68२ প্রকাশ পাওয়া পারিবারিক বিড়ম্বনীর একশেষ—সকলের ইচ্ছার পালয়িত্রীরূপেই আমরা তাহাকে পূজা করিতে পারি। রামবনবাসাদি ব্যাপারের পূর্বেই কৈকেয়ীৰ চরিত্রের খলতার দিকটাও অনেকাংশে বিকাশ পাইয়াছিল। কৌশল্য রামচন্দ্রের নিকট বলিয়াছিলেন—“আমি কৈকেয়ীর পরিজনবর্গকর্তৃক সৰ্ব্বদা নিগৃহীত হইয়া থাকি, কোন ভৃত্য আমার পরিচর্য্যায় মনোযোণী হইলে কৈকেয়ীর অন্তরঙ্গ কাহাকেও দেখিলে একান্ত ভীত হয়।” কিন্তু কৌশল্য এ সকল কথা কথন স্বামীকে বলেন নাই, পরস্তু সপত্নীকে সহোদরীর দ্যায় প্রতির চক্ষে দেখিয়াছেন, এ কথা আমরা দশরথের মুখে শুনিতে পাইয়াছি । কৈকেয়ী নিজেই রামচন্দ্রের কথা উল্লেখ করিয়া বলিয়াছেন- “কৌশল্যাভোংতিরিক্তঞ্চ মম শুশ্ৰুষতে বহু”—কৌশল্য হইতেও রাম আমার অধিক শুশ্ৰুষা করিয়া থাকে। সুতরাং চারিদিকের আদর্যত্ব ও ক্ষমাশীলতার তাহার চিত্তের অসংযম পল্লবিত হইয়া. উঠিয়াছিল, উহ। স্নিগ্ধ ধৰ্ম্মভীরু রাজপুরীতে অলক্ষিতভাবে একটা ভীষণ কাগু করিবার জন্য শক্তিসঞ্চয় করিতেছিল, একটা অমৃতভাণ্ডের মধ্যে পড়িয়া যেন তাহার চরিত্রের ক্রর অংশটি বহুদিন প্রসপ্ত ছিল— তাহী সময়ে সময়ে অলক্ষিতভাবে কৌশল্যাকে বিদ্ধ করিত, কূেহ তাহ জানিতে পারিত না। রাজা স্বয়ং তরুণী ভাৰ্য্যাকে প্রাণ হইতেও অধিক ভালবাসিতেন, সৌন্দর্যের, কুহকে তিনি কৈকেয়ীচরিত্রের বঙ্গদর্শন । [ ৬ষ্ঠ বর্ষ, ফাঙ্কন সংক্রান্ত ঘটনায় তাহার চক্ষু সহসা উন্মুক্ত হইয়াছিল-ভয়বিমূঢ় হইয়া তিনি বলিয়াছিলেন—“হে উদ্বন্ধনি, আমি তোমাকে না ও নিয়া কণ্ঠসংলগ্ন করিয়া রাখিয়াছিলাম।” কৈকেয়ীর মাত তাহার স্বামিহত্যায় প্রবৃত্ত হইয়াছিলেন, মাতা হইতে কৈকেয়ী চরিত্রের ক্ররত প্রাপ্ত হইয়াছিলেন, স্বমন্ত্র 'রাজসভায় প্রকাশুভাবে সেই ঘটনাটির উল্লেখ করেন । রামাভিষেকব্যাপারে আমরা মন্থরাকেই সৰ্ব্ব অভিযুক্ত করিয়া থাকি, কিন্তু অনিষ্টের বীজ কৈকেয়ীর চরিত্রের মধ্যে ছিল, মন্থর তাহার বিকাশের উপলক্ষ্যমাত্র হইয়াছিল । কিন্তু যে কৈকেয়ী “রামে বা ভরতে বাঙ্গং বিশেষং নোপলক্ষ " "থা বৈ ভরতে মান্তস্তথা ভূয়োহপি রাঘব । রাজ্যং যদি ছি রামস্ত ভরতপ্তাপি তত্ত্বদা "-- রাম এবং ভরতে আমি কোন প্রভেদই দেখি না, আমার নিকট রাম ও যেরূপ, ভরত ও সেক্টরূপ, রাজ্য রামের হষ্টলেক্ট ভরতের হইল ; – প্রভৃতি • বাক্যে চিত্তেব এতটা ঔদার্য প্রদর্শন করিয়াছিলেন, তিনি মন্থরার কোন যুক্তিতে মতিচ্ছন্ন হইয়াছিলেন, তাহা বিচাৰ্য্য। কৈকেয়ীর পুত্রকে রাজ্যপ্রদান করিবেন, অশ্বপতির কাছে এইরূপ প্রতিশ্রুতি করিয়া দশরথ কৈকেয়ীর পাণিগ্রহণ করিয়াছিলেন, * সেই প্রতিশ্রুতির কথা হয় ত দশরথের স্মৃতিপথে জাগ্রত ছিল, এইজন্তই তিনি রামচন্দ্রকে বলিয়াছিলেন–“ভরত তোমার অনুগত ঔ & পরম ধাৰ্ম্মিক। কিন্তু সে মাতুলালয়ে থাকিতে । একৃত পরিচয় পান নাই। রামাভিষেক থাকিতেই তোমার অভিষেক হইয়া যায়, 緩 * অযোধ্যাকাও, ১০+ সর্গ ২-০ গ্লোক ।
পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/৫৫০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।