বঙ্গবিজেণ্ড । ఫి సినీ মহাশ্বেতার চিন্তা-শৃঙ্খল সহসা ছিন্ন হইল, সরলার দিকে চাহিলেন, চাহিয়া চাহিয়া চাহিয়া মুখের বিকৃতভাব লীন হইল, চক্ষুতে জল আসিল । মনে মনে ভাবিলেন, “ ভগবানৃ, এই মৃত্তিকাশঘ্য যদি অগ্নিশৰ্য্যা হইত, তাহাও সহ করিতে পারিতাম, কিন্তু প্রাণের সরলাকে এ অবস্থায় দেখিয়া চক্ষুতে শূল বিধিতেছে।” সরলা ত্যাবার বলিল,“ মা, তোমার জন্য কল্য যে অন্ন রাখিয়া গিয়াছে, তাহ এক্ষণও স্পর্শ কর নাই, যেরূপ ছিল সেইরূপ আছে ?” মহাশ্বেত উত্তর করিলেন, “আহারে রুচি নাই ।” সরলা পুনরায় বলিল, “ না খাইলে শরীর কতদিন থাকিবে ?” মহাশ্বেতা বলিলেন, "বাছা, আর শরীর থাকার আবশ্বক কি ? ভগবান্ যদি অনুগ্রহ করিয়৷ ইহার অগ্ৰেই আমার মৃত্যু ঘটাইতেন, তাহ হইলে তোমাকে এ অবস্থায় দেখিতে হইত না ।” 命 সরল বলিল—“ মা, তুমি না থাকিলে আমি কাহার মুখ চাহিয়৷ থাকিব, জগতে আর আমার কে আছে যে, তুমি আমাকে ছাড়িয়া যাইবে ?” 鼠 মহাশ্বেত সজলনয়নে উত্তর করিলেন, “ ন’ মা, হতভাগিনীর এখনও বাইবার সময় হয় নাই ।” - যখন মহাশ্বেতা চিন্তা করিতেছিলেন, সরলাও চিন্তাশূন্য ছিল ন৷ মাতার দুরবস্থা, আপনার দুর্দশা, ইন্দ্রনাথের চিস্তা, এ সকলই সরলার দুঃখের কারণ। কিন্তু তাহায় সরল হৃদয়ে এক সময়ে একটীয় অধিক চিন্তা স্থান পাইত না । বালিকার হৃদয় অধিক দুঃখ কথন অনুভব করে নাই, অধিক দুঃখ সহ করিতে পারিত না,—একটী চিস্তায়, একটা দুঃখে সে হৃদয় পরিপূর্ণ হইত। বনাশ্রমে ইন্দ্রনাথের চিস্তায় সরল দিবারাত্রি নিমগ্ন থাকিত,—এক্ষণে সে চিন্তা ও আপন দুঃখচিত্ত সকলই বিস্তৃত হইল, কেবল মাতার দুঃখ দেখিয়া যার পর নাই দুঃখিত হইল। যে সময় মহাশ্বেত । চিন্তামগ্ন ছিলেন, সরলা একপার্শ্বে বসিয়া একদৃষ্টিতে মাতার দিকে অৰলোকন করিতেছিল। দেখিতে দেখিতে আপন নিবিড় কৃষ্ণ ক্রযুগল এক একবার কুঞ্চিত হইতেছিল, বিশাল নয়ন দুইটী জলে পরিপূর্ণ হইতেছিল, মধ্যে মধ্যে দীর্ঘনিশ্বাসে বক্ষঃস্থল ক্ষীত হইতেছিল। মাতার দুঃখ দেখিয়া বালিকার হৃদয়ে যে কি ঘাতন হইতেছিল, তাহ সেই বালিকাই জানে । པོ་།
পাতা:বঙ্গবিজেতা.djvu/১২৯
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।