পাতা:বঙ্গবিজেতা.djvu/১২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১২২ বঙ্গবিজেতা । মহা আশ্রমবীপীদিগের নিকট বিদায় লইব না,—তাহাদের দয়াদাক্ষিণ্যের জন্য একবার ধন্যবাদ দিব না ?” 硅 পাগ। “আর এক দ্বও কাল এস্থানে থাকিলে নিশ্চয় মৃত্যু,-চতুৰ্ব্বেষ্টিত দুর্গের চর আপনার সন্ধানে আশ্রমে বেড়াইতেছে।” মহাশ্বেতা বিস্মিত হইলেন । বলিলেন, “ আমার হৃদয়েও সেই সন্দেহ হইয়াছিল। সে কালসৰ্প ন হইলে এ নিরাশ্রর বিধবাকে দংশন করিতে কে ইচ্ছা করে ? হায়! আমাদের সৰ্ব্বনাশ করিয়াও তোর মানস সম্পূর্ণ হয় নাই, আমাদের প্রাণে বধ করিবি ? মৃত্যু —মৃত্যুকে কে ভয় করে, যদি এই প্রাণের কন্যা না থাকিত, তবে আর কাহাকে ভয় করিতাম ?” পাগলিনী পুনরায় বলিল, “ চিত্তার সময় নাই।” মহা । “আমি যদি আপন পরিচয় দিয়া আশ্রমবাসীদিগের শরণাগত হই, তাহা হইলে কি পরিত্রাণ নাই ?” পাগ । * আশ্রম শুদ্ধ, মহেশ্বর-মন্দির শুদ্ধ উঠাইয়া লইয়া যাইতে পারে এত লোক আসিয়াছে,—মহাশ্বেতা শীঘ্ৰ পলায়ন করুন ।” মহা । “আমিই বা আপনার জন্য আশ্রমবাণীদিগের কেন দুর্ঘটন ঘটইব ?—আমার যাহা কপালে আছে হউক, মহেশ্বর | কন্যাকে রক্ষা কর । পাগলিনি। আমি চলিলাম, কিন্তু তুমি যে আপদ্ধ বিপদকালে আমাদের সহায়তা করিয়ছি, তোমার কি পরিচর পাইব না ?” পাগ । * অন্য সময়, এখন শীঘ্ৰ পলায়ন কর।” এই বলিয়া পাগলিনী অদৃষ্ঠ হইল। মহাশ্বেতা দ্রুতবেগে আপন গৃহে যাইয়া শ্বেতপ্রস্তরনিৰ্ম্মিত ক্ষুদ্র শিবপ্রতিমা ও কিছু অর্থ লইয়া নদীতীরে যাইতে লাগিলেন। যাইতে যাইতে ভাবিলেন, “ এই রাত্রিতে কি নৌকা পাইব,—মাঝিরা কি কেহ ঘাটে আছে ?”—ভাবিতে ভাবিতে নদীতীরে উপস্থিত হইলেন। দেখিলেন, যথার্থই চিম্ভ করিয়াছিলেন, দুই একখানি নৌকা ঘাটে আছে, কিন্তু একজনও মাঝি নাই। ইতস্ততঃ যাইতে যাইতে দেখিলেন, একখানি নৌকায় অনেক মাঝি আছে ও সকলেই জাগিয়া রহিয়াছে। কিঞ্চিৎ বিক্ষিত হইলেন,—জিজ্ঞাসা করিলেন— “বাপু, তোমরা রুদ্রপুরে যাইবে ?” নৌকারোহীগণ মহাশ্বেতা ও সরলার দিকে নিরীক্ষণ করিয়া ক্ষণেক পর বলিল, “ যাইব, আমুন।”