ॐ १३ बङ्गमञ्चमि । [ ७é वर्ष, tछब ।। অস্তকার সভায় আমার নিবেদন এই, সাহিত্যপরিষদের মধ্যে আপনারা সকলে মিলিয়া স্বদেশকে সত্য করিয়া তুলুন। বাংলাদেশের প্রত্যেক জেলা এবং প্রত্যেক জেলার প্রত্যেক বাঙালী সাহিত্যপরিষদের মধ্যে নিজের ইচ্ছ ও চেষ্টাকে একত্রে জাগ্ৰত করিয়া আজ যাহার অঙ্কট আছে তাহ স্পষ্ট করুন, যাহা ক্ষুদ্র আছে তাঁহাকে মহৎ করুন। কোনখানে এই পরিষদের কি অসম্পূর্ণত আছে, তাহ লইয় প্রশ্ন করিবেন না, ইহাকে সম্পূর্ণ করিয়া তুলিয়া প্রত্যেকে গৌরবলাভ করুন। দেবপ্রতিমা ঘরে আসিয়া পড়িলে গৃহস্থকে তাহার পূজা সারিতেই হয় ; আজ বাঙালীর ঘরে তিনটি দেবপ্রতিমা আসিয়াছে—সাহিত্যপরিষদ, শিক্ষাপরিষদ ও শিল্পবিদ্যালয় ; ইহাদিগকে ফিরাইয় দিলে দেশে যে অমঙ্গল ঘটবে, তাহার ভার আমরা বহন করিতে পারিব না । অনেকের মনে এ প্রশ্ন উঠবে, দেশের কাজহিসাবে সাহিত্যপরিষদের কাজটা এমনি কি একটা মস্ত ব্যাপার! এইরূপ প্রশ্ন আমাদের দেশের একটা বিষম বিপদ। যুরোপ-আমেরিকা তাহার প্রকাও কৰ্ম্মশালা লইয়া আমাদের চোখের সামনে আসিয়া দাড়াইয়াছে, তাই দেখিয়া আমাদের অবস্থা বড় হইবার পূৰ্ব্বেই আমাদের নজর বড় হইয়া উঠিয়াছে। যে কাজ দেখিতে ছোট, তাহাতে উৎসাহই হয় না ;– এইজন্ত বীজরোপণ করা হইল না,–একেবারে অস্তি বনস্পতি তুলিয়া-আনিয়া পুতিয়া অন্তদেশের অরণ্যের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করিবার জন্ত ব্যস্ত হইয়া পড়িখাছি। এ ত প্রেমের , লুক্ষণ নহে, এ অহঙ্কারের লক্ষণ। প্রেমের অসীম ধৈর্য্য, কিন্তু অহঙ্কার অত্যন্ত ব্যস্ত। আমাদের দুর্ভাগ্য এই যে, ইংরেজ নানামতে ' আমাদিগকে অবজ্ঞা দেখাইয়া আমাদের অহস্কারকে অত্যন্ত রাঙা করিয়া তুলিয়াছে। অামাদের এই কথাই কেবল বলিবার প্রবৃত্তি হইতেছে, আমরা কিছুতেই কম নই। এইজন্ত আমরা যাহা-কিছু করি, সেটাকে খুবই বড় করিয়া দেখাইতে না পারিলে আমাদের বুক ফাটিয়া যায়। একটা কাজ ফাদিবার প্রথমেই ত একটা খুব মস্ত নামকরণ হয়—নামের সঙ্গে “দ্যাশনাল শব্দটা কিংবা ঐরকমের একটা বিদেশী বিড়ম্বন জুড়িয়া দেওয়া যায়। এই নামকরণ-অনুষ্ঠানেই গোড়ায় ভারি একটি পরিতৃপ্তি বোধ হয় । তার পরে বড় নামটি দিলেই বড় আয়তন না দিলে চলে না,—নতুবা বড় নাম ক্ষুদ্র আকৃতিকে কেবলি বিদ্রুপ করিতে থাকে। তখন নিজের সাধ্যকে লঙ্ঘন করিতে চাই। তক্ৰমাওয়াল লাগামের খাতিরে ওয়েলারের জুড়ি না হইলে মুখরক্ষা হয় না—এদিকে “অদ্যভক্ষাধমুগুণঃ’ । যেমন করিয়া হৌক, একটা প্রকাগু ঠাট গড়িয়া তুলিতে হয় ; ছোটোকে ক্রমে ক্রমে বড় করিয়া তুলিবার, কাচাকে দিনে দিনে পাকা করিয়া তুলিবার যে স্বাভাবিক প্রণালী, তাহ বিসর্জন দিয়া যত-বড় প্রকাও স্পৰ্দ্ধা খাড়া করিয়া তুলি, তত-বড়ই প্রকাও ব্যর্থতার আয়োজন করা যায়। যদি বলি, গোড়ার দিকে স্ট্রর আর একটু নামাইয়া ধর না কেন ? তবে উত্তর পাওয়া যায়, তাহাতে লোকের মন পাইব না। হায়ু রে লোকের মন" তোমাকে পাইতেই হইবে ৰলিয়া পণ করিয়া বসাতেই তোমাকে হারাই। তোমাকে চাই না বলিবারজোর যাহার আছে, সে-ই তোমাকে জয় করে। এইজন্তই যে
পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/৫৮০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।