br8 বঙ্গদর্শন। [ ৭ম বর্ষ, জ্যৈষ্ঠ, ১৩১৪ । ঘনিষ্ঠ সম্বন্ধ—সেইজন্য এই হিংসাই অনেকস্থলে সত্য-বেদনার সহিত পরিচয় করাইয়৷ মানুষকে বীৰ্য্যবান করে। মাত্র শোণিতদর্শনের ভয়ে যে মানব হিংসার আনন্দ পান করিতে কুষ্ঠিত . হয়, তাহার সম্বন্ধে স্বামী বিবেকানন্দ বলিয়াছেন— “ছাগকণ্ঠরুধিরের ধার, ভয়ের সঞ্চার; ং দেখে তোর হিয়া কঁপে, কাপুরুষ ! দয়ার আধার ? ধন্ত ব্যবহার ! মৰ্ম্মকথা বলি কাকে।” যে এত ভীরু, সে স্বয়ং দয়ার পাত্র – সে কখন অপরকে দয়া করিতে পারে না—মহাযন্ত্রণার সন্মুখীন হইবার বীর্য তাহার নাই। অধিকাংশ ভারতবাসীর হিংসার আনন্দপানে বিমুখত যে এই ঘোর-তামসিক-ভীরুতা-প্রস্তুত নহে, তাহ কে বলিবে ? এই কবিতায় রবীন্দ্রনাথ বলিয়াছেন— “ইচ্ছা করে, আপনার করি o যেখানে যা-কিছু আছে।” এই “ধা-কিছু” আর-কিছু নহে,- যেখানে যা-কিছু মুখের আছে, যা-কিছু বৈচিত্র্যময় মুখের নব নব ধারা আকণ্ঠ পান করাইয়৷ মুখের চির-অতৃপ্ত অসহ পিপাসার কথঞ্চিৎ শমতাসম্পাদন করে—ইহা সেই “যা-কিছু”— দুঃখের “যু-কিছু” নহে। কবিতার * শেষভাগে কবি স্পষ্ট বলিতেছেন—
- "জননি লহ গো মোরে
সঘন-বন্ধন তব বাহুযুগে ধোরে আমারে করিয়া লহ তোমার বুকের তোমার বিপুল প্রাণে বিচিত্র মুখের উৎস উঠতেছে কৃথী, সে গোপনপুরে" আমারে লইয়া বঁts-রাখিয়ে না দূরে।” হা-যেখানে অসংখ্য নয়নাভিরাম বর্ণে রঞ্জিত বিচিত্র সুখের উৎস উঠিতেছে, সেখানে লইয়া যাও—যেখানে অনন্ত নিশীথ ব্যাপিয়া নরকাগ্নিগর্ভ ভীম শৈলের ব্যাদিত গহবরমুখ হইতে বেদনার রক্তকায় করালজাল উদগীরিত হইয়া জীবলোকের অনন্তকালধ্বনিত আৰ্ত্তস্বরের সহিত মিশিয়া অসীমপূন্যে লীল হইতেছে, সেখানে লইয়া যাইও না । & কেহ কেহ বলিবেন, “কেন, রবীন্দ্রনাথ কি তাহার তুলিকায় বেদনার ছবি অঙ্কিত করেন নাই ?” উত্তরে আমি বলিব, “স্থা করিয়াছেন বটে, কিন্তু তাই অধিকাংশস্থলেই সদ্বন্ত বেদন নহে,—সুখাতিশল্যের বেদনামাত্র । তবে কোন কোন স্থলে এই সত্যবেদনার অনুভূতি আমরা দেখিতে পাই। তাহার কায়ণ আর কিছুই নহে—যাহার উপর রমা ও বাণীর জননী গৌরীর অমৃতময়ী প্রসন্নদৃষ্টি সৰ্ব্বদ বধিত হইতেছে—হরগেীরীর একাঙ্গতাহেতু মধ্যে মধ্যে হরের তৃতীয়নয়নবর্ষিত ভৈরব করজাল তাহাকে আচ্ছন্ন করিবেই করিবে। এই রুদ্র করজালও অৰ্দ্ধপথে গৌরীর স্নিগ্ধমধুর নয়নরশ্মির সহিত মিশিয়া আপনার রুদ্রত্ব বহুপরিমাণে হারাইতেছে। সৌন্দৰ্য্য ও সুষমাই এই কবির প্রাণ—সেইজন্ত ভৈরবকে দেধিতে হইলেও উমার সহিত মিলনের আকাজণর উৎফুল্ল, বরবেশে গিরিরাজগৃহগমনে • উষ্ঠত বিলোচনকে দেখিতে ইচ্ছা করেন। ত্ৰিলোকসংহারাভিলাষে উদ্যত, ত্রিশূল, মুক্তজট, প্রলয়াগ্নিদীপ্তনয়ন মহারুদ্রকে দেখিবার চেষ্টা তাহার রচনার মধ্যে দেখিতে পাই না । ব্রাহ্মণ রামেন্দ্রসুন্দর ত্ৰিবেদী এই সংহারের দেবতা, এই নিয়ম এবং সামঞ্জন্তের বাহিরের