Qsb" উপায়ে স্বাধীন জ্ঞানার্জনের উদ্যম তাহাদের গ্রন্থভারক্লিষ্ট মনের জড়ত দূর করিয়া দিবে এবং দেশের কোনো পদার্থকেই তুচ্ছঞ্জান না করিবার এবং দেশী সমস্ত জিনিষই নিজে দেখিবার, শুনিবার ও বুঝিবার চেষ্টা তাহাদিগকে যথার্থ স্বদেশপ্রীতির দিকে অগ্রসর এবং স্বদেশসেবার জন্ত প্রস্তুত করিবে। কোনো প্রতিই সম্পূর্ণ অকৃত্রিম ও পরিপক্ক হইতেই পারে না,—যদি তাহ প্রত্যক্ষ জ্ঞানের উপরে প্রতিষ্ঠিত না হয়। ভালবাসা • অক্লান্তযত্নে জানিতে ইচ্ছা করে এবং জানা হইলে ভালবাসা আরও সত্য ও সুগভীর হয়। আমাদের স্বদেশপ্রেমের সেই ভিত্তির অভাব আছে এবং আমাদের মনে সেই ভিত্তিরচনার জগু যদি দুৰ্নিবার আগ্রহ উপস্থিত না হয়, তবে যেন আমরা স্বদেশপ্রেমের অভিমান না করি । যদি এই প্রেমের অভিমানী হুইবার প্রকৃত অধিকায় আমরা না লাভ করিতে পারি, তবে স্বদেশ আমুদের স্বদেশ নহে। জ্ঞানের দ্বারা, প্রেমের দ্বার,সেবার দ্বার, পরিপূর্ণ ব্যবহারের দ্বারাই অধিকার লাভ করা যায় ; জগতে যে জাতি দেশকে ভালবাসে, সে অনুরাগের সহিত স্বদেশের সমস্ত সন্ধান নিজে রাখে, পরের পুথির প্রত্যাশায় ,তাকাইয়া থাকে না, স্বদেশের সেবা যথাসাধ্য নিজে করে, কেবল পরের কৰ্ত্তব্যবোধকে জাগ্ৰত করিবার উপায় সন্ধানুককরে না, এবং দেশের, সমস্ত সম্পৎকে নিজের সম্পূর্ণ ব্যবহারে আনতে চেষ্টা করে, বিদেশী ব্যবসায়ীর অশুভাগমনের প্রতীক্ষায় নিজেকে পথের কাঙাল করিয়া রাখে না। তাই আজ আমি আমাদের ছাত্রগণকে বলিতেছি, “দেশের উপরে সর্বাগ্রে সর্বপ্রযত্নে বঙ্গদর্শন । [ ৬ষ্ঠ বর্ষ, ফান্ধন জ্ঞানের অধিকার বিস্তার কর, তাহার পরে প্রেমের এবং কৰ্ম্মের অধিকার সহজে প্রশস্ত হইতে থাকিবে । আজ আমি বাংলাদেশের দুই বিভিন্ন কালের উদয়াস্তসন্ধিস্থলে দাড়াইয়া, হে ছাত্রগণ, কবির বাণী স্মরণ করিতেছি – যাত্যেকতোহস্তশিখরং পতিরোষধীনাম্ আবিষ্কৃতারুণপুরঃসর একতোহকঃ ॥ এখন আমাদের কালের শতরশ্মি চন্দ্রম অস্তমিত হইতেছে, তোমাদের কালের তেজ-উদ্ভাসিত স্কুর্য্যোদয় আসন্ন—তোমরা তাহারই অরুণসারথি । আমরা ছিলাম দেশের সুপ্তিজালজড়িত নিশীথে ; অন্তর হইতে প্রতিফলিত ক্ষীণ জ্যোতিতে আমরা দীর্ঘরাত্রি অপরিস্ফুট ছায়ালোকের মায়া বিস্তার করিতেছিলাম। আমাদের সেই কৰ্ম্মহীন কালে কত অলীক বিভ্রম এবং অকারণ আতঙ্ক দিগন্তব্যাপী অস্পষ্টতার মধ্যে প্রেমের মত সঞ্চরণ করিতেছিল। আজ তোমরা পূৰ্ব্বগগনে নিজের আলোকে দীপ্তিমান হইয়া উঠিতেছ। এখনো জেল-স্থল-আকাশ নিস্তব্ধ হইয়। নবজীবনের পূর্ণবিকাশের জন্ত প্রতীক্ষা করিয়া আছে ; অনতিকাল পরেই গৃহে-গৃহে পথেপথে কৰ্ম্মকোলাহল জাগ্রত হইয়া উঠিবে। এই কৰ্ম্মদিনের প্রখরদীপ্তি দেশের সমস্ত রহস্ত ভেদ করিবে- ছোট-বড় সমস্তই তোমাদের তীক্ষ্ণদৃষ্টির সন্মুখে উদ্ভাসিত হইয়া উঠিবে। তখন তোমাদের কবিবিহঙ্গগণ আকাশে ঘুে গান গাহিবে, তাহাতে অবসাদের আবেশ ও সুপ্তির জড়িমা থাকিবে না—তাহ প্রত্যক্ষ আলোকের অাননো, তাহ করতললন্ধ সত্যের উৎসাহে সহস্র জীবন হইতে সহস্র ধারায়
পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/৫৩৬
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।