একাদশ সংখ্যা । ] পুত্র তখনই পরিত্যাগ কf বেন। তুমি সত্যলঙ্ঘন করিতে চাও, করিও–কিন্তু তোমার পূৰ্ব্বপুরুষ সগর র্তাহার জ্যেষ্ঠপুত্ৰ অসমঞ্জকে বনবাস দিয়াছিলেন। সত্যরক্ষার্থ তুমি এষ্ট কাৰ্য্য করিতে এত ভীত হইতেছ, তোমাকে ধিক্ ।” রাজা হতবুদ্ধি হইয়া নিশ্চেষ্ট হইয়া পড়িলেন, তখন মহামাত্র সিদ্ধার্থ বলিলেন, “অসমঞ্জ প্রজাদিগের শিশুসন্তান গুলি ধরিয়া লষ্টয় তাহাদিগকে ক্রীড়াচ্ছলে সরযুগর্ভে নিক্ষেপ করিয়া হত্যা করিতেন, বিপদে পড়িয়া প্রজার রাগকে জানাইলে রাজা তাঙ্গকে বন, বাস দিয়াছিলেন ; কিন্তু রামের অপরাধ কি আছে, তাহ দেখাইয় দিন।” এই সকল কথায় কৈকেয়ী কর্ণপাত না করিয়া রামের জন্ত চীর ও বন্ধল লইয়া আসিলেন । রামের বিষয়নিঃস্বপূহ উদার ફ્રેન્નિન ન કે જ્ઞલ હ উত্তেজনাপূর্ণ গৃহে স্বৰ্গীয় বাণীর ন্তায় অপূৰ্ব্ব ও স্নিগ্ধ বোধ হইল – “নৈবাহং রাজ্যমিচ্ছামি ন সুখং ন চ মেদিনীম্।” “ম বিমশে বসুমতী ভরতায় প্রদীয়তাম্।” ‘আমি রাজ্য, মুখ বা পৃথিবীর অভিলাষী নহি । , ‘আপনি দ্বিধাশূ? হৃদয়ে এষ্ট রাজ্য ভরতকে প্রদান করুন’–-বলিয়া তিনি বারংবার রাজার নিকট বনযাত্রার অনুমতি চাহিতে লাগিলেন ; -- এই উদার দৃশু স্বাথান্ধ কৈকেয়ীকে আকৃষ্ট করিতে পারে নাই । সীতা বনগমনকালে কৌশল্যাকথিত স্বামিভক্তির উপদেশ নতশিরে গ্রহণ করিয়া বলিলেন— ধনাতন্ত্রী বিদ্যতে বীণা নাচক্রে বিদ্যতে রথ । নাপতিঃ মুখমেধেত যা স্তাদপি শতাত্মজা ॥” ‘তন্ত্ৰীশূন্ত বীণা এবং চক্রশূন্ত রথ যেরূপ ব্যর্থ, শতপুত্রবর্তী হইলেও স্বামী ভিন্ন স্ত্রীলোকের কৈকেয়ী p 《8 জীবন সেইরূপ ব্যর্থ – তাহার সুখের আর কোন মূল নাই। এই সময়ে দশরথ মৃত্যুতুল্য কষ্টে ক্ষণে ক্ষণে মূৰ্ছিত হইয় পড়িতেছিলেন, স্বামিভক্তির এই জীবন্ত দৃশ্ব-পতির আসন্নমৃত্যু, বৈরাগ্যকঠোর রামের সঙ্কল্প, সচিব ও প্রজাদের উদ্যত আক্রোশ-ইহার কিছুই কৈকেয়ীর প্রতি কোন প্রভাব বিস্তার করিতে পারে নাই। মুক্তলজ্জা রমণী অযোধ্যার অ tক্ষেপেক্তির প্রতি কঠোর বধিরত অবলম্বন করিয়াছিলেন, এই দৃশ্ব একটি চূড়ান্ত দৃষ্ঠ, ইহার নৃশংসতা ও অভিপ্রায়ের অটলতা ভয়মিশ্র বিস্ময়ের উদ্রেক করে । কৈকেয়ীর দৃষ্টি , অন্ত দিকে ছিল, এজন্য সম্মুখের সমস্ত দৃশু তাহাকে অভিভূত করিতে পারে নাই। পুত্রের ভাবী শুভচিন্তা তাহাকে সঙ্কল্পে সদৃঢ় করিয়া রাখিয়াছিল। স্বামী পরিত্যাগ করিলেন, প্রজারা তাহার নাম শুনিয়া ভয়ে শিহরিয়া উঠিত, সমস্ত , জগৎ হইতে তিনি তাড়িত হইয়া একমাত্র মন্থরাসঙ্গিনীসম্বল হইলেন। এই অনর্থাংপাতে তাহার অবস্থার বিপৰ্যয় ঘটিল,সমস্ত দুরবস্থাকে তিনি মস্তকোপরি স্বহস্তে আকর্ষণ করিয়া আনিয়া সম্রাঞ্জীর দ্যায় বিশাল দম্ভে দাড়াইলেন ; যাহার একটি কেশের শোভাবৃদ্ধির জন্ত অযোধ্যার সমস্ত "রাজভাণ্ডার উন্মুক্ত হইয়া যাইত, আজ তিনি স্বেচ্ছায় সমস্ত আদরের বন্ধন ছিন্ন করিয়া একান্ত সঙ্গিহীন হইয়া দাড়াইলেন। “নিষ্ঠুর,” “পাপচরিত্র,” “কুলপাংশনী” প্রভৃতি বিশেষণ অঙ্গের ভূষণ করিয়া কৈকেয়ী আজ অযোধ্যার রাজপ্রাসাদে নিঃসঙ্গ দৰ্পে অকুণ্ঠত রছিলেন। ভরত রাজা, হইয়া সিংহাসনে বলিলে তাহার দুৰ্দ্দিনের
পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/৫৫৫
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।