واd হুর্গের গুপ্ত-গারদের মত প্রকাও-প্রকাও চতুষ্কমণ্ডপ-তাহার মধ্যে গুরুভার, স্থল ও খৰ্ব্বকায় দেববিগ্রহ রক্ষিত, প্রকাগু-প্রকাও ভিত্তিভূমি, বিকট-ভীষণ প্রস্তরস্ত প–এই সমস্ত অচলপ্রতিষ্ঠ বলিয়া মনে হয় ; কিন্তু কোনকোন সময়ে নদীর স্রোতে এরূপ ভীষণু বেগ উপস্থিত হয় যে, উহাদিগকে কঁপাইয়া তুলে —গ্রাস করিয়া ফেলে। 雷> গৃহাদির উদ্ধে, প্রাসাদদির উদ্ধে, হিন্দুমন্দিরের অসংখ্য চুড়া পশ্চিমগগনে সমুখিত ; রাজস্থানের দ্যায় এখানকার মন্দিরের চূড়াগুলাও বড়-বড়-প্রস্তরময় কাউএর আকারে গঠিত, কিন্তু এখানকার এই মন্দির চূড়াগুল লাল—ঘোর লাল,—তাহার সহিত ‘ম্যাড় মেড়ে’ সোনালি-কাজ মিশ্রিত। সমস্ত বারাণসীর মন্দিরচূড়াগুলি রক্তিম—কেবল চুড়ার অগ্রবিন্দুগুলি সোনালি । নদী খেমন-যেমন বাকিয়া গিয়াছে —সেই অনুসারে নগরীর এক প্রান্ত হইতে অপর প্রান্ত পর্য্যন্ত প্রস্তরময় সোপানাবলী তটভূমির উপরে যেন পক্ষবিস্তার করিয়া রহিয়াছে—যেন একটা প্রকাগু স্তস্তপীঠ ( pedestal ) উপর হইতে—যেখানে মানুষের বসতি, সেইখান হইতে –নামিয়া-আসিয়া পবিত্র জলরাশির অভিমুখে প্রসারিত হইয়াছে । আজিকার, সন্ধ্যায়, এই বৃহৎ ঘাটের শেষ-ধাপটি পৰ্যন্ত– এমন কি, ঘাটের ভিত-দেয়ালটি পর্যন্ত বাহির হইয়া পড়িয়াছে। হুবৎসর ছাড়া এই ভিত-দেয়াল কখনো বাহির হইয় পড়ে না—ইহা দুর্ভিক্ষ ও হুঃখদৈন্তের পূর্বস্বচনা । এই মহিমান্বিত বৃহৎ সোপানপংক্তি এখন একেবারেই জনশৃষ্ঠ—এখানে ফলবিক্রেত; পবিত্র গাতীলের জন্ত বাহারা তৃণবিক্রয় কুৱে সেই বঙ্গদর্শন। [ ৭ম বর্ষ, জ্যৈষ্ঠ, ১৩১৪ তৃণবিক্রেতা, বিশেষত এই লোকপাবনী পরমারাধ্যা বৃদ্ধ নদীর উপর যে পুপাগুলি নিক্ষিপ্ত হয়, সেই সকল ফুলের তোড়া ও ফুলের মালাবিক্রেতা—ইহাদের দ্বারাই সোপানের ধাবগুলা দিবা দ্বিপ্রহর'পৰ্য্যন্ত আচ্ছন্ন হইয়া থাকে। এবং অসংখ্য বঁtখারির ছাতা -যাহা সকলকেই ছায়াদান করে,—সেই সকল ছাতাৰ বঁটি মাটির মধ্যে স্থায়িভাবে পোতা এবং ঐ সকল ছাতা যেন প্রাতঃস্বর্ঘ্যের প্রতীক্ষায় উদয়াচলের দিকে ঝুঁকিয়া রহিয়াছে। এই ভাজবিহীন আতপত্রগুলি দেখিতে কতকটা ধাতুময় চাকৃতির মত, এবং যতদূর দৃষ্ট যায়, নগরীর সমস্ত প্রস্তরময় তলদেশ এই সকল আতপত্রে সমাচ্ছন্ন। দেখিলে মনে হয়, যেন ঢালের ক্ষেত্র প্রসারিত। স্নান প্রভ আলোকচ্ছায়া সন্ধ্যার আগমনবার্তা জানাইয়া দিল এবং হঠাৎ শৈত্যের আবির্ভাব হইল। বারাণসীতে আসিয়া ধূসর আকাশ ও শীতের লক্ষণ দেখিব, এরূপ প্রত্যাশা করি নাই । প্রকা গু-প্রকাগু তমোম পাষাণপিণ্ডের পাদদেশ দিয়া তটভূমি ঘেষিয়া আমার নৌকা স্রোতের ੋ নিঃশব্দে চলিয়াছে । নদীতটের একটা বীভৎস কোণে, প্রাসাদের ভাঙাচুরার মধ্যে, কালে মাটির ও পাকের উপর, তিনটি ছোট ছোট চিতা সজ্জিত ; "দ্যীকৃড়া’-পরা কতকগুলা কদাকার লোক তাহাতে আগুন ধরাইবার চেষ্টা করিতেছে ; উহা হইতে ধোয় বাহির হইতেছে—কিন্তু আগুন জলিতেছে না। এই চিতাগুলা অদ্ভুত আকারের. —ীর্ঘ ও সরু। এইগুলশবদাহের কাঠ। নদীর দিকে পা করিয়া প্রত্যেক শৰ আপুন-জাপন
পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় সপ্তম খণ্ড.djvu/৬১
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।