* : చీ বঙ্গবিজেতা । সুরেন্দ্রনাথ যে কেবল একটা পুরাতন প্রতিজ্ঞা রক্ষাহেতু পিতার অবাধ্য হয়েন নাই, তাহ পাঠক মহাশয় অবগত আছেন । নগেন্দ্রনাথ আবার বলিতে লাগিলেন, “সেই তঞ্জীকার ভঙ্গ করিয়াছি, কত পাপ করিয়াছি, সেই জন্য এই বৃদ্ধ বয়সে আমার এই যাতন। কোথায় এই বয়সে আমার অশ্বিনী-কুমারের ন্যায় দুই পুত্র আমার হস্ত হইতে জমীদারীর ভার লইবে, কোথায় চন্দ্রীননা পুত্রবধু বৃদ্ধ শ্বশুরের সেবা শুশ্ৰষ করিবে, তাহ ন হইয়া আমার পুত্ৰ নাই, পুত্রবধূ নাই, স্নেহময়ী সহধৰ্ম্মিণী নাই, অগাধ সমুদ্রে ভাসিতেছি,—মহাশয় ! কি পাপে আমার এই অদৃষ্ট হইয়াছে— কি করিলে সেই পাপের প্রায়শ্চিত হয়, তাহ তাপনি বিধান করুন ।” চন্দ্রশেখর বলিলেন,—“ আমি আপনার জন্য পুজা দিতে ক্রট করিব না; যাহাতে আপনার মঙ্গল হয় সেরূপ বিধান করিতে ক্ৰটী করিব ন৷ ” শিথণ্ডিবাহন মহাশ্বেতায় সহিত কথা কহিতেছিলেন,—তিনি নগেন্দ্রনাথকে লক্ষ্য করিয়া বলিলেন— “ প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করিয়! যদি পাপ করিয়! থাকেন, সে প্রতিজ্ঞ পুনরায় পালন করিতে যত্নবান হউন ৷” নগেন্দ্রনাথ কহিলেন, “ শিথণ্ডিবহন ! আমি প্রতিজ্ঞা পালন করিব । রাজা সমরসিংহের অনাথ দুহিতাকে আনিয়া দাও, আমার সুরেন্দ্রনাথের সহিত অবশুই বিবাহ দিব । আর আমার পূৰ্ব্ববৎ গৰ্ব্ব নাই, পূৰ্ব্ববৎ অভিমান নাই । বাৰ্দ্ধক্যে ও শোকচুঃখে আমার উচ্চ মস্তক নম্র করিয়াছে । এবার যদি প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করি, তাহা হইলে যেন আমি আর পুত্রের মুখ কখন না দেখিতে পাই । ইহা অপেক্ষ অভিশাপ আমি তার জানি না ।” শিখণ্ডিবাহন কোন উত্তর না করিয়া মহাশ্বেতার সহিত পুনরায় কথা কহিতে লাগিলেন। সে কি কথা হইতেছিল, পাঠক মহাশয় অনায়াসে অনুভব করিতে পরিবেন। - শিখণ্ডিবাহন বলিতেছিলেন, “ভগিনি । আর বিলম্বে আবশুক কি, আপনার পরিচয় দিল্ ৷” মহাশ্বেত উত্তর করিলেন, “ যদি বিধাতা আমাদিগকে পূৰ্ব্বমত উন্নতিসম্পন্ন না করেন, তাহ হইলে এজন্মে পরিচয় দিব না, এজন্মে কন্যার বিবাহ দিব না ।” শিখ । “ কেন ?”
পাতা:বঙ্গবিজেতা.djvu/১২০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।