স্বাদশ সংখ্যা। ] স্বদেশীব্ৰত। ¢ ጭቖ» বিদেশী পণ্যদ্রব্যের দাসত্ব হইতে মুক্ত হইবে এবং তাহাতেই আমাদের চিরাভীপিত করিতে হইবে, সেইরূপ আমাদের মনকেও সত্যযুগ আমাদের মধ্যে আবার অবতীর্ণ হইবে ৮ বিদেশী ভাবের দাসত্ব হইতে বিমুক্ত করিতে হইবে। মনের দাসত্বই প্রকৃত দাসত্ব । মনের দাসত্ব হইতেই আমাদের অধঃপতন আরম্ভ হইয়াছে,--আবার মনের স্বাধীনতা হইতেই আমাদের অভু্যখানের স্বত্রপাত করিতে হইবে । আমাদের মনকে যদি আমরা স্বাধীন ও পূৰ্ব্বগৌরবে প্রতিষ্ঠিত ও তাঁহাতে আমাদের স্বদেশের • স্বকীয় মহত্ত্ব পুনরানন করিতে পারি, তবে সকল প্রকারের স্বাধীনতাই অনায়াসে আমাদের করতলগত হুইবে । যে দেশের যাহাঁ স্বাভাবিক, তাহাই তাহার প্রকৃতি। প্রকৃতির অন্যথাচরণই পাপ । পাপের ফল দুঃখ ও দুৰ্গতি। আমরা সেই পাপের ফলই এখন ভোগ করিতেছি। আমাদের মাতৃভূমি স্বকীয় মহত্বে ও গৌরবে জগতের শীর্ষস্থানীয় ছিলেন এবং জগতেব ধর্মগুরু বলিয়৷ পূজিত হইতেন। সেই মাতার সস্তানগণ আমরা হীনতায় সৰ্ব্বাপেক্ষ নিকৃষ্টজাতি বলিয়, গণ্য হইতেছি, ইহা অপেক্ষা অধিক পাপভোগ আর কি হইতে পারে। যদি আমরা পূৰ্ব্বগৌরব পুনঃপ্রাপ্ত হইতে চাই, তবে বিদেশীয় কৃত্রিনভাব বর্জন করিয়া হৃদয়ে স্বদেশভাবের পুনঃপ্রতিষ্ঠা আবশ্বক ;-বিদেশর বিলাসিত ও মিথ্যাভাব পরিত্যাগ করিয়া সত্যকে প্রতিষ্ঠিত ও উচ্চসিংহাসনে স্থাপন করার প্রয়োজন। হইলে আমাদের কার্যে ও মনে বল হইবে। তাহার নিকট জগৎ স্তম্ভিত, ভীত অভিভূত হইয়া যাইবে এবং তাহারা ইচ্ছাপূৰ্ব্বক *আমাদিগকে উচ্চাসন ও স্বাধীনতা দান করিবে । বিনা রক্তপাতে আমাদের যুদ্ধে জয় সত্য, উদারতা ও ধৰ্ম্ম, এই তিনটি আমাদের সর্বপ্রধান জাতীয়ভাব। এই সকল ভাব চিরকাল ভারতবর্ষে অক্ষুণ্ণভাবে রাজত্ব করিয়াছে। আমাদের পূর্বপুরুষগণের ভাব*গুলিকে আশ্রয় করিয়া সংসারপথে অগ্রসর হওয়া আবশ্যক। এই ভাবগুলিই আমাদের মহাব্রত, ইহাবুই আমাদের অবলম্বন। বিদেশীভাবের অধীনতায়. আমরা নিম্ন হইতে • নিম্নতর স্তরে অবতরণ করিয়া মনুষ্যনামের অযোগ্য হইয়াছি ;—আমরা শঠ, প্রবঞ্চক ও ঘোর মিথ্যাবাদী হইয়া পড়িয়াছি। সেই দিক্ হইতে আমাদের অধঃপাতের স্বত্রপাত হইয়াছে, সেই দিক্ হইতে আরম্ভ করিয়া আমাদিগকে পুনরুগ্নতির দিকে অগ্রসর হইতে হইবে। অতএব সত্যকে আহবান ও পুনঃপ্রতিষ্ঠিত কুরিয়া সেই সত্যের সাধনাতেই আমরা সত্যযুগের অবতারণা করিব । * * . এই সত্য কি ? যাহা আছে, তাহাই সত্য। যাহা তাহার বিরোধী, তাহাই মিথ্যা। সত্য কথা, সত্য আচরণ বা সাধুতা, বাক্য ও মন একরূপ হওয়া, মুখে যাহা বলা যায় মনেও তাহা দৃঢ়রূপে ধারণা কর, " মনের প্রকৃতভাবের বিপরীত মুখে প্রকাশ না করা--এই সকলই সত্যের অঙ্গ। সংসারের নিকট প্রশংসালাভের জন্য যাহা ধাকে "প্রকাশ করিতেছি, মনে সেই ভাব-পোষণ না করা, ঈপিাত বিষয়ে মনের দৃঢ়বিশ্বাস বা ধারণা না থাকা,অসরলতা, শঠতা, প্রবঞ্চন, মনের ভাব গোপনপূৰ্ব্বত্ত্ব অন্যথা উক্তি, তোষামোদ, নীচতা ও পুরপ্রত্যাশা—এই সকল মিথ্যার অঙ্গ যতদিন
পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/৫৮৭
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।