سیاه به ছুচাল খিলান-বিশিষ্ট দ্বারের মধ্য দিয়া খিলানঘরের মধ্য দিয়া, একপ্রকার সুড়ঙ্গপথের মধ্য দিয়া, ‘তেহারা’ পুরু প্রাকার পার হইয়া, তবে ভিতরে প্রবেশ করিতে হয়। বড়বড় সিড়ি দিয়া উপরে উঠিতে হয় ;–চারিদিকে সেই একই রক্তাভ বুসরবর্ণ। তাহার পরেই সহসা স্বচ্ছ পাণ্ডুবৰ্ণ – নীরব ও শুভ্ৰ ভাস্বরতা ; এইবার মাৰ্ব্বেলের মধ্যে আসিয়া পড়িয়াছি । শুভ্র সান, শুভ্র প্রাচীর, শুভ্র স্তম্ভ, শুভ্র খিলানঘর, ছাদের ধারে খোদাই-কাজ করা যে প্রস্তরময় গরীদে-বেষ্টন রহিয়াছে এবং যেখান হইতে দুর-দিগন্ত পরিলক্ষিত হয়, তাহাও শুভ্র ;–সমস্তই শুভ্র। কেবলমাত্র, অমল-ধবল দেয়ালের গায়ে ইতস্তত কতক গুলি 3 পাথরের ফুল—উৎকীর্ণ রহিয়াছে ; কিন্তু ঐ সমস্ত 'ফুল এত স্বল্প, এত মৃদুপ্রভ, এত বিরলবিন্যস্ত যে, এই প্রাসাদস্থ তুষারগুভ্রতার কোন বৈলক্ষণ্য হয় না। যেদিন এখানকার শেষ বাদশা এই স্থান হষ্টতে নিৰ্ব্বাসিত হন, সেইদিন যেমনটি ছিল,—এই পরিত্যক্ত অবস্থার মধ্যেও, এই মরু-নিস্তব্ধতার মধ্যেও ঐ সমস্ত ঠিক তেমনি টাটুকী, তেমনি শুভ্র স্বচ্ছ রহিয়াছে। মার্কেলের উপর কালের হস্ত অতি বিলম্বে প্রকটিত হয়, তাই এই অপূৰ্ব্বসুন্দর জিনিষগুলি", দেখিতে এমন ক্ষণভঙ্গুর ও সুকুমার হইয়াও, আমাদের নিকট ধ্রুবনিত্য বলিয়া প্রতীয়মান হয়। ঐ উপরে কৃত্রিম পৰ্ব্বত্বের উপর, প্রাকারবদ্ধ:প্রকাও ফুর্গের কেন্দ্রস্থলে, একটি বিষ্ণ উষ্ঠান সংস্থাপিত। উহার চতুর্দিকে বড় Fi–‘aĝat” “Parphyre” ৬ষ্ঠ বর্ষ, মাঘ। বড় দ্বারপ্রকোষ্ঠ । যে জমাটু-প্রস্তরচুর্ণের দ্বার & ভূগর্ভের খিলান-ঘর নিৰ্ম্মিত হইয়া থাকে, ঐ সকল দ্বারপ্রকোষ্ঠ সেইরূপ মাল-মস্লায় গঠিত কৃত্রিম গুহার প্রবেশপথ বলিয়া প্রতীয়মান হয়। কিন্তু এই সকল কৃত্রিম গুহার আকারে বিশুদ্ধ জ্যামিতিক রেখাবিদ্যাসের সুষমতা পরিলক্ষিত হয় । বৃহৎ খিলানের প্রত্যেক ক্ষুদ্র অলঙ্কারটি পর্যন্ত, ক্ষুদ্র খিলানের ক্ষুদ্র খুবরিকাটা ঘরটি পর্য্যস্ত, চুল-চের সমান মাপে গঠিত। স্বধা কালো জালি-কাটা সোধঅলঙ্কারের কিনারার স্থতাটি মনে হয় যেন ' তুলি দিয়া আঁকা, কিন্তু আসলে সেইস্থলে Onyx-মণি অতীব নিপুণভাবে বসান হইয়াছে । এই ভাস্বর "অথচ লিষঃ দালানগুলি একেবারেই বারিত ; এক দালান হইতে আর এক দালানে অবাধে যাতায়াত করা যায় ; অথবা সারি-সারি অবারিত খিলানঘার দিয়া একেবারেই অলিন্দের উপর আসিয়া পড়া যায়। যখন ভাবি, কি সতর্ক সন্দিগ্ধতার সহিত পুৰ্ব্বে এই স্থানটি নিম্নস্থ ভীষণ প্রাকারাদির দ্বারা সংরক্ষিত হইয়াছিল, তখন খোলা-খালা বিশ্বস্তভাবের এই সমস্ত নিদর্শন নিতান্ত অলীক বলিয়া মনে হয়। ত, ছাড়া, এইখানে একটা আমৃদরবারের ময়দান আছে ; এই মুক্তস্থানে রাজদরবার বসিত। এই স্থানের অনাড়ম্বর সরলতা মার্জিতরুচির পরিচায়ক ; কেবল, পাথরের উপর যে খোদাই-কাজগুলি দেখা যায়, তাই একেবারে নিখুঁত। এইখানে প্রায় কিছুই নাই ; মোগল-বাদশার জন্ত কেবল একটি কালে-পাথরের সিংহাসন, রহিয়াছে; তাহার পাশে, বিদুষকের জন্ত
পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/৫১৮
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।