08)» शन्त्रछeमि । ৬ষ্ঠ বর্ষ পৌষ। হর্ষ হিমালয়ের সাহ্রদেশে উপনীত হইয়া স্বভাবের শোভায় মুগ্ধ হইয়া যে সময়ে মৃগয়াদিব্যাপারে আমোদপ্রমোদে রত ছিলেন, সেই সময়ে মহারাজ প্রভাকর মুমুধু অবস্থায় উপনীত অবগত হইয়া সত্বরগমনে রাজধানী প্রত্যাবর্তন করেন । অতঃপর প্রভাকরবৰ্দ্ধনের মৃত্যু হইলে, কেহ কেহ হর্ষবৰ্দ্ধনকেই রাজপদে প্রতিষ্ঠিত করিবার ষড়যন্ত্র করিতে থাকেন, কিন্তু রাজ্যবৰ্দ্ধন অচিরে প্রত্যাগত হওয়ায় সৰ্ব্বসম্মতিক্রমে জেষ্ঠষ্ট পিতৃরাজো অভিষিক্ত হন । এই সময়ে মালবরাজকর্তৃক র্তাহাদিগের ভগিনীপতি কান্তকুজ্জাধীশ্বর নিহত ও ভগিনী রাজ্যশ্ৰী লৌহখৃঙ্খলে নিগড়িত অবগত হইয়া মহারাজ রাজ্যবৰ্দ্ধন দশসহস্র অশ্বারোহী লইয়া মালবস্তৃপতিকে আক্রমণ ও যুদ্ধে বিনাশ করিয়া সমুচিত প্রতিশোধ লন, কিন্তু মালবেখরের ঘনিষ্ঠবন্ধু গৌড়রাজ শশাঙ্ক গুপ্তমন্ত্রণাচ্ছলে আহবানপুরঃসর রাজ্যবন্ধনের গুপ্তহত্য সাধন করিয়া মিত্রবধের অতি ঘৃণিত প্রতিহিংসা গ্রহণ করেন। অতঃপর পতির ও ভ্রাতার শোকে একান্ত বিহবলা রাজ্যঞ্জী অধিকতর বিপৎপাতের সম্ভাবনা জাশঙ্কা করিয়া নিতান্তু নিরাশ্রয় ও অনন্তোপায় হইয়াই বিন্ধাপৰ্ব্বতে পলায়ন করিয়া, স্ত্ৰীজাতির পরমনিধি সতীত্বরত্ন রক্ষণ করেন । হর্ষের রাজ্যগাভ ও উন্নতিসাধনে যত্ন ।— মহারাজ রাজ্যবৰ্দ্ধনের সস্তানসন্ততিলাভোচিত ৰয়ঃপ্রাপ্তির পূৰ্ব্বেই মৃত্যু হওয়ায়, তদীয় অম্বুজ হর্ষবৰ্দ্ধনই রাজাসনের ভারত একমাত্র অধিকারী বিবেচিত হইলেও, প্রজার রাজা ਬੱਚ করিবার আংশিক অধিকার থাকা প্রযুক্তই হউক, বা ভ্রাতৃবিয়োগশোকে মই পালোচিত-আডম্বর-স্বীকারে অনিচ্ছাবশতই হউক, সাৰ্দ্ধপঞ্চবর্ষ যাবৎ হর্ষ ‘কুমার শিলাদিভ্য’ নামেই আত্মপরিচয় প্রদান করিয়া রাজ্য শাসন করেন । অবশেষে (৬১২ খৃঃ অঃ ) ‘মহারাজাধিরাজ শ্ৰীহৰ্ষ আখ্যা গ্রহণপূৰ্ব্বক অভিষিক্ত হন। শিলাদিত্যসংবৎসর নামে সে অব্দ ভারতের কোন কোন স্থানে প্রচলিত আছে, তাহ হর্ষবৰ্দ্ধনের অভিষেকসময় হটতে গণিত না হইয়া, কুমার শিলাদিত্যের রাজ্যভারগ্রহণ ৬০৬–৭ খৃঃ অঃ ) হইতেই গণিত হয়। রাজ্যলাভের পর ভগিনী রাজ্যত্রর অনুসন্ধানে বহির্গত ইয়া, বনবাসী অনার্য্যদিগের সাহায্যে বিন্ধ্যারণ্যানীমধ্যে প্রবেশলাভ ক’রয়া হতাশাপ্রযুক্ত জীবনত্যাগে উদ্যতা রাজ্যশ্ৰীকে অগ্নি প্রবেশ হইতে রক্ষা অতঃপর ভ্রাতৃবধের প্রতিশোধগ্রহণোদ্দেশে গৌড়রাজ্য আক্রমণ করায় বৌদ্ধধৰ্ম্মবিদ্বেষী ও শশাঙ্ক প্রাণভয়ে পলায়ন করেন । এই সময়ে থানেশ্বর ও কনোজের যুক্তরাজ্যের অধীশ্বরের সৈন্য ৫ সহস্র হস্তী, ২sসহস্ৰ অশ্বারোহী ও ৫০ সহস্র পদাতি মাত্র ছিল। পুর্ককালপ্রচলিত চতুরঙ্গবলের প্রধান অঙ্গ রথের যুদ্ধে তাদৃশ উপযোগিতা উপলব্ধি না করিয়া, হর্ষ সমরোপকরণরূপে তাহার ব্যবহার রহিত করিয়া দেন। হিউয়েন্-সাং বলেন, রাজ্যভারগ্রহণ হইতে সাৰ্দ্ধপঞ্চবর্ষ কাল হস্তীর আস্তরণ ও অশ্বের বলগাদি উন্মোচন না করিয়া তিনি পূৰ্ব্ব হইতে পশ্চিম প্রদেশসমূহ জয় করিয়া বেড়ান। এই নিদারুণ কষ্ট ও উৎকট রণশ্রমের পর উত্তরপশ্চিম সীমান্ত ও ( সম্ভবত ) ৷ বঙ্গবিজয়ের অব্যবহিত পরে, তাহার সেনা বৃদ্ধিলাভ করিয়া, করেন ।
পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/৪৫৮
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।