পাতা:বঙ্গবিজেতা.djvu/১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

§ বঙ্গবিজেতা । “ তাহার পর প্রজার হঠাৎ কেন খাজান দিল, মুদ্রাই বা কোথা হইতে পাইল, কেহ কিছু স্থির করিতে পারিল না। অবশেষে প্রজার গৃহে ফিরিয়া গেলে পর শিশু অতি ভয়ে ভয়ে পিতার নিকট আপন কৰ্ম্ম স্বীকার করিলেন । র্তাহার পিতা নগেন্দ্রনাথ তাহাকে ক্রোড়ে লইয়া মুখচুম্বন করিলেন। আমি দ্বারে দাড়াইয়াছিলাম ; আমার চক্ষু জলে ভাসিয়া গেল।” এই প্রকার কথোপকথন করিতে করিতে তিন জনই রুদ্রপুর গ্রামে উপস্থিত হইলেন। নানাপ্রকার বৃহদাকার বৃক্ষে গ্রাম আচ্ছাদিত রহিয়াছে, মধ্যে মধ্যে সূৰ্য্যরশ্মি পত্রের ভিতর দিয়া শুষ্কপত্ররাশি ও গ্রাম্য পথের উপর পতিত হইতেছে। ডালে ডালে নানাপ্রকার সুন্দর পক্ষী গান করিতেছে—কোকিল, স্তাম, দোয়েল, ফিঙ্গা, পাপিয়া, ঘুঘু, সকলেই নিজ নিজ রবে মনের উল্লাস প্রকাশ করিতেছে! মোগল পাঠানের জয়বিজয়ে তাহদের বিশেষ চিন্তা বা ক্ষতি লাভ নাই—সম্পূর্ণ উদাসীন, উচ্চে বসিয়া রহিয়াছে। মধ্যে মধ্যে গ্রাম্য সরোবরে পদ্ম ও শালুক ফুল ফুটিয়া রহিয়াছে, স্থানে স্থানে বৃক্ষতলে দুই একটা কুটার দেখা যাইতেছে, স্থানে স্থানে দুই একজন কৃষক গান করিতে করিতে মাঠে যাইতেছে, তাহাঁদের গৃহিণীগণ মৃন্ময়-কলস কক্ষে লইয়া হেলিয়া চুলিয়া জল আনিতে যাইতেছে। শিখণ্ডিবাহন জিজ্ঞাসা করিলেন, “ মহাশ্বেত নামে এক ব্রাহ্মণী এই গ্রামে বাস করেন, তাহার নিবাস কোথা ?” ইন্দ্রনাথ শিহরিয়া উঠিলেন। ক্ষণেক পর বলিলেন, চলুন, আমি দেখাইয়া দিতেছি।” অনন্তর কিছু পথ লইয়া গিয়া দূর হইতে মহাশ্বেতার ঘর দেখাইয়া দিলেন । শিখণ্ডিবাহন মহাশ্বেতার ঘরে অতিথি হইলেন, আর ইন্দ্রনাথ তাহার চিরপরিচিত সরলস্বভাব বন্ধু নবীন দাসের বাটতে অতিথি হইলেন ।