পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় সপ্তম খণ্ড.djvu/৬৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দ্বিতীয় সংখ্যা । ] বারাণসী-অভিমুখে । eوئ পর পরম্পরের সহিত আবার মিলন হইলেও কেই কাহাকে পূৰ্ব্বের সেই লোক বলিয়া চিনিতে পারিবে না—সুতরাং স্নেহমমতাও থাকিবে না, অশ্রধারাও থাকিবে না । একই অখণ্ডের অংশসকল, যাহা বিযুক্ত হইয়াছিল, তাহা আবার পরস্পরের নিকটবৰ্ত্তী হইবে, একপ্রকার জাননাহীন মোক্ষাবস্থায় উপনীত श्झां পুনর্মিলিত হইবে |- - - সে যাহাই হউক, প্রাচীরের পাথরের উপর বসিয়া দরিদ্র-বসুনে অবগুষ্ঠিত যে দুইটি জরাবনত মনুষ্যমূৰ্ত্তি উপর হইতে অবিচলিত. ভাবে মৃতশিশুর দাহকাৰ্য্য নিরীক্ষণ করিতে ছিল, উহাদের মধ্যে একজন দাড়াইয়া উঠিল এবং মুখের অবগুণ্ঠন সরাইয়া, আধো নিকট হইতে ভাল করিয়া দেখিবার জন্য ঝুঁকিয়া দেখিতে লাগিল । সেই তরুণীর চিতার আলোকে ক্ষুদ্র বালকটির মুখশ্ৰী পূর্ণরূপে আলোকিত হইয়া উঠিল। একজন শীর্ণকায়া বৃদ্ধ যেন এইভাৰে জিজ্ঞাস করিল—“সমস্তটা ভাল করে” পুড়েছে ত ?” স্ত্রীলোকটি খুব প্রাচীন ; মা অপেক্ষা দিদিমা হওয়াই সম্ভব ;—কখন-কখন নাতিনাত্নী ও পিতামহীর মধ্যে কি-একটা রহস্তময় আকর্ষণ, একটা অসীম স্নেহের বন্ধন দেখিতে পাওয়া যায় – “সমস্তটা ভাল করে” পুড়েছে ত ?” তাহার ব্যাকুলনেত্ৰ যেন এই ভাবটি প্রকাশ করিতেছে— —“যতটা কাঠের দরকার, অর্থাভাবে তাহ কিনিয়া দিতে পারি নাই ; এখন ভয় হয়, পাছে নিৰ্দ্দয় দাহকের, যা এখনো চেনা যাইতেছে, সেই সব অদগ্ধ অংশ গঙ্গায় ফেলিয়া দেয়।” আবার সে কুক্টিয়া ব্যাকুলতাৰে দেখিতে লাগিল-ধনীদের চিতার আলোকে - WO দেখিতে লাগিল । এদিকে দাহক, আর কিছুই অবশিষ্ট নাই ইহা দেখাইবার জন্ত, একটা ডাল দিয়া পোড়া-কাঠগুলা, নাড়িয়া দিল। তখন সে ইঙ্গিত করিয়া যেন এইভাবে বলিল, “হঁ, ঠিক হয়েছে ; এখন যাও ; এখন . ওগুল গঙ্গায় ফেলে দিতে পার।” কিন্তু তাহার' দৃষ্টিতে সেই চিরন্তন মানবহৃদয়ের তীব্ৰ বেদনা দেখিতে পাইলাম, যাহা কি ভারতে, কি অন্মদেশে—সৰ্ব্বত্রই সমান ; যাহা আমাদের সাহস কিংবা অস্পষ্ট আশাভরসা সত্ত্বেও, সময়কালে আমাদের সকলের নিকটেই দুৰ্দ্দমনীয়, হইয় উঠে। যাহা এইমাত্র ধ্বংস হইয়া গেল,সেই ক্ষণস্থায়ী ক্ষুদ্রমূর্তিটিকে বোধ হয় উছার দিদিমা ভালবাসিত ;–উহার ক্ষুদ্র মুখখানি, উহার মুখের ভাবটি, উহার হাসিটি ভালবাসিত ; এখনে উহার যথেষ্ট বৈরাগ্যের উদয় হয় নাই, 别 এবং ব্রাহ্মণ্যের নিৰ্ব্বিকারভাবু এইবার ধেন একটু খৰ্ব্ব হইল—কেন না, সে কাদিতে লাগিল ।... .যেসব ক্ষুদ্রশিশু আমাদের ছাড়িয়া চলিয়া যায়, তাহদের নেত্রের সেই মধুর দৃষ্টি কিংবা আমাদের পিতামহী প্রভৃতির সেই স্নেহের দৃষ্টি "কিংবা র্তাহীদের সেই পলিতকেশ আমাদের নিকট আবার ফিরাইয়া দিবে, এইরূপ কোন ধৰ্ম্মই কি অঙ্গীকার করিতে সাহস করে, এমন কি, বাহ সৰ্ব্বাপেক্ষা মধুর, সেই খৃষ্টধৰ্ম্মও কি এইরূপ অঙ্গীকার করিতে সন্তুস করে ?••• • se দরিদ্র-চিতার শেষ-অঙ্গার ও ভগ্নাবশেষগুলা একটা কাঠের হাতা করিয়া উহারা গঙ্গায় ফেলিয়া দিল । " . পাশের চিতাটির উপর. সেই রূপ