§ > 》文 বঙ্গবিজেতা । নগে। “ মহাশয়! আপনি আমাকে অতিশয় সম্মান করিলেন, আমি সে সম্মানের যোগ্য নহি। যদি যোগ্য হইতাম, যদি মহাপাপী না হইতাম, তবে আজ পাপ প্রশমনার্থ মহাত্মা চন্দ্রশেখরের নিকট আসিতাম না ।” চন্দ্র । " এজগতে সহস্ৰগুণসত্তে ও কে মহাপাপী নহে? কে বলিতে পারে আমি পাপ করি নাই—কে বলিতে পারে আমি নিষ্কলঙ্ক, নিরপরাধী ?” দুইজনে অনেকক্ষণ এইরূপ কথোপকথন করিতে লাগিলেন । অবশেষে নগেন্দনাখ আপনার আসিবার কারণ বলিতে লাগিলেন ; বলিলেন ;— “মহাত্মন্, আমার মত পাপী এজগতে আর কেহই নাই, আমার মত দুঃখীও আর কেহই নাই, আমার দুঃখকথা শ্রবণ করুন,—
- আমার সহধৰ্ম্মিণী আমাকে বলিতেন যে, বেদিন তাহার জন্ম হয়, সেদিন আকাশে অপরূপ তিথি-নক্ষত্র দেখা গিয়াছিল । ব্রাহ্মণপণ্ডিতে গণিয়া বলিয়াছিলেন যে, শিশুকন্যা ঘোর উন্মাদিনী হইবেন । সে ভ্রম, আমার সহধৰ্ম্মিণী উন্মদিনী হয়েন নাই, কিন্তু তাহার কতকগুলি সুকুমার মনোবৃত্তি অতিশয় বেগবতী ছিল, সেজন্য আমি তাহাকে পাগলিনী বলিতাম । আজি দ্বাদশ বর্ষ হইল, সে স্নেহময়ী পাগলিনীর কাল হইয়াছে ।
a পাগলিনীর গৰ্ত্তে আমার দুইটী পুত্র জন্মে। তাহাদিগের গৰ্ত্তধারিণীর মত দুই জনই পাগল। জ্যেষ্টট চিন্তায় পাগল, কনিষ্টট কার্য কৰ্ম্মে পাগল । সে দুইটী পুত্র আমার দুইটী নয়নের তারা ছিল,—আজ তাহার কোথায় ? হায় দারুণ বিধি ! বৰ্দ্ধক্যে কি আমার কপালে এই লিখিয়াছিলে ? আমার দুইটী নয়নই গিয়াছে, আমি অন্ধ হইয়াছি, দুইটী রত্ন হারাইয়াছি, তামি কাঙ্গালী হইয়াছি।” সে দুঃখবচনে সকলেরই হৃদয় দ্রবীভূত হইল । ক্ষণেক পরে নগেন্দ্রনাথ বলিতে লাগিলেন— “ আমার জ্যেষ্ঠপুত্রকে অল্প বয়সে ব্যান্ত্রে লইয়া যায়। তাহারই শোকে তাহর মাত। কালগ্রাসে পতিত হর । কনিষ্ঠ পুত্র সুরেন্দ্রনাথের মুখ চাহিয়া আমি সে শোক সহা করিয়াছিলাম। আহা ! সেরূপ ধীরপুত্র কেহ কখনও দেখে নাই। দয়া, ধৰ্ম্ম, বিদ্যালোচনা, বল ও বিক্রমে সুরেন্দ্রনাথের মত কে ছিল ? বৎস নবীন বয়সে সিংহবল ধারণ করিত, মল্লযুদ্ধে শত শত যোদ্ধাকে পরাস্ত করিয়াছে, অসীম বাহুবলে সকলকে বিস্মিত করিয়াছে, অঙ্গচালনায় তাহার সমকক্ষ এদেশে কাহাকেও দেখি নাই । যে দেখিত, o