পাতা:বঙ্গবিজেতা.djvu/১২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

bo বঙ্গবিজেতা । ও প্রশস্ত; কিন্তু চিন্তারেখায় গভীরাঙ্কিত। গুচ্ছ গুচ্ছ শ্বেত কৃষ্ণ কেশরাশি কপোলে, হৃদয়ে ও গণ্ডে লম্বিত রহিয়াছে। নয়নে যে সমুজ্জলতা, তাছা প্রায় নবীনার নয়নেও দেখা যায় না । কিন্তু সে ীেবনের সমুজ্জলত। নহে হৃদয়ের সমুজ্জ্বল চিন্তান্ধি যেন নয়ন দিয়া বিস্ফুলিঙ্গরূপে বহির্গত হইতেছে। ওষ্ঠ অতি সুচিকুণ অথচ দৃঢ়প্রতিজ্ঞাপ্রকাশক। সমস্ত শরীর গম্ভীর ও উন্নত ; ও বিধবার শ্বেতবস্ত্রে আবৃত হইয়া অধিকতর গাম্ভীৰ্য্য ধারণ করিয়াছে। রমণী পুষ্প সকল প্রতিমায় সম্মুখে রাখিয় দণ্ডবৎ প্রণাম করিলেন । অনেকক্ষণ উপাসনা করিতে লাগিলেন। বায়ু ক্রমশঃই প্রবল হইতে লাগিল, ও রহিয়া রহিয়া বটবৃক্ষের ভিতর দিয়া ভীষণশব্দে প্রবাহিত হইতে লাগিল। মধ্যে মধ্যে কবাট ঝন ঝন্‌ করিয়া উঠিতে লাগিল, প্রদীপ নিৰ্ব্বাণপ্রায়, কিন্তু রমণীর মুখমণ্ডলের স্থিরভাবের কিছুমাত্র বৈলক্ষণ্য হইল না। স্থিরভাবে, মুদিতনয়নে, নিম্পদশরীরে প্রায় এক প্রহর $াল আরাধনা করিতে লাগিলেন । তাহার মনে কি কামনা, কি বিষয়ে রাধনা করিলেন, অনুভব করিতে আমরা সাহস করি না । ইr উপাসনা সাঙ্গ হইলে রমণী প্রদীপ লইয়া বহির্গত হইবার জন্য কৰাট -বুলিলেন। খুলিবামাত্র বাতাসে প্রদীপ নিৰ্ব্বাণ হইল । সেই ঘনান্ধকার নিশীথসময়ে ক্ষীণাঙ্গী প্রবল বায়ুবেগে কিঞ্চিষ্মাত্র কাতরা ন হইয়া ধীরে ধীয়ে রুদ্রপুরের গ্রাম্য পথ দিয়া কুটারাভিমুখে গমন করিতে লাগিলেন। পথ অতি সঙ্কীর্ণ ; উভয় পার্শ্বে কেবল নিবিড় বন ও তাহার পার্শ্বে বৃহৎ বৃক্ষসমূহের পত্ররাশি দ্বারা অন্ধকার দ্বিগুণ নিপিড় বোধ হইতেছে। সেই বৃক্ষতলে স্থানে স্থানে এক একটা কুটীর দেখা যাইতেছে। কুটারবাসীগণ সকলেই সুপ্ত ; জীবজন্তুর শব্দমাত্র নাই। এই প্রকারে মহাশ্বেত কতক পথ অতিবাহিত করিয়া অবশেষে এক কুটীরে উপস্থিত হইয়া কবাটে আঘাত করিলেন। দ্বার ভিতর হইতে উদঘাটিত হইল ; মহাশ্বেত প্রবেশ করিলে ভিতরে প্রদীপহস্তে এক অল্পবয়স্ক স্ত্রীলোক পুনরায় দ্বার রুদ্ধ করিল। মহাশ্বেত কি চিন্তা করিতে করিতে আসিতেছিলেন ; অল্পবয়স্কার মুখ দেখিবামাত্র সহসা সকল চিন্তা দূর হইল ও পবিত্র স্নেহভাব বদনমণ্ডলে বিকাশ পাইতে লাগিল। বলিলেন—“ সরল, এত রাত্রি হইয়াছে, তুমি এখনও জাগিয়া আছ ? যাও মা, শোও গে যাও।” এই বলিয়৷ { সঙ্গেহে সরলার মুখচুম্বন করিলেন । সরল উত্তর করিল, “ রাত্রি অধিক