९{निश् ज१४)\ \ । জ্ঞানালোকের শুভ্রতেজ সহ করিতে না পারিয়া অত্যাচার-অবিচার দিগ্বিদিকে পলায়ন করিবে। যখন আমাদের জ্ঞান ও মহত্ত্বের শক্তি আমাদের শাসকগণের জ্ঞান ও মহত্ত্বকে অতিক্রম করিয়া উঠিবে, তখন তাহারা আপন হইতেই আমাদের নিকট পরাজয় স্বীকার করিয়া ও আমাদের পদানত হইয়া আমাদের শিষ্যত্ব গ্রহণ করিবে। কেবল পাশববলে স্থায়ী আধিপত্য বিস্তার করা যায় না, মানবহৃদয়ের উপর প্রভুত্ব মানসিক ও নৈতিক বল ব্যতীত একপ্রকার অসম্ভব। ইংরেজগণের মানসিক ও নৈতিক বল আমাদের অপেক্ষা অধিক বলিয়া তাহার! আমাদের উপর আধিপত্য করিতেছে । কিন্তু আমাদের মানসিক ও নৈতিক শক্তি যখন তাহদের অপেক্ষা অধিক হইবে, তখন তাহারা আমুদের নিকট পরাভূত হইয়া যাইবে। যদি আমাদের মাতৃভূমির দুঃখদারিদ্র্য দূর করিবার ইচ্ছা থাকে, তবে আমাদের তদুপযোগী শক্তিসঞ্চয় অবগুক । বাহিরের অপর কোন শক্তির সাহায্যে আমাদের দেশের উদ্ধার হওয়৷ অসম্ভব । এখন প্রশ্ন এই, কিরূপে এই শক্তিসঞ্চয় হইতে পারে। আমার মতে ইহার একমাত্র উপায় প্রকৃষ্ট স্বদেশভক্তি। কেবলমাত্র বাহিরে স্বদেশীদ্রব্যৰ্যবহারে স্বদেশভক্তি যথেষ্ট্রপরিমাণে আচরিত হয় না। আমাদের পুণমন স্বদেশী উপকরণে গঠিত হওয়া উবিশ্বক। সমস্ত আড়ম্বর, সমস্ত ছদ্মবেশ, সমস্ত , “ধারে লওয়া” ভাব পরিত্যাগ করিয়া আমাদের •খাটি স্বদেশী হওয়ার প্রয়োজন। কেবলমাত্র বিদেশী পণ্যদ্রব্যের স্রোত বন্ধ, করিলে হইবে शशनैउठ | ዕጫጳ ন,—বিদেশীভাবের তোত বন্ধ করিতে হইবে । বিদেশী পণ্যদ্রব্যের অধীনতা হইতে বিদেশী ভাবের অধীনতা অধিক অনিষ্টকর ও নীচতাসুচক । আমাদের প্রয়োজনীয় দ্রব্যগুলি যেরূপ অপরের সাহায্য ব্যতীত আমরা নিজে প্রস্তুত করিয়া বিদেশী পণ্যদ্রব্যের অধীনতাপাশ •ছেদন করিব, সেইরূপ আমরা আমাদের পূৰ্ব্বপুরুষের মহান ভাবগুলিকে আহবান করিয়া নিজে মহান হইব ও অন্তরের স্বাধীনতা লাভ করিব। প্রাচীন গ্রীস তাহার বিজেতা রোমকে যেমন বিষ্ঠা ও বুদ্ধির দ্বারা বিজিত করিয়াছিল, সেইরূপ আমরাও আমাদের বিজেতা ইংরেজকে নৈতিক উচ্চ আদর্শ, হৃদয়ের বল ও বিদ্যাবুদ্ধির দ্বারা পরাজিত ও অভিভূত করিব। আমাদের মাতৃভূমি ভারতবর্ষ সত্য, দ্যায়, পুণ্য, জ্ঞান ও ধৰ্ম্মের গৌরবে গৌরবাস্থিত। আমাদের . পূৰ্ব্ব পুরুষগণ এই সকল উচ্চ ভাব ও আদর্শের জন্য সৰ্ব্বস্বত্যাগ করিতে পারিতেন । এ সকলের তুলনায় অর্থ, সুখ ও স্বাচ্ছন্দ্য র্তাহাদের নিকট নিতান্ত অকিঞ্চিৎকর ছিল। উচ্চভাবে লক্ষ্য নিবদ্ধ রাখিয় তাহারা পার্থিবপদার্থ অস্নানবদনে নিজ পদধূলির স্তায় ত্যাগ করিতে পারিতেন। আমাদের প্রাচীন ইতিহাস এই সকল উচ্চ আদর্শচরিত্রে পরিপূর্ণ। কিন্তু আমরা এমনই হতবুদ্ধি যে, ঐ সকল দেবোপম আদর্শ ত্যাগ করিয়া রত্নমানসময়ের কৃত্রিমসভ্যতাভিমানী জাতিসকলের অভিনব অাদর্শ ও ভাবসমূহের অনুকরণে আমরা নিজেকে অতি হীন ও কলঙ্কিত ফুরিতেছি। বর্তমান সভ্যতার মূলভিত্তি অর্থ। এই অর্থকে বর্তমান যুক্তৃতা ভিমানী জাতিগণ সৰ্ব্বোচ্চ সিংহাসনে স্থাপন
পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/৫৮৫
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।