনি অদ্বৈতম্। তাই সমস্ত ভার লঘু হইয়া গেছে। তাই মানুষের মন আপনার সকল বোঝা নামাইয়া নিস্কৃতি পাইবার জষ্ঠ অনেকের মধ্যে খুজিয়া ফিরিতেছে তাহাকেই, যিনি অদ্বৈতম্। আমাদের সকলকে লইয়া যদি এই এক না থাকিতেন, তবে আমরা কেহ কাহাকেও কিছুমাত্র জানিতাম কি ? তবে আমাদের পরস্পরের মধ্যে কোনোপ্রকারের আদানপ্রদান কিছুমাত্র হইতে পারিত কি ? তবে আমরা পরস্পরের ভার ও পরস্পরের আঘাত এক মুহূৰ্ত্তও সহ করিতে পারিতাম কি ? বহর মধ্যে ঐক্যের সন্ধান পাইলেই তলে আমাদের বুদ্ধির শ্রান্তি দূর হইয়া যায়, পরের সহিত আপনার ঐক্য উপলব্ধি করিলে তবেই আমাদের হৃদয় নিষ্কৃিত হয়। বাস্তবিক প্রধানত আমরা যাহা-কিছু চাই, তাহার লক্ষ্যই এই ঐক্য। আমরা ধন চাই, কারণ, এক ধনের মধ্যে ছোটবড় বহুতর বিষয় ঐক্যলাভ করিয়াছে ; সেইজন্য বহুতর বিষয়কে প্রত্যং বঙ্গদর্শন। [ s# বর্ষ, পৌষ পৃথকৃরূপে সংগ্ৰহ করিবার দুঃখ ও বিচ্ছিন্নতা ধনের দ্বারাই দূর হয়। আমরা খ্যাতি চাই, কারণ, এক খ্যাতির দ্বারা নানা লোকের সঙ্গে আমাদের সম্বন্ধ একেবারেই বাধিয়া যায়—খ্যাতি যাহার নাই, সকল লোকের সঙ্গে সে যেন পৃথকৃ। ভাবিয়া দেখিলে দেখিতে পাইব, পার্থক্য যেখানে, মানুষের দুঃখ সেখানে, ক্লাস্তি সেখানে ; কারণ, মামুষের সীমা সেখানেই। যে আত্মীয়, তাহার সঙ্গ আমাকে শ্রান্ত করে না ; যে বন্ধু, সে আমার চিত্তকে প্রতিহত করে না ; যাহাকে আমার নহে বলিয়া জানি, সেই আমাকে বাধা দেয়, সেই, হয় অভাবের, নয় বিরোধের কষ্ট দিয়া আমাকে কিছু-না-কিছু পীড়িত করে। পৃথিবীতে আমরা সমস্ত মিলনের মধ্যে, সমস্ত সম্বন্ধের মধ্যে ঐক্যবোধ করিবামাত্র যে আনন্দ অনুভব করি, তাহাতে সেই অদ্বৈতকে নির্দেশ করিতেছে। আমাদের সকল আকাঙ্ক্ষার মূলেই জ্ঞানে-অজ্ঞানে সেই अठेव्राउज्ञ नकांन झश्ब्रिां८छ् । अठेवङझे यांनन् । এই যিনি অদ্বৈতং, তাহার উপাসনা করিব কেমন করিয়া ? পরকে আপন করিয়া, অহমিকাকে খৰ্ব্ব করিয়া, বিরোধের কাটা উৎপাটন করিয়া, প্রেমের পথ প্রশস্ত করিয়া। আত্মবৎ সৰ্ব্বভূতেষু য: পশুতি স পশুতি—সকল প্রাণীকে আত্মবৎ যে দেখে, সেই যথার্থ দেখে। কারণ, সে জগতের সমস্ত পার্থক্যের মধ্যে পরম সত্য যে অদ্বৈতং, র্তাহাকেই দেখে। অন্তকে যখন আঘাত করিতে যাই, তখন সেই অদ্বৈতের উপলব্ধিকে হারাই, সেইজন্ত তাহাতে দুঃখ দিই ও দুঃখ পাই; নিজের স্বার্থের দিকেই যখন তাকাই, তখন সেই অদ্বৈতং প্রচ্ছন্ন হইয়া যান, সেইজন্য স্বার্থসাধনার মধ্যে এত মোহ, এত দুঃখ ।