馨 می 6:88 বঙ্গদর্শন । [ ৬ষ্ঠ বর্ষ, ফাল্গুন। থাকিতেন এবং স্বয়ং মহারাজ “অহথঃ হি ংবৃত কেশকলাপ হস্তে ধারণ করিয়া মদীয়াশ্চ সৰ্ব্বে তব বশানুগাঃ”—“আমি এবং আমার সমস্ত তোমার অধীন’—বলিয়া কৃতাঞ্জলি হইয়া ঘৰ্ম্মাক্ত হইয়া পড়িতেন—স্বৰ্য্যচক্রের আবর্তনে যে সকল রাজ্য আলোকিত হয়, ততদূর পর্য্যন্ত সাগরাস্বরা পৃথিবীর একমাত্র অধীশ্বরের মিনি সৰ্ব্বশ্রেষ্ঠ কিরীটমণি র্যাহার আজ্ঞায় রাজা “অবধো বধ্যতাং কে বা” বলিয়া নিরপরাধের প্রাণদণ্ড দেওয়ার জন্ত অকুষ্ঠিতচিত্তে হস্ত উত্তোলন করিতে ইচ্ছুক, সেই প্রবলপ্রতাপান্বিতা, সৌন্দর্য্যাভিমানিনী মহারাণী কৈকেয়ী এই অভিষেকের পর একান্ত নিম্প্রভ, বিগতস্ত্রী ও মামহীনা হইয়া অগ্রমহিষীর কৃপাভিখারিণী অথবা অপ্রতিপাত্রী হইয়া নিগৃহীত হইবেন — এ কথা মনে হইতে র্তাহার সমস্ত প্রকৃতি, বিদ্রোহী হইয়া উঠিল ; যাহা-কিছু শুভ, যাহা-কিছু কল্যাণের চেতুভূত— সমস্ত • তিরোহিত হইয়া আশঙ্কাতুর কুরতা পৃদ্ধিত ও বৰ্দ্ধিত হইয়া উঠিল। কৈকেয়ী সৰ্ব্বদা বর্তমানের উত্তেজনায় কাৰ্য্য করিত্বেন-ফলাফল গণ্য করিতেন না । রমণীজাতির সঙ্কল্প কতদূর কুর, কতদূর নির্মম, নিভীক ও প্রচণ্ড হইতে পারে, কৈকেয়ী এই ব্যাপারে তাহার জলন্তু উদাহরণ দেখাইয়াছেন। ভূলুষ্ঠত পুষ্পিত লতার স্তায় কৈকেয়ী ক্রোধাগারে পড়িয়া ছিলেন, মলিন বসন, পৃষ্ঠাবলম্বিত বেণী, নিরাভরণ দেহহীতে তিনি বয়হীনা কিন্নরীর দ্যfয় छूटे श्रङছিলেন । তিনি গৃহের চিত্র, কণ্ঠের হার ও পুপমালা চুড়িয়া মেলিয়া দিয়াছিলেন– তাহারাও র্তাহারই মত অর্নাঘরে স্মৃত্তিকার উপর নিপুতিত ছিল। দশরথ তাহার বিমূঢ়ের ন্তায় বলিলেন—“বলমাত্মনি পশুন্তী ন বিশঙ্কিতুমৰ্হসি।” “আমার প্রতি তোমার কত বল, তাই তুমি জান --তোমার আশঙ্কার কোন কারণ নাই।’ আদরে বন্ধিত কৈকেয়ীর ইচ্ছা অনিবাৰ্য্য, কিন্তু সেই ইচ্ছার আবেগে তাহার বালকের স্থায় চঞ্চল্য ছিল না, তাহাতে প্রৌঢ়ার দৃঢ়তা ছিল । তিনি দশরথকে ধীরভাবে দেবাস্তুরযুদ্ধের পর প্রদত্ত দুইটি ,বরের কথা স্মরণ করাইয়া দিলেন, দশরথ রূপসীর অশ্রুর ইন্দ্রজালে বদ্ধ হইয়া গেলেন । “তুমি যাহা চাহিলে, তাহাই তোমাকে দিব” এইরূপ প্রতিশ্রুতিদানের পর রাজ্ঞা ধীরে ধীরে উঠিয়া দাড়াইলেন ; তাহার, স্থ্যৈ ও দৃঢ়বদ্ধ সঙ্কল্প নারীমুক্তিকে একুট ভয়ঙ্করভাব প্রদান করিতেছে --চন্দ্র, স্বৰ্য্য, মেদিনী, পিতৃপাল প্রভূতিকে আহবান করিয়া কৈকেয়া ধার সপ্তারকণ্ঠে বলিলেন—“সত্যসন্ধ, ধৰ্ম্মজ্ঞ, পরমপবিত্র মহারাজ দশরথ প্রতিশ্রুতি করিতেছেন, তোমরা শোন।" তৎপরে বজ্ৰতুল্য দুইটি ভাষণ বরপ্রার্থনায় বৃদ্ধ রাজাকে একেবারে বিমুঢ় করিয়া ফেলিলেন । ইহার পরে আমরা দেখিতে পাই, ব্যথিত-বিপ্লব দৃষ্টতে, চাহিয়া রাজ তাহার প্রিয়তম মহিষীর নিকট কৃতাঞ্জলি হইয়া আছেন ; কথন তিনি তাহার পদপ্রাস্তে নিপতিত ; কখন ধূসরাকাশে নক্ষত্রপংক্তির প্রতি নিনিমেষদৃষ্টি বদ্ধ করিয়া রাজা নির্শ খিনীকে এই লজ্জার দৃপ্ত চিরদিনের তরে" আচ্ছাদন করিয়া রাথিতে কৃতাঞ্জলিপুটে প্রার্থনা করিতেছেন ; কখন তাহার ভাবী মৃত্যু ও শুামচ্ছবি রামচক্সের ছুৰ্গতির কথা
পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/৫৫২
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।